ভাঙড় তথা বাংলার উন্নয়নের জন্য তাঁর পছন্দের কথা জানিয়েছেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। ফাইল চিত্র।
স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিমুক্ত পঞ্চায়েত নির্বাচন চান ভাঙড়ের মানুষ। যাতে পঞ্চায়েতের টাকা উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা যায়। এবং সেই উন্নয়নের খাতিরেই ভাঙড়ের দায়িত্ব নিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে থাকুন শাসকদলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে বার বার বিষোদ্গার করলেও শনিবার এমনই মন্তব্য করলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি।
ভাঙড়ে শাসকদলের প্রভাবশালী নেতা হিসাবে পরিচিত আরাবুল ইসলাম বা শওকত মোল্লাদের নিয়ে তিনি যে ভাবিত নন, তেমন দাবিও করেছেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (আইএসএফ) একমাত্র বিধায়ক। বরং ভাঙড় তথা বাংলার উন্নয়নের জন্য তাঁর পছন্দ মমতা এবং অভিষেক। ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব পেতে চলেছেন ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা। শনিবার ভাঙড়ের শীর্ষস্থানীয় সব নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয় তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের। তবে ভাঙড়ে তাঁদের দায়িত্ব নিয়ে তিনি যে ভাবিত নন, তা জানিয়ে নওশাদ বলেন, ‘‘ভাঙড়ে কে দায়িত্ব পাচ্ছেন, কে অব্যাহতি নিচ্ছেন না, তা নিয়ে ভাবিত নই। আমরা মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছি। ভাঙড়ের মানুষকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করে রেখেছিল দীর্ঘ দিন। সেই শৃঙ্খল মুক্ত করেছি। মানুষ তাঁর গন্তব্য খুঁজে নেবে।’’ আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে উন্নয়নের লক্ষ্যেই ভাঙড়ের দায়িত্ব অভিষেক নিন। সঙ্গে মমতাও থাকুন বলে মন্তব্য নওশাদের। তাঁর কথায়, ‘‘ভবিষ্যতে দুর্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ পঞ্চায়েত চায় ভাঙড়। যাতে পঞ্চায়েতের টাকা উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা যায়। যদিও দায়িত্ব নেওয়ার হয়, তবে মমতা ব্যানার্জি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, দলের সুপ্রিমো, তিনি দায়িত্ব নিন। না হলে দলের সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড অভিষেক ব্যানার্জি ভাঙড়ের দায়িত্ব নিন।’’
৪২ দিন জেলে থাকার পর সদ্য মুক্তি পেয়েছেন নওশাদ। ২১ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে ধর্মতলায় জমায়েতে আইএসএফ কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পর অনেকের সঙ্গে তাঁকেও গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ওই ঘটনায় শাসকদলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারও করেছেন নওশাদ। তবে শনিবার তিনি বলেন, ‘‘আমি সৌজন্যের রাজনীতি পছন্দ করি। যদি কেউ ভাঙড়ের নাম খারাপ করতে চান, তবে ভাঙড়বাসীকে নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রতিরোধ করব।’’
চলতি বছরে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রে বিশেষ নজর রয়েছে তৃণমূলের। শনিবার ভাঙড়ের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। দীর্ঘ দিন ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকে তৃণমূলের কোনও সভাপতি নেই। সূত্রের দাবি, নওশাদের গ্রেফতারির পর ভাঙড় জুড়ে আইএসএফের শক্তি বৃদ্ধি হয়েছে। অন্য দিকে, শাসকদলে রয়েছে গোষ্ঠী কোন্দল। তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই বিশেষ বৈঠক করেন শাসকদলের নেতৃত্ব। মিটিং শেষে শওকত বলেন, ‘‘৫-৭ দিনের মধ্যে বুথভিত্তিক রিপোর্ট তৈরি করে দলকে জমা দেব। ভাঙড়ের প্রত্যেক বুথের কী অবস্থা হয়ে রয়েছে বা আইএসএফ কোথায় কতটা শক্তিশালী হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’
মমতা এবং অভিষেকের নির্দেশে শনিবার ভাঙড় বিধানসভার পর্যবেক্ষক হিসাবে শওকতের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে স্থির হয়েছে, ভাঙড়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বা দলীয় কোন্দল বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এলাকার নেতাদের সঙ্গে শওকত মোল্লা যোগাযোগ রাখবেন। অন্য দিকে, পঞ্চায়েতের প্রার্থী দল ঠিক করবে। তা নিয়ে স্থানীয় নেতাদের মাথা ঘামাতে হবে না বলেও সাফ জানানো হয়েছে। পরে শওকত বলেন, ‘‘আগামিকাল (রবিবার) আমি ফুরফুরা শরিফে যাব। মুখ্যমন্ত্রীর জনহিতকর প্রকল্প ভাঙড়ের মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘নওশাদ কী বললেন, তাতে তৃণমূলের কিছু যায়-আসে না। আসন্ন পঞ্চায়েতে তৃণমূল ভাল ফল করবে বলে আমি আশাবাদী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy