মৃত অনন্যা। নিজস্ব চিত্র
জেলা প্রশাসনের অফিসার্স ক্লাবের সুইমিং পুলে মিলল এক তরুণীর দেহ।
পুলিশ জানায়, তাঁর নাম অনন্যা দাস মণ্ডল (৩০)। বাড়ি নবদ্বীপে। তাঁর স্বামী সব্যসাচী মণ্ডল কলকাতায় কাজ করেন। অনন্যা কৃষ্ণনগরে জেলা প্রশাসনের অফিসার্স ক্লাবের সুইমিং পুলে সাঁতার শিখতেন। মঙ্গলবার রাতে তারই জলে তাঁর দেহ ভাসতে দেখা যায় বলে পুলিশ জানায়। তাঁর একটি তিন বছরের মেয়ে আছে।
অনন্যার বাপের বাড়ি কৃষ্ণনগরে সেগুনবাগান এলাকায়। বছর পাঁচেক আগে তাঁর বিয়ে হয়। কৃষ্ণনগর হেড পোস্ট অফিসে কর্মরত ছিলেন তিনি। অফিসের পাশেই সুইমিং পুল। অন্য দিনের মতো এ দিনও সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ অফিস থেকে বেরিয়েছিলেন। সন্ধায় সাঁতার শেখার সময়ে অন্য কিছু শিক্ষার্থী অনন্যাকে জলে ভাসতে দেখেন। সন্দেহ হওয়ায় কাছে গিয়ে তাঁরা দেখেন, তিনি সাড়া দিচ্ছেন না। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে তুলে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করা হয়।
অনন্যার পরিবারের কেউই মানতে পারছেন না, এই মৃত্যু স্বাভাবিক। তাঁদের বক্তব্য, অনন্যা সুইমিং কস্টিউম পড়ে ছিলেন। ফলে পোশাক জড়িয়ে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাঁর হৃদরোগও ছিল না বলে দাবি করছেন পরিজনেরা। তা ছাড়া পুলে প্রশিক্ষক ছিলেন, ছিলেন অন্য শিক্ষার্থীরাও। সকলের সামনে কী করে অনন্যা জলে ডুবে গেলেন, কেন তা কারও চোখে পড়ল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তা ছাড়া, সন্ধ্যা ৬টার পরে ডুবলে কী করে ৭টার মধ্যে মৃতদেহ ভেসে উঠতে পারে, সেই প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা।
পারিবারিক সূত্রে জানানো হয়েছে, সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ সুইমিং পুল কর্তৃপক্ষ ফোন করে জানান, অনন্যা জলে ডুবে গিয়েছেন। তাঁকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ব্যস, ওই পর্যন্তই। রাত পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে সুইমিং পুল কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি বলে অভিযোগ। বরং গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পুলিশ এবং প্রশাসন তৎপর।
সুইমিং পুল সূত্রের খবর, প্রশিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যাতে সংবাদমাধ্যমের কারও সঙ্গে কথা না বলেন, সেই নির্দেশ দেওয়া হয়। ক্লাবের সভাপতি জেলাশাসক পবন কাদিয়ান। তাঁকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। ক্লাবের সম্পাদক ১০০ দিন কাজের প্রকল্প আধিকারিক অর্ণব রায়। ফোন ধরেননি তিনিও। ফোন ধরেননি জেলার পুলিশ সুপার জাফর আজমল কিরয়াই।
প্রশ্ন উঠছে, অনন্যার মৃত্যু যদি জলে ডুবে হয়ে থাকে, তা হলে প্রশাসনের এত রাখঢাক কেন? নাকি পুরো বিষয়টির মধ্যে এমন কোনও ঘটনা লুকিয়ে আছে যা প্রকাশ পেলে মুখ পুড়তে পারে ক্লাব কর্তৃপক্ষের এবং প্রশাসনের। অনন্যার মা শান্ত দাস বলেন, ‘‘কী ভাবে ঘটনাটা ঘটল, সেটুকু পর্যন্ত আমাদের জানতে দেওয়া হচ্ছে না। কেন অন্ধকারে রাখা হচ্ছে, বুঝছি না। আমরা এর তদন্ত চাই।’’ ক্লাব কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের কর্তারা হাসপাতালে এসে মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা না করায় প্রশ্ন উঠছে তাঁদের দায়বদ্ধতা নিয়েও। যদিও কোনও প্রশ্নেরই সদুত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy