Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
দ্বিতীয় দিনেও অচলাবস্থা

বাস নামাতে ব্যর্থ নেতারা

দু’টি বাসের রেষারেষির জেরে গত মঙ্গলবার তেহট্টে নয়ানজুলিতে বাস উল্টে ৯ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ৮৩ জন। ধৃত চালককে বৃহস্পতিবার তেহট্ট আদালতে তোলা হলে তাঁকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।

প্রাণ-হাতে: বন্ধ বাস। অগত্যা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত এ ভাবেই। শনিবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

প্রাণ-হাতে: বন্ধ বাস। অগত্যা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত এ ভাবেই। শনিবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৭ ০২:২০
Share: Save:

জনতাকে হয়রান করে দ্বিতীয় দিনেও নদিয়া জেলা জুড়ে বাস বন্ধ রাখলেন চালকেরা। তাঁদের এক গোঁ, তেহট্টে দুর্ঘটনার পরে ধৃত চালক ইন্দ্রজিৎ সর্দার জামিন না পাওয়া পর্যন্ত বাসের চাকাও ঘুরবে না।

নদিয়ার বাস শ্রমিকদের মধ্যে তৃণমূলের সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র প্রভাবই বেশি। কিন্তু শনিবার সারা দিন চেষ্টা করেও শাসকদলের নেতারা চালকদের কাজে নামাতে পারেননি। আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিকের (আরটিও) তরফেও দফায় দফায় বৈঠক করা হয়। অনুরোধ বা হুমকি কোনও কিছুই কাজে দেয়নি।

বরং বাস শ্রমিকদের আন্দোলনের নেপথ্যে আইএনটিটিইউসি-র সঙ্গে সিপিএম প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন সিটু-র পাঞ্জা কষা শুরু হয়েছে। তারা গোড়া থেকেই চালকদের সমর্থন করে আসছেন। এবং দ্বিতীয় দিনে একটা জিনিস পরিষ্কার, খাতায়-কলমে যাক যা-ই জোর থাক, ঘটনার রাশ শাসক দলের নেতাদের হাতে নেই।

দু’টি বাসের রেষারেষির জেরে গত মঙ্গলবার তেহট্টে নয়ানজুলিতে বাস উল্টে ৯ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন ৮৩ জন। ধৃত চালককে বৃহস্পতিবার তেহট্ট আদালতে তোলা হলে তাঁকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার থেকে সমস্ত রুটের কর্মীরা বাস বন্ধ করে দিয়েছেন।

বাস না চলায় এ দিন কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুর পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার যাতায়াত করছে অটো আর ম্যাজিক গাড়ি। যেখানে বাসে ভাড়া লাগে ৫০ টাকা, সেখানে অটো ভাড়া দেড়শো টাকা, ম্যাজিক গাড়ির ভাড়া একশো টাকা করে। তাও যেতে হয়েছে বাদুড়ঝোলা হয়ে। রানাঘাটের তাপস শীল স্ত্রী আর তিন বছরের শিশুকে নিয়ে তেহট্টে যাবেন বলে বেরিয়েও যেতে পারেননি। রাস্তার পাশে অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে টোটো ধরে ফিরে যান কৃষ্ণনগর স্টেশনে।

তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তথা আরটিও বোর্ডের সদস্য গৌরীশঙ্কর দত্ত এ দিন সকাল থেকে চেষ্টা করেন বাস চালু করতে। পরে ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, “আন্দোলনের নামে গুন্ডামি হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে শুধু প্রশাসনিক ভাবে নয়, দলগত ভাবেও আমরা পথে নামব।” আইএনটিটিইউসি-র জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিঠু শেখ বলেন, “রবিবারও যদি পরিস্থিতির পরিবর্তন না হয়, তা হলে আমাদের সংগঠণের সমর্থকদের দিয়ে বাস চালাব।”

তবে তা যে খুব সহজ হবে না, পাটিকাপাড়ি রুট শাখার সম্পাদক দিলীপ ঘোষের কথায় তা পরিষ্কার। তিনি বলেন, “আমরা কি খুনি যে দুর্ঘটনার কারণে পুলিশ হেফাজতে নিতে হবে? যে কোনও মূল্যে আমরা সহকর্মীর পাশে থাকব।” সিটু অনুমোদিত নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট মোটর এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক সমরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা শ্রমিকদের পাশেই আছি। জোর করে বাস চালাতে গেলে যদি শ্রমিকদের মধ্যে অশান্তি হয়, তার দায়িত্ব কিন্তু তৃণমূলকেই নিতে হবে।”

জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক সৌমিত্র বিশ্বাস বলেন, “চেষ্টা করছি, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Bus Political Leaders বাস
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy