প্রতীকী ছবি।
পরিবহণ মালিক ও চালকদের ঝামেলায় মঙ্গলবার দিনভর বন্ধ থাকল কল্যাণীর ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের সিলিন্ডারের সরবরাহ। এই প্ল্যান্ট থেকে প্রতি দিন প্রায় ২০০ গাড়ি সিলিন্ডার নদিয়া, হুগলি ও উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় যায়। কিন্তু এ দিন কোনও সিলিন্ডার প্ল্যান্ট থেকে বার হয়নি।
ডিলারদের দাবি, চালক ধর্মঘটের প্রথম দিনে তেমন সমস্যা হয়নি। তবে গ্যাসের সিলিন্ডার ডিজেল-পেট্রলের মতো মজুত রাখা যায় না। আজ, বুধবারও ধর্মঘট চললে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে গ্যাসের সঙ্কট দেখা দেবে। এ দিকে, ইন্ডিয়ান অয়েল পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নও দাবি না মেটা পর্যন্ত কাজে যোগ দিতে নারাজ। এর ফলে প্ল্যান্টে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে মূল ফটকের সামনে শতাধিক চালক অবস্থান করেন। তাঁদের অভিযোগ, ৪৫ জন গাড়ি মালিক যে ভাবে শোষণ করছেন তাতে গাড়ি চালানো যায় না। তাই তাঁরা প্রায় তিনশো জন কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এ দিন গেটের সামনে নানা প্ল্যাকার্ড নিয়ে শ্রমিকেরা মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। আর নিজেদের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা করেন। এঁদের একাংশের অভিযোগ, ইন্ডিয়ান অয়েল কোম্পানি লরি মালিকদের ঠিকই টাকা দিচ্ছে। কিন্তু অতিরিক্ত মুনাফার লোভে তাঁরা চালকদের ন্যায্য পাওনা দিচ্ছেন না।
গাড়ি চালকদের অভিযোগ, ১৯৮৬ সালে এই প্ল্যান্ট তৈরি হওয়ার পর থেকেই গাড়ি মালিকেরা তাঁদের শোষণ করছেন। গত কয়েক বছরে তা মাত্রা ছাড়িয়েছে। ইউনিয়নের সম্পাদক অজিত কীর্তনিয়ার অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে মালিকদের যা চুক্তি ছিল, তা তাঁরা মানছেন না। নিয়ম অনুযায়ী, এক গাড়ি মাল খালাস করলে ৯৫৬ টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে দেওয়া হচ্ছে মোটে ৫৮৭ টাকা।
তা ছাড়া, প্রতি বছর মালিকদের ২৫৫০ টাকা করে অতিরিক্ত দেওয়ার কথা। চালকদের দাবি, ওই টাকায় নিরাপত্তার সরঞ্জাম কিনতে হয়। কিন্তু গত চার বছর ধরে সেই টাকাও মালিকেরা দিচ্ছেন না। নিয়ম অনুযায়ী কিলোমিটার প্রতি যে তেল দেওয়ার কথা, তা-ও দেওয়া হচ্ছে না। এই সব কারণেই কর্মবিরতি শুরু হয়েছে।
মালিকদের তরফে বলরাম মাঝি আবার দাবি করেন, ২০১৮ সালের শেষ দিকে এখনকার মালিকদের কাজের বরাত দেয় ইন্ডিয়ান অয়েল। আগের মালিকেরা এখন আর নেই। ফলে চার বছর ধরে চালকেরা যে শোষণের কথা শোনাচ্ছেন, বর্তমান মালিকেরা তা শুনবেন না। যে টাকার কথা বলা হচ্ছে, সেটা একান্ত ভাবেই ইউনিয়নের দাবি। কোনও দিনই তা মালিকেরা মানেননি।
এই নিয়ে ইতিমধ্যে কলকাতায় নিজাম প্যালেসে শ্রম দফতরের কর্তাদের দ্বারস্থ হয়েছেন চালকেরা। সেখানে মালিকদেরও ডাকা হয়েছিল। বলরাম বলেন, ‘‘বিষয়টি শ্রম দফতর দেখছে। এই অবস্থায় শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। শ্রম দফতরের চূড়ান্ত নির্দেশ মেনে কাজ হবে। শ্রমিকেরা কর্মবিরতি করে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের জোগানে বাধা দিচ্ছেন। এটা ঠিক নয়।’’
ফলে বুধবারে জট না কাটার এবং গ্যাস সরবরাহে টান পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy