প্রতীকী চিত্র
আমপানে ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়ে বেশ জট পাকিয়েছে নাকাশিপাড়ায়। অভিযোগ এতই গুরুতর যে, তড়িঘড়ি মাঠে নামতে হয়েছে প্রশাসনের কর্তাদের। ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর তার পরেই টাকা ফেরাচ্ছেন একের পর এক রাজনৈতিক নেতারা। মঙ্গলবার টাকা ফিরিয়েছেন তিন বিজেপি নেতা। সেই তালিকায় নাম জুড়ল এক তৃণমূল নেতারও।
এ দিকে, ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়া নিয়ে অভিযোগের তালিকাও বেশ লম্বা। মূলত স্বজনপোষণের অভিযোগই বেশি।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, বুধবার বিকালে নাকাশিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের জাহাঙ্গীর সরকার তাঁর স্ত্রীর নামে আমপান ঝড়ে যে ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন সেই টাকা ফেরত দিয়েছেন। অভিযোগ, জাহাঙ্গীর সরকার তাঁর স্ত্রী সকিনা বিবির নামে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে আমপানের বসতবাড়ি ভেঙে পড়ার ক্ষতিপূরণ পান। সরকারি তদন্তের পর ওই ব্যক্তি নিজে থেকে টাকা ফেরত দিতে রাজি হন। পরে বুধবার বিকালে ওই টাকা ব্লক প্রশাসনের কাছে ফেরত দেন।
বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গীর সরকারকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি প্রথম বুঝতে পারিনি। বিশদে জানার পর অনুশোচনা হয়। তার পরেই টাকা ফেরত দিই।’’
নাকাশিপাড়ার বিডিও কল্লোল বিশ্বাস বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। এই নিয়ে চার জন টাকা ফেরত দিয়েছেন।’’
ক্ষতিপূরণের টাকা অবৈধ ভাবে টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে নাকাশিপাড়া ব্লকে নালিশ ঠুকেছিলেন বেথুয়াডহরি ১ পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা পুলক সিংহ। যাঁদের নামে নালিশ করেছিলেন, তাঁদের এক জন নাকাশিপাড়ার পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা বিজেপির সুভাষ ঘোষ। তাঁর স্ত্রী ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছিলেন। সে টাকা ব্লকে ফিরিয়ে দিয়েছেন সুভাষ।
অন্য অভিযুক্ত হলেন বীণাপানি মণ্ডল। তাঁর মেয়ে দিপালী মণ্ডল বিজেপির টিকিটে নাকাশিপাড়ার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হয়েছেন।
দিপালী বলেন, ‘‘মাকে দেখার কেউ নেই। অসুস্থ মানুষ। পুরানো বাড়িতে বসবাস করছে। ছাদ দিয়ে জলও পরে। মায়ের সহয্যটা পাওয়া দরকার বলে আমার মনে হয়েছে, তাই পাইয়ে দিয়েছি। আমি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হয়েছি বলে আমার মা সাহায্য পাবেন না এটা তো হতে পারে না।’’
অভিযোগের তালিকায় নাম রয়েছে সুশান্ত সরকারের। তিনি বিজেপির কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত। তিনি বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে একটা চালাঘর ছিল। ঝড়ে তার ক্ষতি হয়েছিল। তাই আবেদন করে ছিলাম। ওঁনারা মতো তদন্ত করেছেন, তার পরেই তো টাকা দিয়েছেন।’’
অভিযোগকারী পুলক সিংহ বলেন, ‘‘এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত হোক। যাঁরা ভুল তথ্য দিয়ে টাকা পেয়েছেন তাঁদের টাকা ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।’’
ক্ষতিপূরণে স্বজনপোষণের অভিযোগ এনেছেন জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেত্রী বিজেপির দেবস্মিতা চক্রবর্তীও। তাঁর দাবি, নাকাশিপাড়া ব্লকে প্রথম দফায় যে ২০৮ জনকে যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে ও পরবর্তীতে ১১২ জনের যে তালিকা পাঠানো হয়েছে তাতে স্বজনপোষণ হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করতে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
ক্ষতিপূরণে দুর্নীতি হয়েছে বলে দাবি সিপিআইএম লিবারেশনের সদস্য শিশির বসাকের। বিডিওর কাছে তিনি অভিযোগ করেন।
এই বিষয়ে নাকাশিপাড়ার বিডিও কল্লোল বিশ্বাস বলেন, ‘‘যত অভিযোগ জমা পড়েছে, তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy