ফাইল চিত্র।
কিছু দিন ধরেই স্বাস্থ্য ভবনে শোনা যাচ্ছিল, দফতরের অন্যতম সচিব বিনোদকুমারের কাজে বিশেষ সন্তুষ্ট নন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক সূত্রের মতে, নবনিযুক্ত স্বাস্থ্যসচিব অনিল বর্মার সঙ্গেও বিনোদকুমারের সম্পর্কও খুব একটা মধুর ছিল না। স্বাস্থ্য দফতর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই কিছু বিষয়ে এই দুই আমলার মতবিরোধও প্রকাশ্যে এসেছিল। বুধবার বিনোদকুমারকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় সেই বিরোধিতাই যেন স্পষ্ট হল বলে মনে করছে স্বাস্থ্য ভবনের একাংশ।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন এবং হাউসস্টাফদের কর্মবিরতি নিয়ে দিন কয়েক টানাপড়েন চলার পরেই রাতারাতি বিনোদকুমারকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। সে জায়গায় আনা হল তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা তথা কাউন্সিলর শান্তনু সেনকে। সরকারি নির্দেশনামায় অবশ্য শান্তনুকে শুধুমাত্র ‘বিশিষ্ট ব্যক্তি’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতিতেই এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
ন্যাশনালের একাংশ মনে করছে, গোলমালের পরেই বিনোদকুমারকে সরিয়ে দেওয়ার অর্থই হল, প্রশাসনের চোখে তিনি ব্যর্থ। ন্যাশনালের একটা বড় অংশ এবং স্বাস্থ্য ভবনের একাধিক কর্তার কথায়, রোগী কল্যাণ সমিতির প্রধানের কাজ মোটেই জুনিয়র ডাক্তার বা ডাক্তারি পড়ুয়াদের নিয়ন্ত্রণ করা নয়। সে বিষয় দেখার কথা অধ্যক্ষের। আরকেএস-এর যা দায়িত্ব তা গত কয়েক মাসে ভাল ভাবেই পালন করেছিলেন বিনোদ।
ন্যাশনালের রোগী কল্যাণ সমিতি থেকে বিনোদকুমারের অপসারণ সম্পর্কে ন্যাশনালের সুপার পীতবরণ চক্রবর্তী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘কেন ওঁকে সরানো হল জানি না।’’ স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘বদল তো হতেই পারে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে বদল করেছেন। অফিসারদের তো অন্য অনেক কাজ থাকে। তার মানে এই নয় যে, উনি সামলাতে পারছেন না।’’ বিনোদকুমারের নিজের বক্তব্য, ‘‘সরকার কাকে কোথায় সরাবেন সেটা সরকারের সিদ্ধান্ত।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী নিজে ন্যাশনালের কর্মবিরতি ওঠানোর ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার পরেও মঙ্গলবার সারাদিন কর্মবিরতি বজায় থাকাটা প্রশাসন ভাল ভাবে নেয়নি। শনিবার রাত থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি চলার সময় বিনোদকুমারকে হাসপাতালে দেখা যায়নি, সেই জায়গায় শান্তনুবাবু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এই সক্রিয়তাই হয়তো বিনোদকুমারের বিপক্ষে এবং শান্তনুর পক্ষে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy