পুরভবনে নথিপত্র সংবাদ মাধ্যমের হাতে তুলে দিয়ে ফোর-জি পরিষেবার কেবল পাতা নিয়ে বিতর্কে জল ঢালার চেষ্টা করলেন শিলিগুড়ি পুরসভার পূর্ত বিভাগের মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক। মঙ্গলবার ওই সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস নেতা মেয়র পারিষদ সুজয়বাবু জানিয়ে দেন, সরকারি নিয়ম মেনেই যে যাবতীয় কাজ হয়েছে। সেই সঙ্গে যে সংস্থা কেবল পাতার কাজে যুক্ত, সেই রিলায়েন্স জিও ইনফোকম লিমিটেডের সঙ্গে পুরসভার যে চিঠি চালাচালি হয়েছে তারও প্রতিলিপি সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেন।
সুজয়বাবু জানান, ফোর জি পরিষেবার কাজ ওই সংস্থাকে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। সে জন্যও পুর এলাকায় পুরসভাকে কী হারে টাকা দিতে হবে সেই দরও রাজ্য সরকার বেঁধে দিয়েছে। সরকারি নির্দেশ মেনেই রিলায়েন্সের সংস্থাটির থেকে চেক মারফত টাকা নেওয়া হয়েছে। সব টাকা পুরসভার হেফাজতে রয়েছে। মেয়র পারিষদের দাবি, “তবু বিশেষ উদ্দেশ্যে নানা ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। শিলিগুড়ি শহরবাসীর সামনে রিলায়েন্স ও পুরসভার মধ্যে কবে থেকে কী কথাবার্তা হয়েছে, কত টাকা মিলেছে সেই নথিপত্র তুলে তুলে ধরা হল।”
এতদিন ফোর-জি কেবল পাতা নিয়ে বিতর্কের মুখে ‘আমার কিছু জানা নেই’ বলে দাবি করেছেন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। কিন্তু, এদিন সুজয়বাবুর পাশেই দাঁড়িয়েছেন মেয়র। তিনি বলেন, “ফোর জি কেবল পাতার কাজে এক টাকার দুর্নীতিও হয়নি। সব মিথ্যে অভিযোগ।” তবে মেয়র মনে করেন, তাঁকে আগাম না-জানিয়ে সুজয়বাবু সাংবাদিক বৈঠক করে ঠিক করেননি। মেয়রের দাবি, “এভাবে পুরসভার আভ্যন্তরীণ নথিপত্র জনসমক্ষে তুলে দেওয়া যায় না।” সুজয়বাবুর পাল্টা যুক্তি, “পুরসভার আয় কোথা থেকে কী হচ্ছে তা জানার অধিকার শহরবাসীর আছে। তা হলেই শহরবাসী সব কিছু বুঝবেন।”
সুজয়বাবুর নথি অনুযায়ী দীর্ঘদিন ধরে ওই সংস্থার সঙ্গে মেয়র, মেয়র পারিষদের আলোচনা হয়েছে। পরে পুর কমিশনার চিঠি দিয়ে প্রথম পর্যায়ে ৮ কিলোমিটার কেবল পাতার অনুমতি দেন। বছর চারেক আগে পুরসভা বোর্ড মিটিঙেই সিদ্ধান্ত হয়, শহরে কোথাও মাটি খুড়ে কেবল পাততে গেলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে প্রতি বর্গমিটার ১৫৯৮ টাকা দর দিতে হবে। কিন্তু, সংস্থাটি জানায়, কেবল পাতার জন্য পুর এলাকায় প্রতি বর্গমিটার ১১৫০ টাকা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাতে কিছুটা সমস্যায় পড়ে পুরসভা। পুরসভার তরফে রিলায়েন্স সংস্থাটিকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, যে হেতু ১৫৯৮ টাকা আগেই উল্লেখ করে ‘নোট শিট’ তৈরি হয়েছে তাই সে হারে ৮ কিলোমিটারের জন্য টাকা দিতেই হবে। সংস্থাটিকে জানিয়ে দেওয়া হয়, দ্বিতীয় দফায় রাজ্য সরকারের বেঁধে দেওয়া দরেই টাকা দিতে হবে। সেই সঙ্গে প্রথম দফায় যে পরিমাণ টাকা বেশি নেওয়া হয়েছে তাও ফিরিয়ে দেবে পুরসভা। মেয়র পারিষদ বলেন, “সব চিঠিই জনসমক্ষে পেশ হয়েছে। রাজ্যের নতুন নির্দেশ মানতে গিয়েই পুরসভাকে অতীতের দর থেকে কম টাকায় কাজ করতে দিতে হয়েছে। এটা বোর্ড মিটিঙে জানানো হবে।” দ্বিতীয় দফায় কাজ নিয়ে বিধিভঙ্গের অভিযোগ প্রসঙ্গে মেয়র পারিষদ জানান, লোকসভা ভোট প্রক্রিয়া বলবৎ হওয়ায় দ্বিতীয় দফার কাজ অ নুমোদন করলেও ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দেওয়া হয়নি। সে জন্য সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদের জানানো হয়নি। পুরসভার বিরোধী দলনেতা মুন্সি নুরুল ইসলাম বলেন, “পুরসভা ওয়ার্ক অর্ডার না দেওয়া সত্ত্বেও কাজ করার জন্য পুলিশে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বোর্ড মিটিঙে। সেই সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ হচ্ছে না কেন তা জানতে ১৫ মে মেয়রের কাছে যাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy