সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে সীমান্ত। আর সেই সঙ্গে বদলে গিয়েছে পাচারের কৌশলও। হাঁটাপথের ঝক্কি এড়াতে গবাদি পশুকেও কখনও কখনও তুলে দেওয়া হয় ভ্যান কিংবা চার চাকার গাড়িতে। আবার নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ কাগজের বাক্স থেকে ঢুকে পড়েছে দামি ব্যাগে। এখানেই শেষ নয়। গবাদি পশু পাচারে বিএসএফের কড়া নজরদারি থাকায় বদলে যাচ্ছে পাচারের সামগ্রীও। কাশির সিরাপের বিকল্প হয়ে উঠছে মাদক হিসেবে পরিচিত ইয়াবা ট্যাবলেট। পাচারকারীদের একাংশের দাবি, গবাদি পশু পাচারের ক্ষেত্রে সীমান্তে এখন বড্ড ঝামেলা। ফলে মাদক হিসেবে ব্যবহৃত কাশির সিরাপ ও মাদক ট্যাবলেটের পাচার বেড়েছে। কারণ সেগুলো আকারে ছোট। পাচার করতেও সুবিধা হয়।
একটা সময় লক্ষ লক্ষ গবাদি পশু চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে চলে যেত বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশ থেকে এপারে আসত সোনার বিস্কুট। সোনার বিস্কুট আসা বন্ধ হয়েছে অনেক আগেই। একটু একটু করে নজরদারি বেড়েছে ভারতীয় সীমান্তে। গবাদি পশু পাচারের ক্ষেত্রে কড়া হয়েছে বিএসএফ। ফলে কৌশল বদলাতে হয়েছে পাচারকারীদের। কখনও রাতের অন্ধকারে, কখনও বিএসএফ জওয়ানকে আক্রমণ করে পাচারের চেষ্টা চালিয়েও খুব একটা লাভ হয়নি। ফলে নিজেদের কারবার চালু রাখতে পাচারকারীরা বদলে ফেলেছে পাচারের সামগ্রী।
সীমান্তের দিকে ছুটে চলেছে গাড়ি। কখনও সেই গাড়িতে লেখা থাকে ‘পুলিশ’, কখনও লেখা থাকে ‘প্রেস’। খালি চোখে দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই। কিন্তু ঠেকে শিখেছে বিএসএফ ও পুলিশ। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘প্রথম দিকে গাড়ির স্টিকার দেখে তেমন সন্দেহ হত না। কিন্তু পরে খবর পাক্কা থাকায় এমন বেশ কয়েকটি গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করে মিলেছে কাশির সিরাপ, গাঁজা কিংবা ইয়াবা। বলাই বাহুল্য, ওই গাড়ির মালিকের সঙ্গে পুলিশ কিংবা প্রেসের কোনও যোগ নেই। পাচারের সুবিধার জন্য এটাও কৌশল।’’
রানিনগর সীমান্তের এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘গবাদি পশু পাচারের ক্ষেত্রে লাভ অনেক বেশি। কিন্তু ঝুঁকিটাও বেশি। ওই কারবার করতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ফলে এখন মাদক পাচারের প্রবণতা বেড়েছে। পাচারকারীরা কখনও স্কুটির সিটের নীচে, কখনও জলের কলসিতে করেও মাদক নিয়ে যায়।’’
নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ বাংলাদেশে চড়া দামে বিক্রি হয়। কয়েক গুণ বেড়ে যায় তার দাম। এমনকি ইয়াবা ট্যাবলেটের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। ফলে কয়েকশো বোতল কাশির সিরাপ আর কয়েক প্যাকেট ইয়াবা এপার থেকে ওপারে পৌঁছে দিলেই মোটা অঙ্কের টাকা হাতে আসে। বিএসএফের এক জওয়ানের দাবি, গবাদি পশুর পাচার নিয়ে উপর তলার যতটা চাপ আছে সেটা মাদকের ক্ষেত্রে নেই। তাছাড়া গবাদিপশু পাচার খোলা চোখে দেখা যায়, মাদকের ক্ষেত্রে সেটা বুঝতেই সময় লেগে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy