লোকসভা ভোটে দেশ জোড়া ইউপিএ সরকার বিরোধী হাওয়ায় ধুয়ে-মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে কংগ্রেস। কট্টর কংগ্রেস বিরোধী রাজনীতি করা সত্ত্বেও সিপিআই (এমএল) লিবারেশন কিন্তু দেশব্যপী মনমোহন সিংহ সরকার বিরোধী এই ভোটের কিছুই নিজেদের ভোট বাক্সে টানতে পারেনি। সারা দেশে মাত্র দশ লক্ষের কিছু বেশি ভোট পেয়েছে তারা। শতাংশের হিসেবে যা মাত্র ০.২ শতাংশ। এমন ফলের কারণ খুঁজছেন সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের শীর্ষ নেতৃত্বও। ভোটের ফল প্রকাশের ন’দিনের মাথায় দিল্লিতে ২৫, ২৬, এবং ২৭ মে সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠক হয়। তারপর থেকে চলছে রাজ্য কমিটিগুলির বৈঠক। দলের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির দু’দিনের সম্মেলন হল নবদ্বীপে। শনি এবং রবিবার নবদ্বীপের মনিপুরের এক অতিথিশালায় রাজ্য কমিটির সদস্যরা নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন লিবারেশনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “এবারের ফলাফল কেন এমন হল তার উত্তর আমরাও খুঁজছি। ঝাড়খন্ডের কোডারমা আসনে আমরা দ্বিতীয় এবং বিহারের দু’টি আসনে আমরা তৃতীয় স্থানে আছি। তবে এবার ভোটার ও ভোট প্রদানের হার যেভাবে বেড়েছে সেই নিরিখে আমরা ভোট কমই পেয়েছি।”
দীপঙ্করবাবুর মতে, “ভারতবর্ষের মতো দেশের পক্ষে নতুন মোদী সরকার এক অশনি সঙ্কেত। অন্য দিকে এ রাজ্যে কৃষক আত্মহত্যা, নারী নির্যাতন বা কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে রাজ্য সরকার মুখ ঘুরিয়েছে। হিন্দ মোটর বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাতেও রাজ্য সরকার চরম ব্যর্থ। আগামী দু’টো মাস ধরে এই বদলে যাওয়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করাই এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে মনে করছে লিবারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটি। বিভিন্ন রাজ্য সম্মেলনে সেই বার্তাই দেওয়া হচ্ছে। দলের কর্মীদের একেবারে নিচু তলায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি বুঝতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে যে বার্তা আসবে সেই মতো পরবর্তী কর্মসূচি নেওয়া হবে। তবে দলের এই ফলাফলের জন্য সাংগঠনিক স্তরে এখনই কোনও রদবদলের কথা ভাবছেন না দীপঙ্করবাবুরা। তিনি বলেন, “দক্ষতার প্রশ্নে, কাজ করার ধরনের প্রশ্নে প্রয়োজনে রদবদল হতেই পারে। তবে সেটা এখনই নয়।” বৈঠকে শেষে তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী আন্দোলনের শক্তি বাড়াতে সমস্ত বাম সংগঠনকে একত্র হওয়ার আবেদন জানান দীপঙ্করবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy