Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Santipur State General Hospital

হাসপাতাল বন্ধ, দাবি পরিষেবার 

প্রথমে এক চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই অবশ্য জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি বিভাগ বন্ধ রাখা হয়েছিল।

করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকেরা। বন্ধ হল শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। ইনসেটে, পরিষেবা বন্ধের নোটিস। সোমবার। ছবি: প্রণব দেবনাথ

করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকেরা। বন্ধ হল শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। ইনসেটে, পরিষেবা বন্ধের নোটিস। সোমবার। ছবি: প্রণব দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা 
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২০ ০৪:৪০
Share: Save:

চিকিৎসকেরা আক্রান্ত হওয়ায় সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় বন্ধ করে দেওয়া হল শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল।

প্রথমে এক চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই অবশ্য জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি বিভাগ বন্ধ রাখা হয়েছিল। মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগ ছিল বন্ধ। প্রসূতি বিভাগে অবশ্য রোগী ছিল। তাঁদের অনেককেই অন্যত্র রেফার করা হয়েছে। তিন জনকে ছুটি দিয়ে গৃহ নিভৃতবাসে থাকতে বলা হয়েছে। তাঁদের ললারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেওয়া হবে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। গত ১৫ জুলাই রাতে ওই হাসপাতালে কর্মরত এক চিকিৎসকের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। এর পরেই হাসপাতাল স্যানিটাইজ় করানো হয়। আক্রান্ত চিকিৎসক তার আগে টানা সপ্তাহখানেক হাসপাতালে ডিউটি করেছেন। সে কারণে হাসপাতাল সুপার ও অন্য চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিভৃতবাসে পাঠানো হয়। তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েচিল। ১৭ জুলাই এঁদের মধ্যে এক চিকিৎসকের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তিনি নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন। সোমবার দুপুরে আরও এক চিকিৎসকের করোনা ধরা পড়ে। তবে তার আগেই, রবিবার রাতে হাসপাতাল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শান্তিপুর শহরের ২৪টি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা ছাড়াও শান্তিপুর ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা এই হাসপাতালের উপরে নির্ভরশীল। শান্তিপুর ব্লকের মধ্যে ফুলিয়ায় রয়েছে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এ ছাড়া গয়েশপুর, বাগআঁচড়া, আরবান্দিতে রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। তবে এদের মধ্যে বাগআঁচড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শুধু অন্তর্বিভাগ রয়েছে। এ ছাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। শান্তিপুর শহরের মধ্যে পুরসভার তিনটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। তবে বাসিন্দারা রোগব্যাধির জন্য স্টেট জেনারেল হাসপাতালের উপরেই নির্ভর করেন। কাছাকাছি বড় হাসপাতাল বলতে রয়েছে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল, প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে কৃষ্ণনগরের সদর এবং শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল। স্টেট জেনারেল বন্ধ থাকায় আপাতত ওই হাসপাতালগুলির ওপরই ভরসা করতে হবে বাসিন্দাদের।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই অবস্থায় যেখানে হাসপাতালের একের পর এক চিকিৎসক আক্রান্ত হচ্ছেন, সেখানে রোগীদের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। সে জন্যই বাকিদের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ রাখা হচ্ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হাসপাতালের চিকিৎসকেরা আক্রান্ত হয়েছেন। সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় সেজন্য বাকিদের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত হাসপাতাল বন্ধ থাকবে।“ তবে ইতিমধ্যে অন্তত জরুরি পরিষেবা চালুর দাবিও উঠেছে। শান্তিপুরের পুর প্রশাসক এবং শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অজয় দে বলেন, "হাসপাতাল বন্ধ থাকলে শান্তিপুর শহর ও গ্রামের বহু মানুষ বিপাকে পড়বেন। অন্তত জরুরি পরিষেবা চালু রাখা বা বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য জেলাশাসককে বলেছি।" জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, “ হাসপাতাল বন্ধ রাখার কথা আমার জানা ছিল না। জরুরি পরিষেবা বন্ধ রাখা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলব।“

অন্য বিষয়গুলি:

Santipur State General Hospital Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE