যত দিন যাচ্ছে শহরে বাড়ছে মোটরবাইকে চেপে টাকা কিংবা মহিলাদের হার চুরির ঘটনা। বাড়ছে প্রচণ্ড গতিতে নম্বরপ্লেটহীন মোটরবাইক চালিয়ে শহর দাপিয়ে বেড়ানোর প্রবণতাও। শহরের বুকে ক্রমাগত এই ধরনের ঘটনা বাড়তে থাকায় স্বভাবতই উদ্বিগ্ন শহরবাসী। শুক্রবার ভরদুপুরে নবদ্বীপে বড়াল ঘাট রোডে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের সামনে থেকে অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষকের আড়াই লক্ষ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন পৌনে ১২টা নাগাদ প্রবোধকুমার ঘোষ নামে ওই শিক্ষক নগদ আড়াই লক্ষ টাকা নিয়ে এক বেসরকারি ব্যাঙ্কে জমা দিতে যাচ্ছিলেন। তিনি ওই ব্যাঙ্কের সামনে তাঁর মোটরবাইকটি রেখে টুলবক্স থেকে একটি কাপড়ের ব্যাগে রাখা টাকা বের করে টুলবক্সটি বন্ধ করতে যাচ্ছিলেন।আচমকা পিছন থেকে দু’জন দুষ্কৃতী মোটরবাইকে এসে টাকা-সহ কাপড়ের ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে এলাকা থেকে চম্পট দেয়। ঘটনার আকস্মিকতায় হকচকিয়ে যান তিনি। পরে তাঁর চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। তাঁরাও ওই মোটরবাইকের পিছুু ধাওয়া করেন। কিন্তু সেটি বড়াল ঘাট, পোড়া ঘাট, শ্রীবাস অঙ্গন ঘাট হয়ে নজরের বাইরে চলে যায়। খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে আসে। শহর থেকে বাইরে যাওয়ার সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে তল্লাশি চালিয়েও পুলিশ কাউকে ধরতে পারেনি।
পূর্বস্থলীর জাহান্নগর হাই স্কুলের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত ওই শিক্ষক বলেন, “আমি বাড়ি থেকে নগদ দেড় লক্ষ টাকা নিয়ে বেরিয়েছিলাম। বউবাজারের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে আরও এক লক্ষ টাকা তুলি। টাকা নিয়ে ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কে জমা দিতে যাচ্ছিলাম।” তিনি জানান, ওই ব্যাগে টাকা, ব্যাঙ্কের পাশবই, এটিএম-সহ যাবতীয় নথিপত্র ছিল।
শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ওই ধরনের ঘটন ক্রমশ বাড়ছে। মাস খানেক আগে ওলাদেবী বাজারে একই ভাবে দুষ্কৃতীরা মোটরবাইকে এসে এক মহিলার কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা ছিনতাই করে চম্পট দিয়েছিল। ওই মহিলাও টাকা তুলে বাড়ি ফিরছিলেন। তারও কিছুদিন আগে চটির মাঠ অঞ্চলে এক মহিলার হার ছিনতাই করেছিল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, একটা কালো রঙের মোটরবাইকে দুষ্কৃতীরা এসেছিল। চালকের মুখ হেলমেটে ঢাকা ছিল। ঘটনার পর পুলিশ দুই ব্যাঙ্কের সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে। তাতে দেখা যায়, ওই কালো বাইকটিকে বউ বাজারের ওই রাষ্ট্রয়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনেও ছিল। পুলিশের অনুমান, প্রবোধবাবুকে অনেকক্ষণ ধরেই দুষ্কৃতীরা অনুসরণ করছিল। নবদ্বীপ থানার আইসি তপনকুমার মিত্র বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। ফের যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে তার জন্য ব্যাঙ্কের সামনে সাদা পোশাকের পুলিশের নজরদারির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
অন্য দিকে, শহরের ক্রমাগত বেড়ে চলা নম্বরপ্লেটহীন বাইকের দাপাদাপিতেও অতিষ্ঠ শহরবাসী। নবদ্বীপ নাগরিক কমিটির সম্পাদক তথা আইনজীবী দিলীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রশাসনের উদাসীনতায় ক্রমশ বাড়ছে বাইকের দৌরাত্ম্য। নম্বরপ্লেটহীন বাইক দ্রুত গতিতে চালানো একদল ছেলের ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের কাছে আবেদন তারা যেন এ বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy