Advertisement
০৪ জুলাই ২০২৪
Cooch Behar

কোচবিহারের নির্যাতিতার সঙ্গে ফের কথা বলল জাতীয় মহিলা কমিশন, পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন

রবিবার দুপুরে কোচবিহার সার্কিট হাউসে নির্যাতিতার সঙ্গে ফের কথা বলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যা বেলিনা কংবুপ। সেই সময় সার্কিট হাউসে ডেকে পাঠানো হয় ঘোকসাডাঙা থানার ওসিকেও।

—প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪ ২১:২৯
Share: Save:

কোচবিহারের মাথাভাঙার রুইডাঙা এলাকায় বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সদস্যাকে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনা নিয়ে চাপানউতর অব্যাহত রইল রবিবারও। রবিবার দুপুরে কোচবিহার সার্কিট হাউসে নির্যাতিতার সঙ্গে ফের কথা বলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যা বেলিনা কংবুপ। সেই সময় সার্কিট হাউসে ডেকে পাঠানো হয় ঘোকসাডাঙা থানার ওসিকেও। নির্যাতিতা এবং ওসিকে সামনাসামনি বসিয়ে কথা বলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের ওই সদস্যা।

নির্যাতিতার সঙ্গে কথা বলার পর বেলিনা বলেন, “এই ঘটনায় যেমন পারিবারিক বিষয় রয়েছে, তেমনই রাজনৈতিক বিষয়ও রয়েছে। তবে তাদের উদ্দেশ্য নির্যাতিতাকে ন্যায় পাইয়ে দেওয়া। তিনি বলেন পুলিশের বয়ান এবং নির্যাতিতার বয়ানের মধ্যে ফারাক রয়েছে।” পুলিশের অসহযোগিতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যার অভিযোগ, পুলিশ সুপারের সঙ্গে রবিবার বেশ কয়েক বার দেখা করার চেষ্টা করলেও পুলিশ সুপার দেখা করেননি। পুলিশ সুপারের দফতরে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে তাঁকে। সোমবার আবার তিনি পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বলে জানিয়েছেন বেলিনা।

নির্যাতনের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই নির্যাতিতা এবং বিজেপির পক্ষ থেকে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বেলিনা বলেন, “সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন হলে নিশ্চয়ই আমরা সিবিআই তদন্তের বিষয়ে অগ্রসর হব।” তবে তাঁর কথা অনুযায়ী, আপাতত পুলিশের উপরেই ভরসা রাখছে কমিশন। জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যার সঙ্গে দেখা করার পর নির্যাতিতা বলেন, “কমিশনকে সমস্ত ঘটনা জানিয়েছি। পুলিশ এখন বলছে আমাকে উলঙ্গ করা হয়নি। পুলিশ এ-ও বলছে যে, ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাকে কাপড় পরা অবস্থায় দেখেছে। কিন্তু এটা সত্য নয়। তৃণমূল কী ভাবে অত্যাচার করেছে, সবটাই জানিয়েছি। বিচার পাব বলেই আশা রাখছি।”

কয়েক দিন আগে মাঠে ছাগল চরাতে গিয়েছিলেন ওই বিজেপি নেত্রী। অভিযোগ, সেই সময় তাঁকে গালিগালাজ করে মারধর করেন কয়েক জন মহিলা। এমনকি, তাঁকে বিবস্ত্র করেও পেটানো হয়। এ নিয়ে ঘোকসাডাঙা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এখনও পুলিশি তদন্ত চলছে। যদিও এই পুরো ঘটনায় জুড়েছে রাজনৈতিক রং। পদ্মশিবির দাবি করেছে, বিজেপি করেন বলেই মহিলাকে হেনস্থা করা হয়েছে। তারা পুরো ঘটনার সঙ্গে শাসকদলকে জড়িয়ে এ-ও অভিযোগ করেছে যে, শুধু মহিলারাই নন, হেনস্থায় ছিলেন পুরুষরাও। তা ছাড়া পুলিশি তদন্তে আস্থা নেই বলে জানিয়েছে পদ্মশিবির। বিজেপি মহিলা মোর্চার নেত্রী তথা বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে শনিবার রাতে কোচবিহারের আসেন জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি। রবিবার বেলায় তিনি নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।

কোচবিহারের জেলা তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের অবশ্য দাবি, পারিবারিক বিবাদকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে রাজনৈতিক মোড়ক দিতে চাইছে বিজেপি। এখানে তৃণমূলের কেউ যুক্ত নন। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটে কোচবিহারে এত বড় জয়ের পরে জেলায় কোথাও কোনও গন্ডগোল হয়নি। ছোট কোনও ঘটনার কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু বার বার এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল এবং বিজেপির বিবাদ বলে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চলছে। এটা বেদনাদায়ক।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই রকম একটা বিশ্রী কুৎসা করা হচ্ছে কেন? কোচবিহারের মানুষ এ বার তৃণমূলকে জিতিয়েছেন বলে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar National Women Commission BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE