Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

সম্প্রীতির বার্তা দিতে মেলায় ডান-বাম নেতা

রাজনৈতিক নেতাদের এক ছাতার তলায় গল্পে-আড্ডায় মশগুল দেখে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারেননি জলঙ্গিবাসী। ইদ ও রথযাত্রা উপলক্ষে মুর্শিদাবাদের সীমানা লাগোয়া জলঙ্গি কলেজ মাঠে গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ‘মিলন মেলা’।

চলছে মেলা। জলঙ্গিতে বিশ্বজিৎ রাউতের তোলা ছবি।

চলছে মেলা। জলঙ্গিতে বিশ্বজিৎ রাউতের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলঙ্গি শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৫ ০০:৫৭
Share: Save:

রাজনৈতিক নেতাদের এক ছাতার তলায় গল্পে-আড্ডায় মশগুল দেখে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারেননি জলঙ্গিবাসী। ইদ ও রথযাত্রা উপলক্ষে মুর্শিদাবাদের সীমানা লাগোয়া জলঙ্গি কলেজ মাঠে গত শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে ‘মিলন মেলা’। ওই মেলায় কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপি-তৃণমূল সব রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব এক বেঞ্চে পাশাপাশি বসে গল্পগুজবে মেতে উঠেছিলেন। সৌজন্যে জলঙ্গি মিলন মেলা কমিটি।

‘চাঁদের হাসি রথের রশি, আলগা না হয় জোরে কষি’— ভাবনায় জারিত জলঙ্গি মিলন মেলা কমিটি ১২ দিনের অভিনব এই মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় সর্বস্তরের সব সম্প্রদায়ের মানুষ ভিড় করছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগকে তোয়াক্কা না করে ইদের পর দিন থেকেই সেখানে উপচে পড়া ভিড়। মেলা ঘিরে সম্প্রীতির যে নৌকা পদ্মাপাড়ে ভেসেছে, তার পালের হাওয়া কাড়তে সেখানে ভিড় করেছেন এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বও। মেলা কমিটির কর্তারা খুশি হলেও রাজনৈতিক মুখের ভিড় এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। কিন্তু আসন্ন বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে সমালোচকদের কথায় আমল দিতে চাননি রাজনৈতিক বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব।

ভোটের আগে-পিছে ছাড়াও সারা বছর পিছিয়ে পড়া এলাকা ডোমকলের জলঙ্গিতে খুনোখুনির রাজনীতি কায়েম রয়েছে, সেখানে কয়েক বছর আগে থেকে শুরু হওয়া ওই মিলন মেলা নতুন দিক উন্মোচন করেছে। এ বছর সেখানে ইদ-রথযাত্রার মাহেন্দ্রক্ষণ মিলন মেলায় নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে। সব মিলিয়ে অভিনবত্বের দিক থেকে মেলা আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। ফলে সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে গিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক মুখের সারি।

বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ থেকে রাজনীতিগত ভাবেও সম্প্রীতির পরিবেশ গড়ে তুলতে পেরে খুশি মিলন মেলা কমিটির কর্তারা। ওই মেলা কমিটির সভাপতি মোহিত দেবনাথ বলেন, ‘‘এলাকার অবক্ষয়ের সংস্কৃতি দূর করতেই মিলন মেলার সূচনা। বিভিন্ন সম্প্রদায় ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মানুষের ভিড় শেষ পর্যন্ত মিলন মেলার উদ্দেশ্যকে সফল করে তুলেছে। এখানেই মেলা আয়োজনের সার্থকতা।’’

মিলন মেলা প্রসঙ্গে সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক তথা জলঙ্গি জোনাল কমিটির সম্পাদক ইউনুস সরকার জানান, ‘‘দুই সম্প্রদায়ের মানুষের ভিড়ে মেলা সার্থক। কিন্তু মেলায় সংস্কৃতিক বিভিন্ন বিভাগ তুলে ধরলে সর্বাঙ্গসুন্দর হয়ে উঠবে। পিছিয়ে পড়া এলাকার মানুষ বিনোদনেরও আনন্দও পেতে পারে।’’ কংগ্রেসের আবদুর রাজ্জাকের কথায়, ‘‘সম্প্রদায়গত বিভেদের দুঃসময়ে এই ধরণের মিলন মেলার আরও বেশি করে প্রয়োজন।’’ মেলা কমিটির কর্তা মোহিতবাবু আবার তৃণমূলেরও নেতা। তিনি বলেন, ‘‘এই মেলা সম্প্রদাযের পাশাপাশি আড়াআড়ি ভাবে ভাগ হয়ে যাওয়া রাজনৈতিক নেতৃবর্গের মধ্যেও সম্প্রীতির সেতু তৈরি করেছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Political leaders poll campaign CPM Jalangi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE