—ফাইল চিত্র।
অনেক দুঃসংবাদের বাজারে এ বারের কেন্দ্রীয় বাজেটে নদিয়ার জন্য সুখবর বলতে ‘ন্যাশনাল টেকনিক্যাল টেক্সটাইল মিশন’-এর ঘোষণা। মূলত চাষ ও ছোট ব্যবসা নির্ভর নদিয়ায় শিল্প বলতে মূলত যন্ত্র ও হস্তচালিত তাঁত। ফলে, শনিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দেশীয় বয়নক্ষেত্রে আমদানি কমাতে চার বছরে ১,৪৮০ কোটি টাকা ব্যয়বরাদ্দের কথা ঘোষণা করায় কিছু স্বস্তি পেয়েছে জেলার তাঁতমালিক মহল। তবে নামী তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ী তথা তাঁতশিল্পী বীরেনকুমার বসাক বা শান্তিপুর তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তারক দাসেরা বলছেন, ‘‘আমদানি কমিয়ে দেশীয় পণ্য ব্যবহারে জোর দেওয়া হলে ভাল। তবে সামগ্রিক ভাবে কী কী করা হবে, তা দেখতে হবে।’’
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা ও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বরাদ্দ বাড়া গ্রামের মানুষকে স্বস্তি দিলেও ১০০ দিনের কাজের তহবিলে বরাদ্দ কমায় অনেকেই ধাক্কা খেয়েছেন। এই জেলা দীর্ঘদিন ধরে ১০০ দিন কাজের প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে অগ্রণী। সেই জায়গায় ৯৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ কমায় জেলার গরিব মানুষের হাতে কাজ কমতে বাধ্য। এমনিতেই গত ডিসেম্বরে খাদ্যদ্রব্যের দাম ১৪ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে কাজের সুযোগ কমা দুঃস্থ পরিবারগুলিকে বৃহত্তর বিপদের মুখে ঠেলে দিতে পারে বলে বিরোধীদের আশঙ্কা।
এক সময়ে ১০০ দিনের কাজ মানেই ছিল মাটি কাটা। পরে স্থায়ী সম্পদ তৈরির ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়। শৌচাগার তৈরি, নদী ভাঙন রোধ, বাগান তৈরি, এমনকি গরিব মানুষের ঘর তৈরি কাজেও ওই প্রকল্পে টাকা দেওয়া হয়। প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত জেলা ও ব্লকস্তরের একাধিক অফিসার জানাচ্ছেন, গ্রামের ছোট-ছোট রাস্তা তৈরির টাকাও খানিকটা বরাদ্দ করা হয় এই প্রকল্প থেকে। আচমকা এই খাতে বরাদ্দ কমানোয় কিছুটা হলেও গ্রামীণ অর্থনীতিতে আঘাত লাগবে। পঞ্চায়েতের কর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, ১০০ দিনের কাজের দুটো উদ্দেশ্য— এক, গরিব মানুষকে ন্যায্য মজুরিতে বছরে অন্তত ১০০ দিন কাজ দেওয়া। দুই, রাজ্য ছেড়ে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কমানো। এই প্রকল্পে বরাদ্দ কমা মানে গোড়ায় ধাক্কা লাগার আশঙ্কা।
জেলার বিস্তীর্ণ চাষ-নির্ভর অংশে ধাক্কা লাগতে পারে সারে ভর্তুকি ১১ শতাংশ কমায়। কেননা ভর্তুকিতে মেলা ইউরিয়াই চাষিদের একটা বড় অংশের অবলম্বন। হরিণঘাটার চাষি আইজুল মণ্ডলের আক্ষেপ, ‘‘এমনিতে বিদ্যুতের মাসুল বাড়ছে। শস্য নষ্ট হলেও বিমার টাকা পেতে মাথা খারাপ হয়ে যায়। সেচের জন্য করা যোজনার সুবিধা মেলে না। এই অবস্থায় সারের উপর ভর্তুকি কমানো বড় অন্যায়।’’
সিপিএম প্রভাবিত কৃষক সভার জেলা সম্পাদক মেঘলাল শেখের দাবি, ‘‘এই সরকার তো কৃষিনীতিই তৈরি করতে পারল না। দিন-দিন যে ভাবে সারের ভর্তুকি কমানো হচ্ছে তাতে চাষির আত্মহত্যার ঘটনা আরও বাড়বে।’’ বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য মানবেন্দ্র রায় অবশ্য বলছেন, ‘‘গ্রামীণ রাস্তা তৈরি, গরিবের আবাস তৈরিতে যে জোর দেওয়া হয়েছে, ভাবা যায় না। বামপন্থীরা নিছক রাজনীতির কারণে অনেক কথা বলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy