রোহিত শর্মা এবং হার্দিক পাণ্ড্য। ছবি: পিটিআই।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে নিয়েছে ভারত। গত এক মাসের লড়াই শেষ। আমেরিকা, কানাডা, উগান্ডার মতো দেশ ক্রিকেট বিশ্বকাপে খেলল। অনেক অঘটন দেখল এ বারের বিশ্বকাপ। পাকিস্তান, নিউ জ়িল্যান্ডের মতো দেশকে ছিটকে যেতে দেখেছে। আমেরিকাকে সুপার ৮-এ উঠতে দেখেছে। সব লড়াই শেষে আনন্দবাজার অনলাইন বেছে নিল এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা একাদশ।
রোহিত শর্মা (অধিনায়ক): দ্বিতীয় বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতলেন রোহিত। ২০০৭ সালের পর ২০২৪ সালে। এক বার ক্রিকেটার হিসাবে। এ বার অধিনায়ক হিসাবে। আর সেই বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে করলেন ২৫৭ রান। তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৫৬.৭০। তিনটি অর্ধশতরান করেছেন। গোটা বিশ্বকাপে বিরাট কোহলির রান না পাওয়া পুষিয়ে দিয়েছেন। ওপেনার হিসাবে সফল রোহিত। সেরা একাদশের ওপেনার এবং অধিনায়ক তিনিই।
কুইন্টন ডি’কক (উইকেটরক্ষক): রোহিতের সঙ্গে ওপেন করবেন ডি’কক। দক্ষিণ আফ্রিকার এই বাঁহাতি ওপেনার এ বারের বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচে ২৪৩ রান করেছেন। তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৪০.৪৬। এ বারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন রহমানুল্লা গুরবাজ়। কিন্তু আফগান ওপেনারের স্ট্রাইক রেট কম। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সেটার গুরুত্ব রয়েছে। আর গুরবাজ় দু’টি ম্যাচে শূন্য করেন। অর্থাৎ, রান করলেও তাঁর ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে। সেই কারণেই সেরা একাদশে রাখা গেল না গুরবাজ়কে। আর ডি’কক এই দলের উইকেটরক্ষকও।
ট্রেভিস হেড: অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ওপেন করলেও এই দলে তিন নম্বরে রাখা হল হেডকে। তিনি সেই জায়গায় খেলতে অভ্যস্ত। এ বারের বিশ্বকাপে সাত ম্যাচে ২৫৫ রান করেছেন হেড। গত বছর এক দিনের বিশ্বকাপ জেতানো ক্রিকেটারের স্ট্রাইক রেট ১৫৮.৩৮। শুরুতে রোহিত বা ডি’ককের মধ্যে কেউ আউট হলে বিপক্ষের উপর চাপ তৈরির জন্য সেরা ক্রিকেটার হেডই। প্রয়োজনে অফস্পিনও করতে পারেন তিনি।
সূর্যকুমার যাদব: টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সূর্যকে বাদ দেওয়া কঠিন। আর ফাইনালে ওই ম্যাচ জেতানো ক্যাচটি নেওয়ার পর তাঁকে বাদ দেওয়া আরও কঠিন। আট ম্যাচে ১৯৯ রান করেছেন তিনি। তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৩৫.৩৭। এই দলে থাকার ক্ষেত্রে সূর্যের লড়াই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার হেনরিখ ক্লাসেনের সঙ্গে। কিন্তু স্ট্রাইক রেট, রান এবং ধারাবাহিকতায় ক্লাসেনকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন ভারতের সূর্য। তাই সেরা একাদশে জায়গা করে নিলেন তিনিই।
হার্দিক পাণ্ড্য: অলরাউন্ডার হার্দিক পাণ্ড্য এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যাটে, বলে সফল। আইপিএলের ব্যর্থতার ছাপ ভারতের জার্সিতে পরেনি। হার্দিক আট ম্যাচে ১৪৪ রান করেছেন। একটি অর্ধশতরান করেছেন। তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৫১.৫৭। বল হাতে হার্দিক ১১টি উইকেট নিয়েছেন। ফাইনালের শেষ ওভারটিও তাঁর করা। খুব বেশি রানও দেননি তিনি এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ওভার প্রতি আট রানেরও কম দিয়েছেন হার্দিক।
মার্কাস স্টোয়নিস: দলের দ্বিতীয় অলরাউন্ডার অস্ট্রেলিয়ার স্টোয়নিস। হার্দিকের মতো তিনিও পেস বোলিং করেন। ব্যাট হাতে স্টোয়নিস সাত ম্যাচে ১৬৯ রান করেন। তাঁর স্ট্রাইক রেট ১৬৪.০৭। এই দলের ফিনিশার তিনিই। আবার বল হাতে মিডল ওভারেও উইকেট তুলতে পারেন স্টোয়নিস। ১০টি উইকেট নিয়েছেন এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এই দলের ভারসাম্য বজায় রাখবেন হার্দিক এবং স্টোয়নিস।
অক্ষর পটেল: দলের তৃতীয় অলরাউন্ডার অক্ষর। ভারতের বাঁহাতি স্পিনার আট ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়েছেন। তাঁর থেকে বেশি উইকেট অনেক স্পিনারের থাকলেও ব্যাট হাতেও সফল অক্ষর। শেষ বেলায় ব্যাট করে খুব বেশি রান হয়তো করার সুযোগ পাননি। কিন্তু দলের প্রয়োজনে যে রান করার সেটা করে দিয়েছেন। শেষ বেলায় নেমে তাঁর করা রান ভারতকে একাধিক ম্যাচে সুবিধা করে দিয়েছে। সেমিফাইনালে ম্যাচ জেতানো বোলিং তো আছেই।
রশিদ খান: অক্ষরের সঙ্গী হবেন আফগানিস্তানের রশিদ। আফগান লেগ স্পিনার এ বারের বিশ্বকাপে ১৪টি উইকেট নিয়েছেন। তাঁর দলকে সেমিফাইনালে তুলেছেন। স্পিনারদের মধ্যে এ বারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি উইকেট তাঁরই। বাঁহাতি এবং ডানহাতি স্পিনারের জুটি গড়বেন রশিদ এবং অক্ষর। বৈচিত্রও থাকবে দলে।
যশপ্রীত বুমরা: এ বারের বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটার বুমরা। ৮ ম্যাচে ১৫টি উইকেট নিয়েছেন। ওভার প্রতি ৪.১৭ রানের বেশি দেননি গোটা প্রতিযোগিতায়। ফাইনালেও ভারতের জয়ের নেপথ্যে ছিল তাঁর বোলিং। বুমরা চার ওভারে এত কম রান দেন যে, তাতে চাপে পড়ে যায় প্রতিপক্ষ। সেই সঙ্গে উইকেটও তোলেন বিরাট। যা আরও চাপ বৃদ্ধি করে। এই দলের বোলিং আক্রমণকেও নেতৃত্ব দেবেন তিনিই।
ফজ়লহক ফারুকি: আফগান পেসার এ বারের প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন। আট ম্যাচে ন’টি উইকেট নিয়েছেন ফারুকি। তিনিও খুব বেশি রান দেননি। ওভার প্রতি ৬.৩১ রান দিয়েছেন ফারুকি। বুমরা এবং ফারুকি মিলে যে কোনও বিপক্ষকে চাপে ফেলতে পারেন।
আরশদীপ সিংহ: ফারুকির মতো আরশদীপও বাঁহাতি পেসার। তিনিও ১৭ উইকেট নিয়েছেন। তাঁর এত উইকেট নেওয়ার ক্ষমতাই এই দলে জায়গা পাকা করল। দুই বাঁহাতি পেসারের সঙ্গে বুমরা মিলে যে কোনও বিপক্ষের ঘুম কেড়ে নিতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy