মঞ্চের পথে। কৃষ্ণনগরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
গড়ির কাঁটায় বিকেল সোয়া চারটে। রোদের তেজ তখনও জানান দিচ্ছে। কিন্তু কৃষ্ণনগর কারবালার মাঠে গিজগিজ করছে কালো মাথা। “সোয়া চারটের রোদেও মাঠে ভিড় কিন্তু ভালই হয়েছে।” গাড়ি থেকে নেমেই প্রথম প্রতিক্রিয়া রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। যা শুনে জেলার এক নেতা তাঁকে জানিয়ে দিলেন, “আপনি কিন্তু পাঁচটার সময় বক্তব্য রাখবেন।”
সোয়া পাঁচটা নাগাদ মঞ্চে বক্তব্য রাখতে ওঠেন বুদ্ধদেববাবু। মাঠে তখন ভিড় যেন উপচে পড়ছে। বহু মানুষ মাঠে ঢুকতে না পেরে রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে যান। সেই ভিড়ের দিকে তাকিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নিজস্ব ভঙ্গিতে একের পর এক ইস্যুতে কংগ্রেস, বিজেপি ও তৃণমূলকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শুরু করেন। তিনি বলেন, “সারদার কথা বললে ওরা ভয় পায়। আমরা জানতে চাই এত টাকা কোথায় গেল? কার কার পকেটে ঢুকল? মানুষ কবে টাকা ফেরত পাবেন? সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে সিবিআই তদন্ত হোক।” হেলিকপ্টার নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “হেলিকপ্টার কোথা থেকে পাচ্ছে? কে টাকা দিচ্ছে? কংগ্রেস বড় পার্টি বুঝলাম। আমরা তো এত বছর রাজনীতি করছি। আমরা পারি না তো। পাপের টাকায় আমরা হাত দেব না। পাপের টাকায় রাজনীতি করব না। সেটা ওরা করছে। দিন-রাত মিথ্যে কথা বলছে।”
তিনি বলেন, “তৃণমূলকে আর কী বলব। ওরা কংগ্রেসের সব অপকর্মের সঙ্গে থেকেছে। আবার বিজেপির সব অপকর্মেরও সঙ্গেও থেকেছে। গুজরাত দাঙ্গার সময় এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ফুল পাঠিয়েছিলেন। লজ্জা করে না? এখনও একবারও বললেন না যে, ভুল করেছিলাম। একবারও বলছেন না যে, ভবিষ্যতে বিজেপির সঙ্গে সরকারে থাকব না।” তিনি বলেন, “শালবনিতে সব থেকে বড় ইস্পাত কারখানা করতে চেয়েছিলাম। প্রাচীর, অফিস ঘর তৈরি হয়ে গেল। এখন শুনছি কিছু হবে না। তারা আসবে না। ইনফোসিস আসবে না। তাহলে ছেলে-মেয়েদের কী হবে?” কংগ্রেস ও বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “মনমোহন সিংহের সরকার পারল না। ১০ বছর সময় পেল তারা। দেশের বেশিরভাগ মানুষকে আরও গরিব করল। এই দেশেই পৃথিবীর সব থেকে বেশি মানুষ রাতে ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যায়।” তিনি বলেন, “কংগ্রেস পারল না। পাশের রাস্তা দিয়ে রে রে করে আসছে নরেন্দ্র মোদী। আমরা বলছি, ওরা এলে দেশে আগুন জ্বলবে।” এদিন তিনি ১১টি দল নিয়ে বিকল্প সরকার গঠনের ডাক দেন। প্রায় ২২ মিনিটের এই বক্তৃতার পরেও তিনি প্রার্থীদের বক্তৃতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত মঞ্চে বসে থাকেন। সভার শেষে জেলার এক নেতা বলছিলেন, “ভিড় দেখে বুদ্ধবাবুর যে মন ভাল হয়ে গিয়েছে তা কিন্তু বিলক্ষণ বোঝা যাচ্ছিল।” আর আপনাদের? ওই নেতার সহাস্য উত্তর, “মনে হচ্ছে হাওয়া ঘুরতে শুরু করেছে।” সেই হাওয়ার প্রভাব কতটা পড়বে ভোট বাক্সে? উত্তর জানে ১৬ মে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy