Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কনেযাত্রীদের বাস উল্টে নয়ানজুলিতে

একে রাস্তায় প্রচুর বাঁক। তার উপরে ঘন কুয়াশা। ঠাহর করতে না পেরে একটি বাঁকের মুখে নয়ানজুলিতে উল্টে পড়ল কনেযাত্রী বোঝাই বাস। সোমবার ভোর ৩টে নাগাদ মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার আঙ্গারপুর সেতু সংলগ্ন এলাকায় কান্দি-সালার রাজ্য সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত্যু হয়েছে বাবু হাজরা (৩২) নামে এক কনেযাত্রীর। জখম হয়েছেন শিশু, মহিলা-সহ জনা চল্লিশেক যাত্রী। অধিকাংশেরই বাড়ি বর্ধমান জেলার শ্রীখণ্ড গ্রামে।

বাস উল্টে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

বাস উল্টে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০৬
Share: Save:

একে রাস্তায় প্রচুর বাঁক। তার উপরে ঘন কুয়াশা। ঠাহর করতে না পেরে একটি বাঁকের মুখে নয়ানজুলিতে উল্টে পড়ল কনেযাত্রী বোঝাই বাস। সোমবার ভোর ৩টে নাগাদ মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার আঙ্গারপুর সেতু সংলগ্ন এলাকায় কান্দি-সালার রাজ্য সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত্যু হয়েছে বাবু হাজরা (৩২) নামে এক কনেযাত্রীর। জখম হয়েছেন শিশু, মহিলা-সহ জনা চল্লিশেক যাত্রী। অধিকাংশেরই বাড়ি বর্ধমান জেলার শ্রীখণ্ড গ্রামে।

বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার শ্রীখণ্ড গ্রামের বাসিন্দা মধুমিতা হাজরার সঙ্গে গত শনিবার মুর্শিদাবাদ জেলার শক্তিপুর থানার দুপুকুর গ্রামের বাসিন্দা অভিজিৎ হাজরার বিয়ে হয়েছে। রবিবার রাতে শ্রীখণ্ড থেকে একটি বাস রিজার্ভ করে ৬৭ জনের কনেযাত্রীর দল দুপুকুর এলাকায় বৌভাতে যায়। সেখানে খাওয়া-দাওয়ার পরে রাত দেড়টা নাগাদ বাসটি ফের শ্রীখণ্ডের দিকে রওনা দেয়। কান্দি-সালার রাজ্য সড়কে প্রচুর বাঁক। তার উপরে কুয়াশা ছিল ভালই। ভরতপুর এলাকায় আঙ্গারপুর সেতু পেরিয়ে বাঁকের মুখে বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। বাঁকে না বেঁকে বাসটি সোজা সামনে নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়ে। দু’বার উল্টে ফের সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে প্রায় ১৫ ফুট দূরে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ জখমদের উদ্ধার করে কান্দি মহকুমা হাসপাতাল ও ভরতপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। শ্রীখণ্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের দীপক মজুমদার বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের রাতকে উপেক্ষা করে এলাকার বাসিন্দারা যাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বাসিন্দাদের ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না।”

পুলিশ জানিয়েছে, কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ২৫ জন যাত্রীর চিকিৎসা চলছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাসের চালক পলাতক। মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “কুয়াশার কারণে বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। বাসটির যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল কি না সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

বাসযাত্রীরাও দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে কুয়াশাকেই দায়ী করছেন। মহকুমা হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে জখম স্বপ্না চক্রবর্তী ও সন্তোষ হাজরা বলেন, “রাতে খাবার খেয়ে যখন বেরিয়ে এলাম তখন রাস্তায় কুয়াশা ছেয়ে ছিল। বাসের চালক ধীর গতিতেই চালাচ্ছিলেন। আমরা প্রায় সকলেই ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল কিছুই বুঝতে পারিনি।”

এ দিকে, মর্মান্তিক এই খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে কনের বাড়িতে। কনের বাবা সুশীল হাজরা বলেন, “বাবু আমাদের জামাই হয়। কী ভাবে সব কিছু সামলাব বুঝতে পারছি না। ওদের বাড়িতেই বা লোকজনদের কী সান্ত্বনা দেব।”

অন্য বিষয়গুলি:

road accident kandi bus accident babu hazra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE