Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

খাটের তলায় মাদুরে দেহ

পাশের বাড়ির বৃদ্ধকে দাদু বলে ডাকতেন তিনি। দেখা হলেই হেসে খোঁজখবর নিতেন। বছর পঁয়ত্রিশের সেই রকি নামে যুবকের শোওয়ার ঘরের খাটের তলা থেকে সোমবার বিকেলে মাদুর জড়ানো অবস্থায় পাওয়া গেল দাদুর মৃতদেহ!

বাদল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

বাদল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:১০
Share: Save:

পাশের বাড়ির বৃদ্ধকে দাদু বলে ডাকতেন তিনি। দেখা হলেই হেসে খোঁজখবর নিতেন। বছর পঁয়ত্রিশের সেই রকি নামে যুবকের শোওয়ার ঘরের খাটের তলা থেকে সোমবার বিকেলে মাদুর জড়ানো অবস্থায় পাওয়া গেল দাদুর মৃতদেহ! ঘটনার পর থেকে রকি ও তাঁর স্ত্রী টিনা বিশ্বাস পলাতক।

রকির কাকা রবি বিশ্বাসকে এই ঘটনার গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃদ্ধ-খুনের ব্যাপারে তিনি ভাইপোকে সাহায্য করেছিলেন বলে নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের হয়েছে। রকির বাবা বাবু বিশ্বাসকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ছেলে এক প্রতিবেশীকে খুন করেছে জানিয়ে তিনিই প্রথম এক আত্মীয়কে ফোন করেন বলে খবর। এই খবর জানাজানি হওয়ার পরেই তাহেরপুরের খ্রিস্টানপাড়ার চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এলাকার লোক জানিয়েছে, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হিসাবে কাজ করতেন রকি। তাঁদের অভিযোগ, গত কয়েক বছর যাবৎ কাজ ছেড়ে মূলত লোক ঠকিয়ে রোজগার করতেন রকি। দুর্নাম ক্রমশ বাড়ছিল। অনেকেই তাঁকে এড়িয়ে চলতেন।

নিহত বৃদ্ধ বাদল মণ্ডলের (৭৫) মেয়ে মেরি মণ্ডল বলেন, “বাবার শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। পেটে অপারেশনও হয়েছিল। রোজ সন্ধ্যায় বাইরে ঘুরতে বেরোতেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ফিরে আসতেন। একই ভাবে রবিবারও বেরোন। কিন্তু সময় পার হয়ে গেলেও ফেরেননি। চিন্তায় পড়ে যাই। কোথাও না পেয়ে থানায় ডায়েরি করি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সোমবার আমার জামাইকে রকির বাবা বলেন, তাঁর ছেলে আমার বাবাকে খুন করেছে। খুনের পর দেহটা ঘরের মধ্যে খাটের নীচে রেখে দিয়েছে।” মেরির অভিযোগ, “আমার বাবার গলায় এক ভরি ওজনের একটি সোনার হার ছিল। লেটার উপরেই চোখ পড়েছিল রকির। সেটা নেওয়ার জন্যই বাবাকে নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে ও খুন করেছে।” পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের গলায় ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, শ্বাসরোধ করে তাঁকে মারা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার খুনের পরে রকির স্ত্রী টিনা প্রথম তাঁর শাশুড়িকে ঘটনার কথা জানান। তাঁদের তিন ছেলেমেয়ে। তার মধ্যে দু’জনকে নিয়ে এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই রকি ও টিনা উধাও হয়ে যান। পরের দিন তাঁর বাবা বাবু বিশ্বাস এক আত্মীয়কে ও তারপর প্রতিবেশীদের খুনের বিষয়ে জানান। পাড়ার লোক ও মেরি জানিয়েছেন, রকির বাবা বারবার তাঁর ভাই রবি বিশ্বাসের সঙ্গে আড়ালে গিয়ে পরামর্শ করে তবে সকলের সামনে কথা বলছিলেন। তাতেই রবির উপর তাঁদের সন্দেহ হয়। তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ভাইপোর সঙ্গে সম্পর্ক ভালই ছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করে।

অন্য বিষয়গুলি:

Ranaghat Murder Grandfather
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE