কৃষক বাজার। নিজস্ব চিত্র।
বীরভূম ও পূর্ব বর্ধমান জেলার সীমান্ত ঘেঁষে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা বিধানসভা কেন্দ্র। কোনও পুরসভা নেই, বড়ঞা ব্লকের ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভরতপুর ২ ব্লকের মধ্যে গড্ডা, গুন্দিরিয়া ও জজান তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত ওই কেন্দ্রের মধ্যে আছে। সব মিলিয়ে ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে ওই বিধানসভা কেন্দ্র। তবে ওই কেন্দ্রটি বামফ্রন্টের শরিক আরএসপি-র ‘শক্ত ঘাঁটি’ বলেই পরিচিত ছিল। কিন্তু ২০১১ সালে রাজ্য জুড়ে বাম বিরোধী হাওয়াতে ওই কেন্দ্রে সামান্য ভোটের ফারাকে কংগ্রেসের প্রতিমা রজক জয়ী হন। তারপর ২০১৬ সালে বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হলেও ওই কেন্দ্রে জোট হয়নি। চর্তুমুখী লড়াইয়ের পরেও কংগ্রেস জয়ী হয়েছে। কংগ্রেস নেতৃত্বদের দাবি ২০১৬ সালের ভোটের আগে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে চলে গিয়েছিল বহু নেতা ও কর্মী। তারপরেও ওই এলাকার বাসিন্দা উন্নয়নের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের উপর ভর করেছেন।
ওই কেন্দ্র থেকে একাধিকবার অমলেন্দু লাল রায় ও দেবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী হয়ে রাজ্যের সেচ মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু তারপরেও ওই কেন্দ্রের বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া ময়ূরাক্ষী নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যা বার্ষিক সমস্যায় পরিণত হয়েছিল। কিন্তু ওই নদীর বাঁধ মেরামতি বা সংস্কারের উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি তৎকালীন সেচমন্ত্রীদের। পরে অধীর চৌধুরীর হাত ধরে ও তৎকালীন কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অর্থ বরাদ্দ করে কান্দি মাস্টার প্ল্যান প্রকল্পের মাধ্যমে ওই বাঁধের সংস্কার হয়েছে। যদিও ওই বাঁধ আসলে রাজ্য সরকার করিয়েছে বলেও এখনও দাবি করেন তৃণমূলের নেতা ও মন্ত্রীরা।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ওই কেন্দ্র থেকে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী, তৃণমূলের অপূর্ব সরকারের থেকে ৩৮০১ ভোটে এগিয়ে ছিলেন। ফলে ওই কেন্দ্রটি বর্তমানে বামেদের দুর্গ থেকে কংগ্রেসের গড় বলেই পরিচিত হয়েছে।
কংগ্রেসের দাবি পাঁচথুপি ও বড়ঞায় দু’টি জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের পানীয় জলের মজে যাওয়া পাইপ লাইনের সংস্কার করা হয়েছে, একই সঙ্গে বড়ঞা ২ অঞ্চলের পছিপাড়া এলাকায় একটি নতুন জলের পাইপ লাইনের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়াও একাধিক ঢালাই রাস্তা, কলেজের শ্রেণি কক্ষ নির্মাণের জন্য অর্থ দেওয়া থেকে স্কুলের গেট নির্মাণ করা থেকে শবদেহ মুখাগ্নি কেন্দ্র নির্মাণ হয়েছে বলেও দাবি কংগ্রেস নেতৃত্বদের। যদিও এলাকার বাসিন্দাদের দাবি মুখে উন্নয়ন হয়েছে বললেও বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের অর্থে এলাকায় উন্নয়ন চোখে পড়ে না। ঠিক একই ভাবে বাসিন্দাদের সঙ্গে সুর চড়িয়ে ওই ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি গোলাম মুর্শিদ বলেন, “যত উন্নয়ন হয়েছে সবটাই পঞ্চায়েতের মাধ্যমে। রাজ্যের মন্ত্রীদের কাছে বারংবার দাবি জানিয়ে আমরা পছিপাড়াতে পিএইচই দফতরের একটি পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে পেরেছি। সমস্ত কিছু মিথ্যা বলছেন বিধায়ক ও তাঁর দলের নেতারা।” এলাকায় ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপনের চেষ্টা করতে দেখা যায়নি বিধায়ককে, বলেও দাবি করে ওই কেন্দ্রের বাসিন্দা তথা জেলা বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি অয়ন মণ্ডল বলেন, “পাঁচ বছর আগে ভোটের সময় বিধায়ক কে দেখা গিয়েছিল, তারপর থেকে নিজের সংসার জীবন নিয়েই ব্যস্ত আছে। এলাকার মানুষের কথার থেকে নিজের কথা বেশি ভাবেন উনি। মানুষ যোগ্য জবাব দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।” স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই দাবি বড়ঞা বিধানসভা কেন্দ্রের বিশেষ পরিবর্তন ঘটেনি। এমনকি একটি মাত্র গ্রামীণ হাসপাতাল সেটাও উন্নয়ন হয়নি। বিধায়ক কী করছেন বোঝা যায় না। যদিও কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমা রজক বলেন, “বারং বার দাবি জানিয়ে মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে পানীয় জলের পাইপ লাইনের সংস্কার করা ও একটি নতুন পাইপ লাইনের ব্যবস্থা করেছি। মুখ্যমন্ত্রীই হচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, তাঁকেও একাধিক বার বলেছি বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতাল কে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলির মান উন্নয়ন করার কিন্তু কোন দাবিই উনি শোনেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy