Advertisement
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Manik Bhattacharya

‘দলীয় বিবাদে’ খুন হওয়া তৃণমূল কর্মীকে শহিদের মর্যাদা দিলেন জামিনে মুক্ত মানিক! কটাক্ষ বিজেপির

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘ ২৩ মাস জেলবন্দি থাকার পর জামিনে মুক্তি পান পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য।

Manik Bhattacharya

মানিক ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
পলাশিপাড়া  শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:০৮
Share: Save:

জমির দখল সংক্রান্ত বিবাদে খুন হওয়া তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীকে ‘শহিদ’ বলে আখ্যায়িত করলেন সদ্য জামিনে ছাড়া পাওয়া পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। শনিবার সন্ধ্যায় নাকাশিপাড়া থানা এলাকার হরনগর গ্রামে সভা শেষ করেই ওই মৃত তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে দেখা করতে যান মানিক। মৃতের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন মানিক। তার পরেই কটাক্ষ শানিয়েছে বিজেপি।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় দীর্ঘ ২৩ মাস জেলবন্দি থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মানিক। শনিবার দুপুরে তিনি নিজের বিধানসভা এলাকায় পা রাখেন। পলাশিপাড়া এবং বার্নিয়া এলাকায় দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ সারেন। পরে নেতাকর্মীদের নিয়ে রওনা দেন হরনগরে। বৃষ্টির মধ্যেই সন্ধ্যায় একটি পথসভা করে ঈদের আগে জমির দখল নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন হওয়া ঘুনি এলাকার তৃণমূল কর্মী জাহিদুল শেখের বাড়িতে দেখ যান মানিক। তার আগে সভা থেকেই জহিদুলকে ‘শহিদ’ বলে দেন তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর কথায়, ‘‘যে দিন ঘটনার কথা শুনেছিলাম, সে দিনই জুব্বার (তৃণমূল নেতা) ভাইকে ফোন করে বলেছিলাম, প্রত্যেক এলাকায়, প্রতিটি গ্রামে একটা করে যদি জহিদুল থাকে তবে দিদিকে বলে দিতে পারি, আগামী চল্লিশ বছর এই বাংলায় তৃণমূলের ভিত কেউ নড়াতে পারবে না।’’ জহিদুলের কথা বলতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন মানিক। তিনি বলেন, ‘‘চোখের মণির মতো ভালবাসতাম জহিদুলকে। যে দিন খবর পেলাম জহিদুল আর নেই, সে দিনই আমার বুকের একটা একটা করে হাড় মড়মড় করে ভেঙে গিয়েছে। জুব্বার ভাইকে ফোন করে বলেছিলাম, যদি মুক্তি (জেল থেকে) পাই, তবে প্রথমেই আমাদের শহিদের বাড়িতে যাব। আমরা সবাই তাঁর পরিবারকে বার্তা দেব যে তৃণমূল একটি পরিবার। আমরা সবাই তাদের পাশে আছি।’’

উল্লেখ্য, গত ৩ এপ্রিল রাতে তৃণমূল নেতা জুব্বারের ব্যক্তিগত গাড়িতে হরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যা তাগিরা বিবি, তাঁর পুত্র রকিব শেখ এবং প্রতিবেশী আদ্রুপ শেখকে নিয়ে বেথুয়াডহরিতে ইদের বাজার করতে গিয়েছিলেন জহিদুল। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘুনির মোড় অতিক্রম করতেই রাস্তায় গাছ পড়ে থাকতে দেখে জহিদুল গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন নামান। তখনই তাঁদের লক্ষ্য করে বোমাবাজি শুরু হয় বলে অভিযোগ। জনা দশেক দুষ্কৃতী গাড়ির দরজা খুলে চার যাত্রীকে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় জহিদুলের। অভিযোগ ওঠে ধাপারিয়া এলাকায় একটি জমির দখলকে কেন্দ্র করে জুব্বারদের সঙ্গে তৃণমূলেরই আর এক গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের প্রেক্ষিতে ওই হামলা হয়।

অন্য দিকে, জহিদুলকে নিয়ে মানিকের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের কটাক্ষ, ‘‘নিজে আকণ্ঠ দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছেন। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। তিনিই তো এক দুষ্কৃতীকে শহিদের মর্যাদা দেবেন। সেটাই তো স্বাভাবিক। আসলে তৃণমূলের সংস্কৃতি হল গুন্ডা এবং প্রশাসনকে ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে দমিয়ে রাখার সংস্কৃতি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manik Bhattacharya TMC MLA Palshipara TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE