রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল ছবি।
রাজ্য সরকারের মনোনীত ব্যক্তিদেরই উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে বলে সুপ্রিম কোর্ট কোনও নির্দেশ দেয়নি বলে দাবি করল রাজভবন। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের দফতরের তরফে বুধবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এই দাবি করে বলা হয়েছে, ‘‘শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে আচার্যের (পদাধিকার অনুযায়ী রাজ্যপাল) কর্তৃত্বকে মেনে নেওয়া হয়েছে।’’
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্যের দেওয়া তালিকা থেকে রাজ্যপাল ইতিমধ্যেই ছ’টি নামে অনুমোদন দিয়েছেন। তাঁদের অবিলম্বে নিয়োগ করা হোক। বুধবার রাজভবনের বিবৃতিতে শীর্ষ আদালতের ওই অন্তর্বর্তী নির্দেশের ব্যাখ্যা— ‘‘ভারতের মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট আবার নিশ্চিত করেছে যে আচার্যই উপাচার্যদের নিয়োগের কর্তৃপক্ষ, সরকার নয়।’’
রাজ্য সরকারের অধীন ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাকি (ছ’টি বাদ দিয়ে) বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের জন্য সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে রাজ্যপালের কাছে বাছাই করা কিছু নামের তালিকা পাঠাতে বলেছে। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজভবন বনাম নবান্নের বিবাদ চলছে। সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ মঙ্গলবার আশাপ্রকাশ করেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দেওয়া নতুন তালিকা থেকে রাজ্যপাল আরও কয়েকজনকে উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন। যে সব বিশ্ববিদ্যালয় বাকি থাকবে, সেগুলির জন্য সুপ্রিম কোর্ট একটি সার্চ কমিটি গড়তে পারে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩০ এপ্রিল।
রাজভবনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মামলায় রাজ্যপালের তরফে শুনানিতে অংশ নেওয়া অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরমণি, শুরুতেই উল্লেখ করেছেন যে রাজ্য সরকারের সুপারিশকৃত তালিকার বাইরে প্রার্থীদের নিয়োগ করে উপাচার্যের ছয়টি শূন্যপদ পূরণ করা হবে। দুই বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাজভবনের দাবি, রাজ্য সরকার, অবশিষ্ট শূন্যপদগুলির জন্য আরও কিছু নাম পাঠাতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘কয়েক সপ্তাহ আগে মাননীয় সুপ্রিম কোর্ট পরামর্শ দিয়েছিল যে রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রী কফি কাপ নিয়ে মুখোমুখ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমস্যাগুলি সমাধান করার চেষ্টা করবেন। তা মেনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল আনন্দ বোস দু’বার দেখা করেছেন। পরবর্তী সময়ে, সরকার রাজ্য-সহায়তাপ্রাপ্ত সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগের জন্য বিবেচনা করার জন্য ৩১টি নামের একটি তালিকা দিয়েছে। রাজ্যপাল সেই সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগের জন্য তালিকা থেকে ছয়টি নাম বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ওই আসনগুলি শূন্য ছিল। শিক্ষামন্ত্রীর প্রস্তাবিত অন্য নামগুলো আচার্য (রাজ্যপাল) প্রত্যাখ্যান করেছেন। কারণ, সেগুলি অযোগ্য বা অনুপযুক্ত।’’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতেই রাজ্য সরকারের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে আচার্যের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। অ্যাটর্নি জেনারেল দাবি করেছেন, রাজ্য সরকারের মামলা করার জন্যই অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। শীর্ষ আদালত তাতে গুরুত্ব না দিয়ে জানিয়েছে, আচার্য রাজ্যের বক্তব্যগুলির জবাব দিক। সুপ্রিম কোর্টের মঙ্গলবারের অন্তর্বর্তী নির্দেশ নিয়ে আচার্যকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। এক্স হ্যান্ডলে পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘ছয় দিয়ে শুরু! নিশ্চয়ই ৩১-এ শেষ হবে। আশা করি মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট রাজভবনের মনে সদিচ্ছা জাগাতে পারবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy