বৃষ্টিদিনে। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র ।
উত্তরের কবল থেকে শেষমেশ ছাড়া পেল আষাঢ়। আবহাওয়া অফিসের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু উত্তরবঙ্গ ছাড়িয়ে রাজ্যের অবশিষ্ট অংশে অগ্রসর হয়েছে। তার ফলে শুক্রবার, ২৮ জুন থেকে দক্ষিণবঙ্গ-সহ সারা রাজ্যেই দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু ছেয়ে গিয়েছে। যার অর্থ, বর্ষার প্রবেশ ঘটল দক্ষিণবঙ্গের চাতক জেলাগুলিতেও। দক্ষিণের জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি এবং ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। একই সঙ্গে একটা নিম্নচাপের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস।
যদিও প্রবল গরমে নাজেহাল দক্ষিণবঙ্গবাসী এখনই বৃষ্টির সতর্কতা নিয়ে ভাবিত নয়। আপাতত পর্যাপ্ত বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনছে আমজনতা। গরমে শরীরের সঙ্গে ছেঁকা লাগছিল প্রতিদিনের বাজার দরেও। টানা গরমে মাঠে-ঘাটে আনাজ শুকিয়ে কাঠ। প্রবল রোদে চাষিরা মাঠে গিয়ে আনাজ কাটতেও ভয় পাচ্ছিলেন। টান পড়ছিল জোগানে। যার জেরে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছিল সমস্ত আনাজ, ফল, ফুলের। বর্ষা আসার খবরে সকলের একটাই জিজ্ঞাসা— “এ বার কি তবে দাম কমবে আনাজের?”
দিনদুয়েক ধরেই আকাশে মাঝে মাঝে মেঘের দেখা মিলছিল। তপ্ত বাতাসে হঠাৎ করেই এক ঝলক শীতলতার স্পর্শ জানান দিচ্ছিল— বর্ষা আসছে। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন জায়গায় দু-এক পশলা বৃষ্টি হয়। শুক্রবার নদিয়ার নানা প্রান্তে বৃষ্টির পরিমাণ সামান্য হলেও বেড়েছে। বাতাসে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব। শনিবার দুই ২৪ পরগনা এবং দুই মেদিনীপুরের জন্য ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের অন্য জায়গায় বজ্র-বিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে, রবিবার দক্ষিণের আরও পাঁচ জেলার সঙ্গে নদিয়ায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই নিত্য প্রয়োজনীয় আনাজের দাম গরমের অস্বস্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতি দিন বেড়েই চলেছে। বাজারে এই সময়ের আনাজ পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়শ, লাউ, চালকুমড়ো, মিষ্টি কুমড়ো, উচ্ছে, বেগুন কিছুরই সে ভাবে দেখা মিলছে না। বাজারে আনাজের ঝাঁকার চেহারা দেখলে ক্রেতাদের পছন্দ হয় না। কিন্তু দাম শুনে চমকে যেতে হয়। কেজি প্রতি ৩০ টাকার নীচে কোনও আনাজই বিক্রি হচ্ছে না। দরের নিরিখে কাঁচালঙ্কা, বেগুন, টোম্যাটো সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। মারাত্মক অবস্থা আলুর বাজারে। চন্দ্রমুখী ৪৫ টাকা কেজি, জ্যোতি, হেমাঙ্গিনী ৪০ টাকা। ওই দামে আনাজ কেনার লোকও নেই বাজারে। এর জন্য প্রধানত দায়ী বৃষ্টিহীনতা।
তবে যদি সত্যি পূর্বাভাস অনুযায়ী বৃষ্টি হয়, তা হলে বাজার দর নামতে দেরি হবে না। সরকারি কৃষিকর্তা পার্থ ঘোষ শুক্রবার বলেন, “এ সময়ে গরমের আনাজ শেষ হয়ে বর্ষার আনাজ বাজারে আসতে শুরু করে। ফলে, মধ্যবর্তী সময়ে একটা সঙ্কট প্রতি বছর হয়। তবে এ বার টানা খরার জন্য সেটা তীব্র হয়েছে। এ বার বাজার দ্রুত নামবে।” চাষিরা জানাচ্ছেন, নানা রকম শাক, ডাঁটা, কচু, মুলো বাজারে আসতে শুরু করছে। এখন ঠিক মতো বৃষ্টি হলে স্বস্তি পাবেন সকলেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy