শিলিগুড়ি নেতাজি গার্লস হাই স্কুলে এ ভাবেই মিড ডে মিল খেতে দেখা যায় ছাত্রীদের। —নিজস্ব চিত্র।
মন্ত্রীকে ফুল ছেটাতে পৌনে দুই ঘণ্টা সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থাকল খুদেরা। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ নেতাজি জিএসএফপি প্রাথমিক স্কুলে প্রজেক্টরের সাহায্যে পড়ার ব্যবস্থার উদ্বোধন করতে আসার কথা ছিল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের। মন্ত্রীর আসতে দেরি দেখে সকলেই চিন্তায় পড়েন। প্রথম, দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীদের অভিভাবকেরা মেয়েদের বাড়িতে নিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত সওয়া ১০ টা নাগাদ মন্ত্রী স্কুলে এলে অনুষ্ঠান শুরু হয়। হাতে রাখা ফুল ছিটিয়ে তাঁকে বরণ করে নেন কচিকাঁচারা।
গ্রামগঞ্জ থেকে শতাধিক বাসিন্দা নানা সমস্যা নিয়ে বাড়িতে আসায় কথা বলতে গিয়ে দেরি হয়েছে বলে মন্ত্রী স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে মন্ত্রী বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেরা উদ্যোগী হয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করছেন। তা দেখে ভাল লেগেছে। ভবিষ্যতে তাদের সাহায্য করা হবে।”
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা বলেন, “মন্ত্রী তাঁর কাজের ব্যস্ততার মধ্যে আমাদের সময় দিয়েছেন সেটাই বড় ব্যাপার। এ দিন তাঁকে পেয়ে আমরা সকলেই খুশি।” ওই একই ভবনে আরও দুটি স্কুল চলে। একটি নেতাজি গার্লস উচ্চ বিদ্যালয় এবং নেতাজি এনজিএফপি প্রাথমিক স্কুল। প্রাথমিক স্কুল দুটি চলে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত। নেতাজি গার্লস উচ্চ বিদ্যালয় শুরু হয় বেলা ১১ টা থেকে। মন্ত্রীর অনুষ্ঠানের জন্য স্কুলের সামনে থাকা প্রার্থনার শেডের জায়গায় তাই লোক দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে বসেই মিড ডে মিল খায় ছাত্রীরা। এ দিন জায়গার অভাবে নেতাজি এনজিএফপি স্কুলের ছাত্রীদের মাঠে বসে অনেককে মিড ডে মিল খেতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অভিভাবকেরা। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণা রুদ্র জানান, এ দিন অনুষ্ঠানের জন্য কিছুটা সমস্যা হয়েছে।
স্কুল সূত্রেই জানা গিয়েছে, ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ওই প্রোজেক্টর ব্যবস্থা চালু হয়েছে। একেকটি শ্রেণির ছাত্রীদের আলাদা ভাবে প্রোজেক্টরের সাহায্যে পাঠদান হবে। পাঠ্য বিষয়ের সিডি না থাকলেও কর্তৃপক্ষ তাদেরই এক শিক্ষকের সাহায্য নিয়ে পাঠ্য বিষয়ের সঙ্গে মিল রেখে বিভিন্ন বিষয় ক্যামেরা বন্দি করে ছাত্রীদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যেই বাঁধ, চাষের ব্যবস্থা, নদীর গতিপথ বিষয়ে ছাত্রীদের দেখানো হচ্ছে। রঞ্জনবাবুর দাবি, প্রাথমিক স্কুলগুলির মধ্যে তাদের এখানেই প্রথম এই ব্যবস্থা তাঁরা চালু করলেন। প্রজেক্টরের সাহায্যে শিক্ষা ব্যবস্থা যন্ত্রাংশ কেনার খরচ কোনও সরকারি প্রকল্প থেকে আসেনি। স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকারাই খুদে পড়ুয়াদের সাহায্যের জন্য একটি তহবিল তৈরি করেছেন। সেখানে প্রতি মাসেই শিক্ষকেরা যে যাঁর সাধ্য মতো টাকা দেন। তা থেকেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওই তহবিল থেকে মাঝেমধ্যেই ছাত্রীদের মিড ডে মিলে ভাল কিছু খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy