পুলিশ কমিশনারকে না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন জেলা বামফ্রন্টের নেতারা। —নিজস্ব চিত্র।
রামঘাটে বৈদ্যুতিক চুল্লির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে হেনস্থা ও এক প্রতিবাদকারী চড় মারার অভিযোগ নিয়ে বামেদের আন্দোলন অব্যাহত। শুক্রবার মন্ত্রীকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের নেতারা। কিন্তু চল্লিশ মিনিট অপেক্ষা করেও কমিশনারের দেখা না পেয়ে তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে স্মারকলিপি জমা না দিয়েই ফিরে যান। এমনকী কমিশনারের ব্যবহারে তাঁরা ‘ক্ষুব্ধ ও দুঃখিত’ বলে জানানো হয়। এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে তাঁরা আদালতে মানহানির মামলা করবেন বলেও দাবি করেন। যদিও পরে পুলিশ কমিশনার জানান, তিনি অন্য একটি বৈঠকে ব্যস্ত ছিলেন, ওঁদের অপেক্ষা করা উচিত ছিল।
সরকারি অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে মিথ্যা মামলা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। পুলিশ বলে অভিযোগ তুলে এদিন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বামেরা। তাঁদের দাবি, “মন্ত্রী গৌতম দেব পাঁচ জনের একটি দলকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁদের উপরে হামলা করেন ও চড়ও মারেন। অথচ সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে নিরীহ দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে অবশ্য মামলা দাঁড় করাতে না পেরে দুজনেরই জামিন হয়ে যায়। ওই ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে মন্ত্রী-সহ উপস্থিত তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে শিলিগুড়ি থানায়। তাতে কোনও আমল দেয়নি পুলিশ বলেও বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।”
এদিন মন্ত্রী সহ অন্যান্যদের গ্রেফতারের দাবিতে জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে দুপুর ১২ টায় পুলিশ কমিশনারেটে হাজির হন জেলা বাম নেতারা। অশোকবাবু বলেন, “আমাদের ১২ টায় সময় দিয়ে পুলিশ কমিশনার এদিন উপস্থিত থাকলেন না। এটা চূূড়ান্ত অভদ্রতা ও অসম্মানজনক। আমরা আদালতে মানহানির মামলা করব। উনি ফোনও সুইচড অফ করে রেখেছেন। এটা কোনও উদ্দেশ্যে বা কারও নির্দেশে করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।”
সিপিএমের জেলা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, “রাজ্যে পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে। মার খেয়ে গ্রেফতার হলে মন্ত্রী চড় মেরে পার পেয়ে গেলেন কী ভাবে। আমরা তাঁর গ্রেফতার চাই।” কিন্তু পুলিশ সহযোগিতা করছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এদিন স্মারকলিপি দিতে হাজির হয়েছিলেন জীবেশবাবু ছাড়াও আরএসপির জেলা সম্পাদক তাপস গোস্বামী, ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক অনিরুদ্ধ বসু, সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরীরা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী অবশ্য তাঁদের দাবির কোনও উত্তর দিতে চাননি। তিনি বলেন, “পুলিশ যেটা ভাল মনে করবে সেটা করবে। বিরোধীরা কী বলল তাতে কিছু আসে যায় না।”
গত ২৮ সেপ্টেম্বর, শিলিগুড়ির জলপাইমোড় সংলগ্ন রামঘাট শ্মশানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের উদ্যোগে বৈদ্যুতিন চুল্লির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছিল। উদ্বোধনের কাজের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। সেই সময় মন্ত্রী গৌতম দেব কয়েকজনকে ডেকে নেন। সেখানেই মহানন্দ মণ্ডল নামে এক বাসিন্দাকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। মন্ত্রীর সঙ্গে থাকা দলের কয়েকজনও মহানন্দকে লাথি, ঘঁুষি মারেন বলে অভিযোগ দায়ের করা হয় থানায়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের পক্ষ থেকে মহানন্দ সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের করা হয়। তারই ভিত্তিতে পুলিশ মহানন্দকে ও রাজেশ যাদব না মে একজনকে গ্রেফতার করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy