Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
শান্তিপুর থানা নিল ডায়েরি
TMC

বিধায়কের ইন্ধনেই খুনের হুমকি: মনোজ

একদা শান্তিপুর কলেজের স্টাফরুমে এক শিক্ষকের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে সংবাদ শিরোনামে এসেছিলেন টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক এই মনোজ।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

সুস্মিত হালদার
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৫২
Share: Save:

এক কালে বিধায়কের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই শান্তিপুরে দাপিয়ে বেড়াতেন তিনি। সেই তৃণমূল বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যই লোক পাঠিয়ে তাঁকে খুনের হুমকি দিচ্ছেন বলে দাবি দলের একদা ছাত্রনেতা মনোজ সরকারের। শুধু মুখে নয়, মঙ্গলবার রাতে তিনি শান্তিপুর থানায় অরিন্দমের বিরুদ্ধে ‘প্ররোচনা ও উসকানি’ দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিশ জানায়, কয়েক জনের নাম দেওয়া হলেও স্থান-কাল উল্লেখ করে কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয়নি। তাই তা ‘সাধারণ ডায়েরি’ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু আসন্ন পুরসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের আগে শান্তিপুরে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের পাঁক আবার ঘুলিয়ে উঠতে শুরু করেছে।

একদা শান্তিপুর কলেজের স্টাফরুমে এক শিক্ষকের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে সংবাদ শিরোনামে এসেছিলেন টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক এই মনোজ। গত পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে বিজেপির এক জনকে খুন এবং এক জনকে ধর্ষণের ঘটনায় জেলেও ঘুরে এসেছেন তিনি। কিন্তু মনোজ নিজেই এখন কিছুটা সন্ত্রস্ত। দিন কয়েক আগে তাঁর আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠ গোবিন্দ দাস গুলিতে খুন হন। ওই খুনে বিধায়ক ঘনিষ্ঠ কয়েক জনের নাম এসেছে, পুলিশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করেছে। বুধবার মনোজ দাবি করেন, “আমি এর প্রতিবাদ করাতেই ষড়যন্ত্র করে আমায় খুনের হুমকি দেওয়াচ্ছেন বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য।” তাঁর অভিযোগ, বিধায়কের প্ররোচনায় তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েক জন দলবদ্ধ ভাবে তাঁর বাড়ির আশপাশে ঘোরাঘুরি করছে, খুনের হুমকি দিচ্ছে।” এদের নামও তিনি পুলিশকে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন।

শান্তিপুরে একেবারে গোড়ার দিক থেকে যাঁরা তৃণমূল করে আসছেন, মনোজ তাঁদের অন্যতম। প্রথম দিকে তিনি শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে-র ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কিন্তু ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে অজয়বাবু পরাজিত হওয়ার পরে তাঁর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় মনোজের। সে বার কংগ্রেসের টিকিটে জিতে বিধায়ক হওয়া অরিন্দম তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর মনোজ তাঁর ছেলেদের নিয়ে বিধায়কের ঘনিষ্ঠ অনুচর হয়ে ওঠেন। পঞ্চায়েত ভোটে বিধায়কের হয়ে তিনি গোটা শান্তিপুর ব্লক দাপিয়ে বেড়ান। ভোটের দিন মনোজের ভাই মণি সরকারের সঙ্গে থাকার সময়ে অরিন্দম ঘনিষ্ঠ এক যুবক গণপ্রহারে মারা যান। মনোজ পরে দাবি করেন, বিধায়ক আসলে তাঁর ভাইকেই খুনের ষড়যন্ত্র করেছিলেন। বিজেপির এক জনকে ধর্ষণ ও এক জনকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ার পরেও তিনি দাবি করেন, অরিন্দমই তাঁকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়েছেন।

সে বার ৮৪ দিন জেল খাটার পর জামিনে মুক্তি পান মনোজ। কিন্তু শান্তিপুর ঢোকার অনুমতি পাননি। ২০১৯ সালের অগস্টে আদালতের অনুমতি নিয়ে তিনি শান্তিপুরে ঢোকেন এবং বিধায়কের সঙ্গে তাঁর সংঘাত বাধে। মনোজ-অনুগামীদের দাবি, তাঁর বাবা, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর মাধব সরকার অসুস্থ। তাঁর বদলে মনোজ প্রার্থী হতে চাইছেন। জিতে গেলে পুরপ্রধান হওয়ার মরিয়া চেষ্টাও চালাবেন তিনি। এত দূর ‘বাড়াবাড়ি’ যাতে না হয়, তার জন্যই অরিন্দম তাঁকে দমাতে চাইছেন। একাধিক বার ফোন করেও বিধয়ককে পাওয়া যায়নি, মেসেজেরও উত্তর দেননি তিনি। তবে দলের অন্দরে অরিন্দমের প্রধান বিরোধী বলে পরিচিত শান্তিপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান অজয় দে বলেন, “শহরের মানুষ আর খুনোখুনি দেখতে চাইছেন না। তাঁরা শান্তি ফিরে পেতে চান। পুলিশের উচিত অভিযোগ সত্যি না মিথ্যে তা খতিয়ে দেখে সেই মতো পদক্ষেপ করা।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy