বগটুইকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত লালনের মৃত্যু নিয়ে জনস্বার্থ মামলার রায় ঘোষণা আপাতত স্থগিত রাখল কলকাতা হাই কোর্ট। ফাইল চিত্র।
লালনের শেখের মৃত্যুর ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করেছে। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে এ কথা জানালেন কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী। বগটুইকাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত লালনের মৃত্যু নিয়ে জনস্বার্থ মামলার রায় ঘোষণা স্থগিত রাখল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
জনস্বার্থ মামলাটিতে উচ্চ আদালতের কাছে দু’টি আবেদন করা হয়েছিল। এক, জনস্বার্থ মামলাটি গ্রহণ করুক হাই কোর্ট। আর দুই, লালনের মৃত্যু ‘রহস্য’ উন্মোচনে হাই কোর্টের নজরদারিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানো হোক। মামলাকারীর দ্বিতীয় আবেদনের যুক্তিকে বলা হয়, রাজ্যের তদন্তেকারী সংস্থা সিআইডি এই তদন্তের বিষয়ে দক্ষ নয়। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব মামলাকারীর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলেন, “আপনি কি সমান্তরাল তদন্ত চাইছেন?” তার উত্তরে মামলাকারীর আইনজীবী বলেন, “কোনও কমিশন বা কমিটি গঠন করে ঘটনাটির অনুসন্ধান করা হোক।”
মামলাকারীর আইনজীবী কোনও সমান্তরাল তদন্ত চাইছেন কি না, সে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি। মামলাকারীর আইনজীবী আদালতের কাছে এই ঘটনাটির অনুসন্ধান করার জন্য কোনও নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানোর আবেদন জানান। রাজ্যের হাতে যাতে কোনও ভাবেই তদন্তভার না যায়, তা নিশ্চিত করারও অনুরোধ জানানো হয়। কোন সংস্থা নিরপেক্ষ, তা আইনজীবীর কাছে জানতে চান প্রধান বিচারপতি। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান, নতুন করে বিচারপতি নিয়োগ করে ফের তদন্ত করার প্রয়োজনীয়তা নেই। হাই কোর্ট সিআইডির হাতেই তদন্তভার রেখেছে। সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না জানিয়েছিল আদালত। সেই মতোই তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কেন্দ্রের আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী রাজ্যের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ করে জানান, তদন্তের নামে আমাদের অফিসারদের অযথা হয়রানি করা হচ্ছে। সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে সিআইডি এবং রাজ্য পুলিশের এফআইআর করার পিছনে নির্দিষ্ট কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মৃত্যুর ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এই ঘটনাটি সিবিআই নিজেই খতিয়ে দেখছে। শুধুমাত্র লালনের স্ত্রীর দাবির প্রেক্ষিতে সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। বার বার সিবিআইয়ের সম্মানহানি করতে রাজ্য সচেষ্ট হচ্ছে বলেও আদালতে অভিযোগ করেন কেন্দ্রের আইনজীবী। মৃত্যুর আগে লালনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট উল্লেখ করে তিনি জানিয়েছেন, লালন মানসিক এবং শারীরিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মহেশকুমার মিত্তলের নেতৃত্বে একটি কমিটি এই ঘটনাটির তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন তিনি। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে রায়দান স্থগিত রেখেছে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy