Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Thief

চুরির চেষ্টা করে আট বার ব্যর্থ, ধরা পড়ে নতুন জামা, ফল-মিষ্টি আর সান্ত্বনা নিয়ে ট্রেনে বাড়ি ফিরল চোর!

নৈহাটি থেকে শান্তিপুরে এসেছিলেন প্রবীর রায় নামে এক যুবক। চুরি ছিল উদ্দেশ্য। ধরা পড়ার পর নিজেই সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। দু’-একটা থাপ্পড় খাওয়ার পর চুরির কথা গড়গড় করে বলে দেন তিনি।

thief

চুরি করতে এসে পেলেন নতুন জামা উপহার। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৪ ১৯:০৭
Share: Save:

এই বছরেই মোট আট বার চুরির চেষ্টা করেছিলেন। প্রতি বারই ব্যর্থ। ‘চুরিতে ভাগ্যান্বেষণে’ ট্রেনে চেপে পাড়ি দিয়েছিলেন ৪০ কিলোমিটার দূরত্ব। কিন্তু, ব্যর্থতা পিছু ছাড়ল না এ বারও। চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লেন হাতেনাতে। বাঁধা হল বৈদ্যুতিক খুঁটিতে। সবাই মিলে মারধর করতে তেড়ে আসতেই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন চোর। সবাই একটু থমকে গেলেন। তার পর চোরের জীবনের দুঃখের কাহিনি শুনে মন গলে গেল সবার। চোরকে ঘরে বসিয়ে খাওয়ানো হল রাতের খাবার। রুটি-সব্জি-মিষ্টি খাইয়ে নতুন জামা উপহার দিয়ে তাঁকে তুলে দেওয়া হল ট্রেনে। নদিয়ার শান্তিপুরের ঘটনা। চোর ধরা পড়ার পর এমন আতিথেয়তা কোথায় পেয়েছেন, তা কেউ চট করে মনে করতে পারবেন না।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি থেকে শান্তিপুরে এসেছিলেন প্রবীর রায় নামে এক যুবক। চুরি ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। ধরা পড়ার নিজেই সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। দু’-একটা থাপ্পড় খাওয়ার পর চুরি করার কথা গড়গড় করে বলে দেন প্রবীর। তার পরে জানান, বাতিল হওয়া বা ভাঙা প্লাস্টিক-লোহার জিনিসপত্র বিক্রি করে সংসার চালাতেন। কিন্তু হেরোইনের নেশার খরচ জোগাড় করতে গিয়ে চুরিতে হাত পাকাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু নিজের এলাকায় যত বারই চুরি করতে গিয়েছেন, তত বারই ধরা পড়েছেন। জুটেছে মার। শেষ বার ২০ কেজি লোহা বাগিয়ে নিতে গিয়ে ধরা পড়েন। সে বারও জুটেছে মার। তাই স্থির করেছিলেন, এ বার আর এলাকায় নয়, অনেক দূরে গিয়ে চুরি করবেন। তাই ট্রেন ধরে চলে এসেছিলেন শান্তিপুর স্টেশনে। রেললাইন ধরে কিছুটা এগোনোর পর স্টেডিয়ামের পাশ থেকে সোজা একটা রাস্তা ধরে এগিয়ে থমকে গিয়েছিলেন। পর পর কয়েকটি বাড়িতে ঢুকেও পড়েন। কোথায় কী! টাকাপয়সা ভেবে অন্ধকারের মধ্যে চুরি করেছিলেন এক জনের আধার কার্ড এবং কিছু কাগজপত্র! যাই হোক, চুরির পর গৃহস্থের বাড়ির দরজায় মলত্যাগ করেছিলেন। প্রবীর জানান, শুনেছিলেন এই কাজ করলে নাকি চুরি করে ধরা পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। কিন্তু এ বারও হল না।

লোকজন প্রবীরকে হাতেনাতে ধরেও ছেড়ে দিয়েছেন। কয়েক জন আবার কয়েক দফায় চোরকে চা-বিস্কুট আর বিড়ি খাইয়েছেন। কেউ এনে দিয়েছেন রুটি-সব্জি। সঙ্গে নতুন একটি জামা। সে সব করে ভোরে টিকিট কেটে ট্রেনে তুলে দেওয়া হয় চোরকে। বলা হয়েছে, হেরোইনের নেশা এবং চুরিকে পেশা করা, দুটোই খারাপ। আর যেন এ কাজ না করেন প্রবীর। চোরও মাথা নেড়ে ট্রেনে উঠে গিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Thief Nadia Shantipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy