Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সিরিঞ্জ, রক্তমাখা তুলো সরাবে কে?

এই হাসপাতালগুলিতে নিয়মিত মেডিক্যাল বর্জ্য বা ‘বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্ট’ সংগ্রহ করা হয় না বলেই অভিযোগ। সেই সব জিনিস যেখানে-সেখানে পড়ে থাকে।

 নিজস্ব চিত্র

 নিজস্ব চিত্র

সুস্মিত হালদার
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩২
Share: Save:

ব্যবহার করা ক্যাথেটার মুখে নিয়ে টানাটানি করছিল দু’টি কুকুর। পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রক্ত আর পুঁজ মাখা তুলো। তার পাশেই ক্যান্টিন। সেখানে রোগীর বাড়ির লোকেদের ভিড়। তাঁরা খাচ্ছেন।

এই ছবি শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের। শুধু সেখানেই নয়, নদিয়া জেলা সদর হাসপাতাল থেকে জেলার অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল বর্জ্যের একই অবস্থা বলে অভিযোগ। নিয়ম মেনে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে না। রোগ সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে। চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতাল, কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল, তেহট্টে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতাল, নতিডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থকেন্দ্র, তেহট্ট মহকুমা হাসপাতাল ও পলাশিপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালের হাল অবস্থা শোচনীয়।

এই হাসপাতালগুলিতে নিয়মিত মেডিক্যাল বর্জ্য বা ‘বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্ট’ সংগ্রহ করা হয় না বলেই অভিযোগ। সেই সব জিনিস যেখানে-সেখানে পড়ে থাকে। চিকিৎসকদের দাবি, এই সব পদার্থ পরিবেশের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। মাটি-বাতাসকে তা দূষিত করে। স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, গোটা রাজ্যে মেডিক্যাল বর্জ্য সংগ্রহ করে তা নির্দিষ্ট যন্ত্রে পুড়িয়ে ফেলার দায়িত্বে রয়েছে দু’টি মাত্র সংস্থা। হাসপাতাল থেকে ‘বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্ট’ সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়া হয় কল্যাণীর প্ল্যান্টে। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “দীর্ঘদিন ধরেই টানাপোড়েন চলছে। কোনও ভাবেই তাদের এই বর্জ্য সংগ্রহ করার কাজটা ওদের দিয়ে নিয়মিত করানো যাচ্ছে না। মাত্র দু’টি সংস্থা দায়িত্বে থাকায় একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ নিচ্ছে।”

কালো, হলুদ আর সাদা প্যাকেটের ভিতরে আলাদা-আলাদা করে রেখে দেওয়া হয় ‘বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্ট’। কোনওটিতে থাকে দেহাংশ, কোনওটিতে রক্ত-পুঁজ মাখা তুলো, কোনওটিতে আবার ব্লেড ও সুচের মতো ধারাল জিনিসপত্র। সেগুলি সংগ্রহ করে নষ্ট করার ওই সংস্থার। জেলা হাসপাতাল সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকারও বলেন, ‘‘বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্ট নিয়মিত সংগ্রহ করা হচ্ছে না।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলছেন, “ওই সংস্থার সঙ্গে আমরা একাধিক বার বৈঠক করেছি। সম্প্রতি কড়া বার্তাও দেওয়া হয়েছে। তার পর অবস্থার কিছু উন্নতি হয়েছে। তবে বেশ কিছু হাসপাতালে এখনও অনেকটাই সমস্যা রয়েছে। আমরা স্বাস্থ্য ভবনেও জানিয়েছি।”

যদিও এই অভিযোগ মানতে রাজি নন দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কর্তারা। সংস্থার মার্কেটিং ম্যানেজার রাজদীপ সরকার বলছেন, “কিছু দিন কর্মীর অভাবে ‘বায়ো মেডিক্যাল ওয়েস্ট’ সংগ্রহে একটু দেরি হচ্ছিল। এখন কিন্তু আমরা নিয়মিত সংগ্রহ করছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Cotton Syringe Medical Waste
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE