মৃতের মা সাহিদা। নিজস্ব চিত্র।
পুলিশি হেফাজতে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মৃতের নাম আবদুল গনি শেখ(৪৫)। বাড়ি কালীগঞ্জের পনিঘাটা স্কুলপাড়া এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার জাল নোট-সহ ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। ভীমপুর থানায় নিয়ে গিয়ে জিঞ্জাসাবাদের সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তাঁর মৃত্যু হয় বলে পুলিশের দাবি। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে মৃতের পরিবারের লোকজন। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত ব্যক্তি দীর্ঘ দিন হরিয়ানায় ছিলেন। পুলিশের দাবি, সেখানে তিনি হেরোইন এবং জাল নোটের ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন। মাঝেমধ্যে বাড়ি আসতেন। তাঁর স্ত্রী বর্ধমানের কাটোয়ায় বাপের বাড়িতে থাকতেন। তাঁদের কোনও সন্তান হয়নি। বাড়িতে আছেন বৃদ্ধা মা। করোনার কারণে বেশ কয়েক মাস আগে তিনি বাড়ি ফেরেন। শনিবার দুপুরে জেলা পুলিশের ‘স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ’ আরও তিন জনের সঙ্গে গনিকে ভীমপুরের নেলুয়া থেকে ধরে ভীমপুর থানার হাতে তুলে দেয়।
রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন গনি। বুকে ব্যথা শুরু হয়। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। ভীমপুর থানার পুলিশের দাবি, গনির হেরোইনের নেশা ছিল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হলে তিনি থরথর করে কাঁপতে শুরু করেন। তখনই বুকে যন্ত্রণা শুরু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের কাছ থেকে ৪২৫০০ টাকার জাল নোট উদ্ধার হয়েছে। ধৃতদের বাকি তিন জন হল তেহট্টের বাসিন্দা আকবর দফাদার, ধুবুলিয়ার সিরাজুল শেখ, ও নাকাশিপাড়ার মজিদ মোল্লাকে। তাদের রবিবার কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির করা হয়।
আবদুল গনি শেখের পরিবারের লোক জন তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চেয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি করেছেন। শক্তিনগর পুলিশ মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁর ভাইপো জামাদ শেথ দাবি করেন, “উনি কী ভাবে মারা গেলেন আমরা স্পষ্ট করে জানতে চাই। এর উত্তর পুলিশকেই দিতে হবে।”
মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালের তিন জন চিকিৎসককে নিয়ে একটি দল তৈরি করা হয়। তাতে ছিলেন চিকিৎসক সৌম্য মিত্র, অনির্বাণ জানা ও তৃপ্তেশ দাস। ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরাও। তাঁদের অন্যতম তাপস চক্রবর্তী বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, পুলিশ হেফাজতে কারও মৃত্যু হলে সংশ্লিষ্ট থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে যাব।”
কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানী পালের কথায়, “জাল নোট-সহ ওই ব্যক্তিকে থানায় আনা হয়েছিল। তার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানিয়ে দেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy