পোষ্যের শরীরে কোন কোন পরজীবীর সংক্রমণ হতে পারে? দূর করার উপায় কী? ছবি: ফ্রিপিক।
কুকুরের লোমে ছোট ছোট কালচে লাল পোকা বাসা বাঁধে। ত্বকের সঙ্গে এমন ভাবে আটকে থাকে এই পোকা, দেখে মনে হতে পারে আঁচিল। এরা এমন এক ধরনের পরজীবী, যারা কুকুর, বিড়াল বা পশুদের শরীরেই বাসা বাঁধে। বর্ষা ও শীতের সময়ে কুকুরের শরীরে এমন পোকার সংক্রমণ ঘটে, যাদের টিক পোকা বা এঁটুলি বলা হয়। এই ধরনের পোকা সংখ্যায় বাড়তে থাকলে তা থেকে ত্বকে মারাত্মক সংক্রমণ হতে পারে। চুলকানি, র্যাশ তো বটেই, ত্বকে ঘা হতেও দেখা যায় কুকুরের।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পোষ্য থাকলে, স্নান না করলে অথবা শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হলে এমন পরজীবীর সংক্রমণ হতে পারে। পশু চিকিৎসক সবুজ রায়ের মতে, , পোষ্যের ঘন লোমের মধ্যে এই পরজীবীগুলি এমন ভাবে লুকিয়ে থাকে যে, তাদের চোখে দেখতে পেলেও হাতের নাগালে পাওয়া মুশকিল হয়। সাধারণত পোষ্যের কানের আশপাশের অঞ্চলে এবং কানের লতির মধ্যে এই পোকা জন্মায়। সেখান থেকে চোখ, ঠোঁট এবং গালের আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। অন্য প্রাণীর শরীর থেকেও পরজীবীর সংক্রমণ ঘটে। পোষ্যের গলায় যদি বেল্ট পরানোর কলার সব সময়ে পরিয়ে রাখা হয়, তা হলে সেখানেও পরজীবী জন্মায়। মাটিতে বসার সময় পোষ্যরা সাধারণত বুকে, পেটে ভর দিয়েই বসে। তাই মাটি থেকে ঠিক পোষ্যের দেহের ওই অংশে ছোট ছোট পোকা ছড়িয়ে পড়ে। খুব দ্রুত এরা বংশবিস্তার করতে পারে।
গায়ে এঁটুলি বা টিক পোকার সংক্রমণ হলে লোম ঝরতে শুরু করে। ত্বকে র্যাশ, ঘা হতে দেখা যায়। পোকার কামড়ে জ্বরও আসে কুকুরের। ‘ডেমোডেক্স ক্যানিস’ নামে আরও এক ধরনের পরজীবীর সংক্রমণ হয় কুকুরের লোমে। এই ধরনের পোকা কুকুরের শরীর থেকে রক্ত খায় ও বংশবিস্তার করে। এদের সংখ্যা বাড়লে ত্বকে অ্যালার্জি, চুলকানি তো হয়ই, অন্যান্য রোগের আশঙ্কাও বাড়ে। প্রদাহ শুরু হয় কুকুরের শরীরে, প্রচণ্ড যন্ত্রণা হয় ওদের।
ট্রম্বিকিউলোসিস নামে আরও এক ধরনের পোকার সংক্রমণ হয় কুকুরের। এগুলিকে দেখতে ছোট ছোট মাকড়সার মতো। মাটি, ঘাস থেকে কুকুরের শরীরে ঢোকে এই পরজীবীরা। এদের কারণে কুকুরের ত্বকে মারাত্মক অ্যালার্জির সংক্রমণ হয়।
কী ভাবে যত্ন নেবেন পোষ্যের?
অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার ত্বকের যে কোনও সংক্রমণ দূর করতে পারে। এর অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ব্যাক্টিরিয়াল গুণ আছে। তবে সরাসরি ভিনিগার কুকুরের ত্বকে লাগাবেন না। জলে কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে পোষ্যকে স্নান করাতে পারেন।
বাইরে ঘুরিয়ে আনলে কুকুরের থাবা পরিষ্কার করতে হবে। গায়ের লোম ভাল করে ঝেড়ে দিতে হবে, যাতে ধুলোময়লা না লেগে থাকে।
পোষ্যের ত্বকে র্যাশ বা ঘায়ের মতো হলে সেখানে অলিভ তেল লাগাতে পারেন। তবে খুব অল্প পরিমাণে অলিভ তেল নিয়ে মালিশ করতে হবে।
কুকুরের নখ কাটতে হবে প্রতি সপ্তাহে। কান পরিষ্কার রাখতে হবে। তার জন্য ওষুধও পাওয়া যায়। তবে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ওষুধ ব্যবহার করা উচিত।
পোষ্যের লোম ভাল করে ব্রাশ করে দিন। পরজীবীগুলি সাধারণত পোষ্যের দেহের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় আটকে থাকতেই ভালবাসে। স্নান করানোর সময় বা লোম আঁচড়ানোর সময় ওই নির্দিষ্ট জায়গাগুলিতে নজর দিলেই এই সমস্যা থেকে অনেকটা রেহাই মিলতে পারে।
পোষ্যের গলায় যদি বেল্ট পরানোর কলার থাকে, তা হলে সেটি খুলে পরিষ্কার করুন। সবসময় ‘কলার’ না পরিয়ে রাখাই ভাল। কারণ ‘কলার’ পরিয়ে রাখা জায়গায় পরজীবীর সংক্রমণ আগে হতে পারে।
কুকুরের জন্য এমন শ্যাম্পু কিনুন, যার অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণ আছে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই শ্যাম্পু বাছতে হবে।
পোষ্যকে নিয়মিত দই-ভাত খাওয়াতে পারেন। দই খুব ভাল প্রোবায়োটিক, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy