অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বেলডাঙার সেই ৬টি অঞ্চলে পুনর্নির্বাচন হল। — ফাইল চিত্র।
গণ্ডগোলের অভিযোগে তৃণমূলের বেলডাঙা ২ ব্লক (পূর্ব) ৬টি অঞ্চলের প্রার্থী বাছাইয়ের ভোট বাতিল করেছিল। দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সেই ৬টি অঞ্চলে পুনর্নির্বাচন হল। বুধবার সকালে এই পুনর্নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বহরমপুরে দলের জেলা কার্যালয়ে উত্তেজনা ছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে ভোটার ছাড়া অন্যদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এমনকি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও ভোট চলা পর্যন্ত সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। প্রবেশপথে ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড দেখে দলের নেতাকর্মীদের সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়েছে।
রামপাড়া ২অঞ্চল এবং আন্দুলবেড়িয়া ১ ও ২ অঞ্চলে গণ্ডগোল হয়েছিল। ব্যালট বক্স ভেঙে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। তাই ওই এলাকার রামপাড়া ১ ও ২ অঞ্চল, আন্দুলবেড়িয়া ১ ও ২ অঞ্চল, কাশিপুর ও দাদপুর অঞ্চলের এদিন ভোটাভুটি হয়েছে। রেজিনগরের তৃণমূল বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী এবং বেলডাঙা ২ব্লকের সভাপতি আতাউর রহমান উভয়েই এদিন বলেছে ভোট শান্তিতে হয়েছে।
এই পুনর্নির্বাচনের সাক্ষী থাকলেন দলের সাংসদ শান্তনু সেন এবং ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক তথা এই জেলার প্রাক্তন পুলিশ সুপার হুমায়ূন কবীর, জেলা তৃণমূল সভাপতি শাওনি সিংহ রায় সহ অন্য নেতানেত্রীরা। তবে এ দিন পুনর্নির্বাচন শান্তিতেই শেষ হয়েছে। তৃণমূলের এই পুনর্নির্বাচনকে কটাক্ষ করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘এটা সার্কাস চলছে।’’তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘অতিরিক্ত ভালবাসা, স্বতস্ফূর্ততা, অতিরিক্ত সমর্থক, অতিরিক্ত আবেগতাড়িত হয়ে উন্মাদনার ফলে কিছু কিছু ঘটনা ঘটছে। তার সাংগঠনিক ভাবে মোকাবিলা করে, যাতে কেউ বলতে না পারে মতামত পোষণ করতে পারিনি (তার ব্যবস্থা করা হয়েছে)।’’
গত রবিবার বেলডাঙা ২ ব্লক পূর্বের সভাপতি আতাউর রহমান ও রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী একে অপরের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ তুলেছিলেন। সেদিন ভোটাভুটিও ভেস্তে যায়। তা নিয়ে কী আলোচনা হল? সেই বিরোধ কী এদিন মিটল? সে বিষয়ে শান্তনু বলেন, ‘‘দলের আভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বলব না। কিন্তু মানুষ এতটাই তৃণমূলমুখী হয়ে রয়েছেন, সাধারণ মানুষ থেকে দলের বুথ স্তরের কর্মী পর্যন্ত তাঁরা তৃণমূলের হয়ে মানুষের জন্য কাজ করতে এতটাই উৎসুক এবং এতটাই উন্মাদনা রয়েছে। সেই কারণে কোথাও কোথাও অতিরিক্ত আবেগের বহিরপ্রকাশ ঘটছে। এর বাইরে কিছু না।’’ রেজিনগরের মতো আরও কয়েকটি ব্লকে পুনর্নির্বাচনের দাবি উঠছে দলের অন্দরে শুরু করেছে। এ বিষয়ে শান্তুনুর দাবি, ‘‘দল সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় এই অনুষ্ঠান করছে। যদি কারও কাছ থেকে দলে আবেদন আসে, এর জন্য দলের নির্দিষ্ট প্লাটফর্ম রয়েছে যেখানে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই প্লাটফর্ম তখন সিদ্ধান্ত নেবে।’’
অনেক অর্থ খরচ করে নবজোয়ারের নামে মস্তি হচ্ছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ তুলছেন। সে বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘পয়সা তো ওদের খরচ হচ্ছে না। যদি পয়সা খরচ হয়, আমাদের দলের হচ্ছে। এটা দু’মাস ধরে চলবে। যখন ভোট হবে ওরা তখন মুখ লুকানোর জায়গা পাবে না। এটার ফলে বিরোধীরা পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’ শান্তনু বলেছেন, ‘‘অনেকেই বলছেন এটা নাটক হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টালির চালার বাড়িতে থাকেন। হাওয়াই চটি পরেন, আটপৌরে শাড়ি পরেন। একজন একমাস, দু’মাস একবছর, দু’বছর নাটক করতে পারে, সারাজীবন নাটক করতে পারে না। তাই সেটা বলা এখন বন্ধ হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৬০ দিন দাবদাহ উপেক্ষা করে পরিবার ছেড়ে রাস্তায় পড়ে রয়েছেন। বিরোধীদের বলব ৬০ দিন তো দূরের কথা ৬ দিন পরিবার ছেড়ে রাস্তায় থেকে দেখান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy