পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং ব্রাত্য বসু।
নদিয়ার সদরেই তৃণমূলের গৃহযুদ্ধ সবচেয়ে বেশি। তাই এক কৃষ্ণনগরেই বহিষ্কৃত নেতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে বাকি ন’টি পুরসভার সমান। এঁরা সকলেই দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল বা কংগ্রেসের প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তৃণমূল এঁদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে দলের অভ্যন্তরে নতুন করে বিতর্কের চোরাস্রোত বইতে শুরু করেছে।
পুরভোট ঘোষণার অনেক আগে থেকেই কার্যত সম্মুখসমরে নেমেছিল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। একদিকে দলের উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জয়ন্ত সাহা ও কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস, অন্য দিকে শহর সভাপতি শিশির কর্মকার ও প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহার গোষ্ঠী। তাঁরা প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা প্রচার করতে থাকেন। পরস্পরের বিরুদ্ধে মারাত্মক সব দুর্নীতির অভিযোগও তুলতে থাকেন।
দুই পক্ষই নিজেদের মতো করে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে প্রার্থী তালিকা পাঠিয়েছিল। একরাশ বিভ্রান্তির পরে যে চূড়ান্ত প্রার্থিতালিকা দেওয়া হয় তাতে দু’টি বাদে সব নামই শিশির কর্মকারদের তালিকার, কিন্তু অসীম সাহা বাদ। পরে অসীমকেও টিকিট দেয় দল। কিন্তু বেশ কয়েক জন দীর্ঘ দিনের কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড কনভেনর ছাঁটাই হন। তাঁরা নির্দল বা কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে লড়তে নেমেছেন। এঁদের সকলকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
প্রথম থেকেই শিশির-শিবিরের তরফে দাবি করা হচ্ছিল যে জয়ন্ত সাহার ঘনিষ্ঠ বা অনুগামীরাই মূলত নির্দল বা কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন। মনোনয়ন পর্বের পরেই কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ফলে বৃহস্পতিবার যাঁদের বহিষ্কার করা হল তাঁদের মধ্যে দু’এক জন বাদে প্রায় সকলেই জয়ন্ত সাহা বা উজ্জ্বল বিশ্বাসের গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত।
প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর স্বপন সাহা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। সেই দলের প্রার্থী হয়েছেন তাঁর স্ত্রী শান্তশ্রী সাহা। বহিষ্কার প্রসঙ্গে স্বপনের বক্তব্য, “২০১৮ সালে পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেই তো দল আমার জায়গায় আর এক জনকে ওয়ার্ডের দায়িত্ব দিয়েছিল। সে সময়ে যারা পুরসভার দায়িত্বে ছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাতেই তা করা হয়েছিল। আমি তো তৃণমূল ছেড়েই কংগ্রেসে যোগ দিয়েছি। আমাকে আবার বহিষ্কার করার কি আছে?” আবার নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়ানো প্রাক্তন কাউন্সিলর দিলীপ দাস বলছেন, “আগেও আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন, এখনও আছেন। দল বহিষ্কার করুক বা না করুক, তিনিই আমার নেত্রী থাকবেন।”
তৃণমূলের কৃষ্ণনগর শহর সভাপতি শিশির কর্মকারের দাবি, “তা হলে দেখা যাচ্ছে, আমাদের অবস্থানই ঠিক ছিল। জেলা সভাপতি বা মন্ত্রী যাঁদের প্রার্থী করতে চেয়েছিলেন তাঁরা প্রায় সকলেই বিশ্বাসঘাতকতা করে দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন।” তাঁর সংযোজন, “আবার প্রমাণ হয়ে গেল যে দলের বিরুদ্ধে যিনিই যাবেন, দল তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে, সে তিনি যে-ই হোন না কেন।”
তবে এই বিতর্কে ঢুকতে চাননি জয়ন্ত। তিনি শুধু বলেন, “এটা দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত। ফলে এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। শুধু বলব, দলের ঊর্ধ্বে কেউ নন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy