নিহতের বাড়ির সামনে পড়শিদের জটলা। নিজস্ব চিত্র
চৌবাচ্চায় জল ফেলাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের বিবাদে খুন হয়ে গেলেন এক প্রৌঢ়া। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম সুবেরা বিবি (৫৩)। তাঁকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে সুবেরার জা-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার ঘটনাটি ঘটে সুতি থানার মহেন্দ্রপুর কারবালা গ্রামে।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পারিবারিক একটি চৌবাচ্চায় কে জল রাখবে, সেই নিয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন সুবেরা এবং তাঁর জা রোশেনারা বিবি। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, প্রথম দু’জনে তর্কাতর্কি করছিলেন। তারপর হঠাৎই দু’জনের চুলোচুলি বেধে যায়। অভিযোগ, এই সময় সুবেরাকে মারধর করে রোশেনারা এবং তার মেয়ে রেখা বিবি-সহ পরিবারের কয়েক জন। ইট দিয়ে সুবেরার মাথায় মারা হলে তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে কোদালের বাঁট দিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ।
তাঁকে সংজ্ঞা হারাতে দেখে অভিযুক্তরা থামে। গুরুতর জখম অবস্থায় সুবেরাকে মহেসাইল গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। এরপর সোমবার রাতেই তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে। সেখানেই মঙ্গলবার গভীর রাতে তিনি মার যান। বুধবার সকালে কলকাতা থেকে দেহ এসে পৌঁছয় বাড়িতে।
সুবেরা বিবির মেয়ে মেরিনা খাতুন ঘটনার বিবরণ দিয়ে এদিন বলেন, ‘‘মা কাপড় কাচছিল। চৌবাচ্চার জল নোংরা হয়ে যাবে এই আশঙ্কা করে কাকিমা (রোশেনারা) মাকে ওখানে কাচতে বারণ করে। এ নিয়ে মাকে গালিগালাজও করছিল। মা বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেও বোঝাতে পারেনি। এরপর রেখা ছাদ থেকে ইট চৌবাচ্চায় ফেলতে আরম্ভ করে। মার গায়েও কয়েকটা ইট এসে পড়ে। সেই সময় একটা আধলা ইট মার মাথায় এসে লাগে। সঙ্গে সঙ্গে মা সংজ্ঞা হারায়। সেই সময় আমি ছাড়া বাড়িতে কেউ ছিল না। আমি মাকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর তোড়জোড় করছিলাম। তার মধ্যেই আমার খুড়তুতো দাদা এবং বোন কোদালের বাট দিয়ে মাকে মারতে আরম্ভ করে। আমাকেও মারধর করেছে ওরা।’’ মেরিনা জানান, তিনি চিৎকার করলে পাড়ার লোকজন ছুটে আসে। তাঁদের দেখে পালায় অভিযুক্তরা। এরপর পাড়ার লোকজনই সুবেরাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এদিকে, এদিন ভাইয়ের পরিবারের চার জনের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন সুবেরার স্বামী তাজামুল হক। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ রোশেনারা এবং তার মেয়ে রেখাকে গ্রেফতার করেছে। পলাতক আরও দুই অভিযুক্ত। সুতি থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক বলেন, ‘‘মৃতার স্বামী আমাদের কাছে কয়েক জনের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিরাও ধরা পড়বে।’’ ধৃতদের আজ, বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হবে বলে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy