Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Nadia Weather Update

তাপমাত্রা দশের নীচে, শীতের হুল

নদিয়ার মুখ্য কৃষি আবহাওয়াবিদ মৃণাল বিশ্বাস জানালেন, শুক্রবার কৃষ্ণনগরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ ২২.৮ ডিগ্রি।

দারুন শীতে আগুন পোহাচ্ছে পুরসভার সাফাই কর্মীরা। নদিয়ার কৃষ্ণনগরে।

দারুন শীতে আগুন পোহাচ্ছে পুরসভার সাফাই কর্মীরা। নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। ছবি : সুদীপ ভট্টাচার্য।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 
নদিয়া শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩১
Share: Save:

সকালে সমাজমাধ্যমে ফিরেছে পুরনো ‘মিম’। ছাদে উঠলেই নাকি গরিবের দার্জিলিং। চারপাশে কুয়াশা ঘেরা স্যাঁতস্যাঁতে দিন। সারাক্ষণ হু-হু বইছে উত্তুরে হাওয়া। কুয়াশা ভেজা সুনসান রাস্তা। বেলা সাড়ে ১০টায় সূর্যের চিহ্নমাত্র নেই। সব মিলিয়ে নবদ্বীপ থেকে নাকাশিপাড়া, করিমপুর থেকে কৃষ্ণনগর— নদিয়ার যে কোনও প্রান্তেই এখন ‘ফিলিং’ দার্জিলিং!

যদিও এই মরসুমে এমন শীতের কামড় এই প্রথম। নতুন বছরের শুরুতেও লুকোচুরি খেলা শীত এ বার সত্যি করেই জাঁকিয়ে বসেছে। তারই ফল, শুক্রবার জেলার তাপমাত্রা নামল ১০ ডিগ্রির নীচে। যদিও হাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, গত বছর এমন দিনে নদিয়ার ঠান্ডা ছিল ঢের বেশি।

নদিয়ার মুখ্য কৃষি আবহাওয়াবিদ মৃণাল বিশ্বাস জানালেন, শুক্রবার কৃষ্ণনগরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ ২২.৮ ডিগ্রি। তিনি বলেন, “ শুক্রবার এখনও পর্যন্ত জেলার শীতলতম দিন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও গত বছর এমন দিনে তাপমাত্রা আরও কম ছিল। ২০২২ সালে ১২ জানুয়ারি কৃষ্ণনগরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২৫.২ ডিগ্রি।” তবে তিনি জানাচ্ছেন, এই পারদপতনের প্রবণতা আরও কয়েক দিন বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা আপাতত কোনও সামুদ্রিক ঝড়ঝঞ্জার পূর্বাভাস নেই। বাধাহীন উত্তরে হাওয়া হু-হু করে পাহাড় ছুঁয়ে ঢুকেছে রাজ্যে। তাই এমনই কড়া থাকবে শীতের মেজাজ।

স্বাভাবিক ভাবেই কাঁপন ধরানো এই ঠান্ডায় জবুথবু নদিয়ার শহর থেকে গ্রাম। দিনের বেলাতেও পর্যাপ্ত রোদ না মেলায় শীত লাঘবের কোনও পথ নেই। এ দিকে, শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে বছরের প্রথম টানা ছুটি। শুক্রবার বিবেকানন্দের জন্মদিন থেকে শুরু হচ্ছে বছরের প্রথম ছুটির সিরিজ। দ্বিতীয় শনিবার এবং রবিবার মিলিয়ে তিন দিনের ছুটিতেও তেমন ভিড় নেই মায়াপুর কিংবা নবদ্বীপে। ইস্কনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস বলেন, “ঠান্ডার জন্য পর্যটকের সমাগম কিছুটা কমেছে। যাঁরা আসছেন, তাঁরাও দেরি করে পৌঁছাচ্ছেন।” ছবিটা একই রকম নবদ্বীপে। মঠ-মন্দিরে ভিড়ের চাপ অনেকটাই হালকা। দুপুরের দিকে অল্প কিছু পর্যটকবাহী টোটোর দেখা মিললেও সন্ধ্যার নামলেই সব উধাও।

কনকনে উত্তুরে হাওয়া সূঁচের মতো বিঁধছে শরীরের খোলা অংশে। দশের নীচে তাপমাত্রা নেমে যাওয়ায় বাইক, স্কুটি দূরে থাক, সাধারণ সাইকেল চালানোই দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। কনকনে ঠান্ডায় হাতমোজা ছাড়া সাইকেলের হ্যান্ডেল ছুঁলেই ছোবল! শীতের দাপটে মেলাখেলার মাঠও দ্রুত ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। কাজের প্রয়োজনে যাঁরা বাইরে থাকছেন, সুযোগ পেলেই কাঠকুটোয় আগুন জ্বেলে সেঁকে নিচ্ছেন নিজেকে। এই অবস্থায় বয়স্ক মানুষ আর শিশুদের শরীরের যত্ন নিতে পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

তবে ঠান্ডায় খুশি বেশির ভাগ মানুষ। সকলেই জানাচ্ছেন, এমন ঠান্ডার দরকার ছিল। একই কথা বলছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরাও। সরকারি কৃষিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “এই ঠান্ডা ভীষণ উপকারী সব ফসলের জন্য। শুধু বোরোর বীজতলা একটু সাবধানে রাখতে হবে, যাতে চারা মরে না যায়। প্রয়োজনে সন্ধ্যায় বীজতলা গরমজল ঢোকাতে হবে।”

তবে শীত যখন দুয়ারে, তখন তাকে উপভোগ করাই ঠিক কাজ, বলছেন শীতপ্রেমীরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Nadia Temperature
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy