Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

ইঁদুরে-কাণ্ডে পুড়ে ছাই থানার গুদাম

ধেড়ে ধেড়ে কুড়ি-বাইশটা ইঁদুর। তাদের কামড়ে বস্তা থেকে বেরিয়ে এসেছিল বোমার মশলা। ঝাড়ুদারের ঝাঁটায় সেই বোমার মশলা মিশে শনিবার সকালে আগুন ছড়াল বেলডাঙা থানার গুদামে। বাজেয়াপ্ত করা বোমার মশলা ছাড়াও মাদকদ্রব্য ও বহু মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে অগ্নিকাণ্ডে। বেলডাঙা থানার ওই গুদামঘরটি ৭০-৭৫ বছরের পুরনো। বছর পনেরো আগে থানার নতুন ভবন হলেও গুদামখানাটি সরানো হয়নি।

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৪ ০০:৪৯
Share: Save:

ধেড়ে ধেড়ে কুড়ি-বাইশটা ইঁদুর। তাদের কামড়ে বস্তা থেকে বেরিয়ে এসেছিল বোমার মশলা। ঝাড়ুদারের ঝাঁটায় সেই বোমার মশলা মিশে শনিবার সকালে আগুন ছড়াল বেলডাঙা থানার গুদামে। বাজেয়াপ্ত করা বোমার মশলা ছাড়াও মাদকদ্রব্য ও বহু মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথি পুড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে অগ্নিকাণ্ডে।

বেলডাঙা থানার ওই গুদামঘরটি ৭০-৭৫ বছরের পুরনো। বছর পনেরো আগে থানার নতুন ভবন হলেও গুদামখানাটি সরানো হয়নি। স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার গুদামে গাঁজা, ফেনসিডিল থেকে খুনের মামলায় ধৃত আসামীর রক্তমাখা লুঙ্গিগচ্ছিত ছিল হাজারো জিনিস। সকালবেলা ঝাড়ুদারের উপর-উপর ঝাঁটা পড়া ছাড়া ঘরে লোকজনের চলাফেলা ছিল না বিশেষ। সেই সুযোগে গোটা কুড়ি ইঁদুর দিব্য বাসা বানিয়ে ফেলেছিল গুদামে। থানার এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, “বাজেয়াপ্ত করা গাঁজা খেয়ে দিনদিন আরও হৃষ্টপুষ্ট হয়ে উঠছিল ইঁদুরগুলি। জোর বাড়ছিল দাঁতের।”

দাঁতের জোরে সিমেন্টের মেঝের কিছুই অবশিষ্ট ছিল না আর। চারদিকে বড় বড় গর্ত। মাটি উঠে মেঝে ধুলোময়। সেই ধুলোতেই মিশে ছিল বোমার মশলা। অন্য দিনের মতো শনিবার ঝাড়ুদার ঝাঁটা দিচ্ছিলেন যখন, আচমকা আগুনের স্ফূলিঙ্গ ছিটকে ওঠে। সঙ্গে পটকা ফাটার আওয়াজ। মিনিট খানেকের মধ্যে বোমার মশলা বোঝাই বস্তা থেকে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ঝাড়ুদার ভয় পেয়ে বেরিয়ে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় দমকলে। এক ঘণ্টা ধরে দমকলের দু’টি ইঞ্জিনের লড়াইয়ের পর আগুন যখন আয়ত্তে আসে, ততক্ষণে গুদামখানার অধিকাংশ জিনিসপত্রই ভস্মীভূত হয়েছে। রবিবার ওই গুদামঘরে গিয়ে দেখা গেল, কাঠের বরগা থেকে আলমারি পুড়ে কাঠ। ভিতরে বারুদের গন্ধে টেকা যায়। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, লোকসভা ভোটের সময়ে বেশ কিছু বোমার মশলা বাজেয়াপ্ত করে রাখা হয়েছিল গুদামে। এর মধ্যে সোডিয়াম নাইট্রেট ও সালফারের মতো দাহ্য রাসায়নিক পদার্থও ছিল। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ মনে করছে ওই দুই রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শেই আগুন ছড়িয়েছে। থানার ওসি অরূপ পায় বলেন, “গুদামে গাঁজা খেতে ইঁদুর আসত বলে আমাকে জানিয়েছিলেন কর্মীরা। মালখানায় প্রচুর দাহ্য পদার্থও ছিল। তবে কী থেকে কী হয়েছে তা তদন্ত করে দেখতে হবে।” এ দিন জেলা পুলিশের কিছু আধিকারিক গুদামে গিয়ে ঘটনাস্থল সরেজমিন খতিয়ে দেখেন। মুর্শিদাবাদ জেলার ডিএসপি (ডিএনটি) লালটু হালদার বলেন, “বেশ কিছু মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথি ও প্রামাণ্য রাখা ছিল গুদামে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা বানানো হচ্ছে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE