Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
teacher student protest

পছন্দের টিউশন-শিক্ষক চেয়ে মিছিল

কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল এর আগে শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশান বন্ধে কড়া ভূমিকা নিয়েছিল।

 পড়ুয়াদের মিছিল। শনিবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

পড়ুয়াদের মিছিল। শনিবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র

সম্রাট চন্দ 
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:০৯
Share: Save:

ছাত্রছাত্রীদের যাতে স্কুলের বাইরে অর্থ ও সময় খরচ করে প্রাইভেট টিউশন নিতে না-হয় তার জন্য সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেটে পড়ানো অনেক দিনই সরকারি নির্দেশে নিষিদ্ধ। তা সত্ত্বেও বহু শিক্ষক তা চালাচ্ছেন। প্রতি বছর জানুয়ারিতে এই সরকারি নির্দেশ নতুন করে এক বার জারি হওয়ার পর এ ব্যাপারে বিতর্ক কিছু দিনের জন্য জোরালো হয়।

প্রাইভেট টিউশনের ভূমিকা নিয়ে যতই সমালোচনা হোক, এ বার কৃষ্ণনগর শহরের পড়ুয়া ও অভিভাবকদের একাংশ কিন্তু তার পক্ষেই সওয়াল করে পথে নামলেন। মূলত পড়ুয়াদের মঙ্গলের কথা ভেবেই সরকারি শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনে রাশ টেনেছে সরকার। অথচ সেই পড়ুয়ারাই শনিবার রাস্তায় মিছিল করে দাবি তুলল, পছন্দের শিক্ষকের কাছে প্রাইভেটে পড়ার অধিকার তাদের থেকে কেড়ে নেওয়া যাবে না!

শিক্ষকেরা যদি স্কুলে প্রতিটি ক্লাস ভাল করে নেন, ভাল-মন্দ সব পড়ুয়ার দিকে সমান নজর দেন এবং পরীক্ষার আগে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে পড়া বোঝান তা হলে প্রাইভেট টিউশন প্রয়োজন হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ইদানিং শহর-গ্রাম-মফঃস্বল সর্বত্রই চল হয়েছে স্কুল ও কলেজে ক্লাস না-করে শুধু প্রাইভেট টিউশন করা। ফলে অনেক শিক্ষকও স্কুলে ক্লাস নিতে আগ্রহী নন। বরং সরকারি স্কুল বা কলেজের চাকরির যাবতীয় সুযোগসুবিধা অক্ষুণ্ণ রেখে প্রাইভেট টিউশনে মন দিয়ে বাড়তি রোজগারে তাঁদের আগ্রহ। যে সব পড়ুয়ার প্রাইভেট টিউশন নেওয়ার ক্ষমতা নেই, পুরোটাই স্কুলের উপর নির্ভশীল তারা পড়ছে চরম সমস্যায়। তাদের পড়া বুঝিয়ে দেওয়ার কেউ থাকছেন না।

সরকারি এবং সরকার পোষিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধের দাবি নিয়ে আগেই সরব হয়েছে অনেকে। গৃহ শিক্ষকদের সংগঠনের তরফে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কোন-কোন সরকারি চিকিৎসক প্রাইভেটে পড়ান তার তালিকা তৈরি করে জমা দেওয়া হয়েছে শিক্ষা দফতরে। কিন্তু এ বার পড়ুয়াদের একাংশ ও তাদের অভিভাবকেরা পাল্টা দাবিতে পথে নেমে মিছিল করলেন। তাঁরা চাইছেন, সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের টিউশনের অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকুক। অভিভাবকদের একাংশের দাবি, ‘‘আমরা কোনও শিক্ষকের বিপক্ষে নই। কিন্তু, কার কাছে বাবা-মা তাঁদের ছেলেমেয়েকে পড়াবেন সেই সিদ্ধান্ত তাঁদেরই নিতে দেওয়া উচিৎ।’’

কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল এর আগে শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশান বন্ধে কড়া ভূমিকা নিয়েছিল। সেখানকার প্রধানশিক্ষক মনোরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, “এখনকার যা সিলেবাস বা শিক্ষাপদ্ধতি, তাতে প্রাইভেটে পড়ার দরকার হওয়ার কথা নয়। কোনও পড়ুয়ার তা দরকার হলে স্কুলে আলাদা ক্লাস নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু আলাদা টাকা নিয়ে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের বাইরে প্রাইভেট পড়ানোকে সমর্থন করা যায় না।” ‘ওয়েস্টবেঙ্গল প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ নদিয়া জেলার সহ-সম্পাদক গুরুপ্রসাদ পালের অভিযোগ, “অভিভাবকদের অনেকে উস্কানি দিচ্ছেন। শিক্ষকেরা স্কুলে যদি ভাল পড়ান, তা হলে প্রাইভেট পড়ানোর দরকার হয় কি? এই আন্দোলন যদি কেউ বন্ধ করার চেষ্টা করে তা হলে আদালতে যাব।”

অন্য বিষয়গুলি:

teacher student protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy