আগ্নেয়াস্ত্র দলেরই কর্মীর বাড়ির সামনে নদিয়ার ভীমপুরের তৃণমূল কর্মী! ছবি: সংগৃহীত।
টাকা চেয়ে দলের এক কর্মীকে হুমকি দিয়েছিলেন শাসকদলের আর এক কর্মী। প্রথমে ধমক, তাতেও কাজ না হওয়ায় আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে শাসানির অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। তোলার দাবিতে দলীয় কর্মীর বাড়ির সামনে অস্ত্র হাতে দাপাদাপি করলেন আর এক কর্মী। এখন অবশ্য ভয় পেয়ে বাড়ি ছেড়েছেন অভিযোগকারী। তাঁর দাবি, পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। যদিও ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোটা ঘটনাকেই দুই কর্মীর ‘ব্যক্তিগত সমস্যা’ বলে জানিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। বিষয়টি নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
এক ব্যক্তি প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, হুমকি দিচ্ছেন অন্য এক জনকে, এমনই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, যে ব্যক্তির হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গিয়েছে, তাঁর নাম হিরণ বিশ্বাস। নদিয়ার ভীমপুর থানা এলাকার বাসিন্দা হিরণ তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। তিনি আর এক তৃণমূল কর্মীকে হুমকি দেন বলে অভিযোগ। ওই তৃণমূল কর্মীর দাবি, তোলাবাজি এবং জুলুমে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি হিরণের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। তাই তিনি প্রাণের ভয়ে এখন বাড়ি ছেড়ে অন্য এক জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই তৃণমূল কর্মীর এ-ও দাবি, হিরণ স্থানীয় তৃণমূল অঞ্চল সভাপতির ঘনিষ্ঠ বলেই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ।
রিভলভার হাতে হিরণের ছবি ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ওই যুবক বলেন, ‘‘আমি কাউকে কোনও হুমকি দিইনি। আমার হাতে কোনও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না। পরিকল্পনা করে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ কিন্তু অভিযোগকারী তৃণমূল কর্মীর দাবি, কয়েক দিন আগেই তাঁকে মোটা টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘আমি টাকা দেব না বলায় ভয় দেখানো হয়। আমার বাড়ির সামনে রাস্তায় রিভলভার হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। পুলিশে অভিযোগ জানানোর পর ফল উল্টো হয়েছে। আমাকে আরও বেশি করে শাসাচ্ছে হিরণ ও তার দলবল। পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগ তুলে না নিলে আমাকে খুনও করবে বলেও জানিয়েছে।’’
বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। স্থানীয় নেতৃত্ব একে ‘ব্যক্তিগত সমস্যা’ বলে পাশ কাটিয়েছেন। কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমান বলেন, ‘‘যেটুকু খবর পেয়েছি, ওটা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ আর স্থানীয় বিজেপি নেতা অমীয় নস্করের কটাক্ষ, ‘‘আগে তৃণমূলের হাতে বিরোধী দলের লোকজনকে আক্রান্ত হতে হত। এখন তো দেখছি, তৃণমূলই তৃণমূলের হাতে নিরাপদ নয়! আর প্রশাসন তো দলদাসের আচরণ করছে বহু দিন। এ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা বলে কিছুই নেই।’’ কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জয়মিত কুমার মাকওয়ান বলেন, ‘‘অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy