পশ্চিমবঙ্গের ১৬ জন পরিযায়ী শ্রমিককে তামিলনাডুর সালেম শহর থেকে অপহরণের ৬ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার করল তামিলনাডু পুলিশ শুক্রবার সন্ধেয়। এই ১৬ জনের মধ্যে ৬ জন নবগ্রামের এবং ২ জন বহরমপুরের। বাকি ৮ জন বীরভূমের রামপুরহাট লাগোয়া এলাকার। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখেই দ্রুত অপহরণকারীদের ডেড়ায় পৌঁছে যায় তামিলনাডু পুলিশ।
লালবাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসপ্রীত সিংহ জানান, তামিলনাডু পুলিশ তাদের উদ্ধার করেছে। তবে এই ঘটনায় কত জন যুক্ত, কত জন গ্রেফতার হয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য এখনও মেলেনি।
বুধবার এঁরা বাড়ি থেকে এক সঙ্গেই রওনা হন। রাতেই ট্রেন ধরে রামপুরহাটে। এঁদের কেউ যাচ্ছিলেন বিস্কুট কারখানায় কাজ করতে, কেউ রাজমিস্ত্রির কাজে।
নবগ্রাম থেকে অপহরণ করা হয় নয়দেব বেহারা, তাঁর দুই ছেলে কার্তিক ও সূর্য বেহারা, আর এক পরিবারের জীতেন বেহারা ও তার ছেলে। তার প্রতিবেশী দীপু বেহারা। অন্য দু’জন এঁদেরই আত্মীয় বহরমপুরের বাসিন্দা বিনয় দাস ও তাঁর ছেলে সন্দীপ দাস।
পরিবারের লোকজনকে অপহরণ করা হয়েছে বলে নবগ্রামের আত্মীয় স্বজনরা জানতে পারেন ফোনে শুক্রবার দুপুর ১টা থেকে ২টোর মধ্যে। তাঁরা ছুটে আসেন নবগ্রাম থানায়। থানা থেকে সরাসরি পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে সমস্ত ঘটনা জানান ওসি ইন্দ্রনীল মহান্ত।তারপরই মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখে দেখা যায় তাঁরা রয়েছেন তামিলনাডুর সালেম শহরের আশপাশে। নবগ্রাম থানা থেকে যোগাযোগ করা হয় সেখানকার থানায়। ওদিকে পুলিশ সুপারও যোগাযোগ করেন সেখানকার জেলা পুলিশের সঙ্গে। তামিলনাডু পুলিশও তৎপরতার সঙ্গে টাওয়ার লোকেশন ধরে বেরিয়ে পড়ে।
অপহৃত নয়দেব বেহারার স্ত্রী আদরী বলেন, “আমাকে বড় ছেলে কার্তিক ফোন করে জানায় বেলা ১০টা নাগাদ তারা সালেম জংসন স্টেশনে নামে। সেখান থেকে গাড়িতে করে কাজের জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে বলে তুলে নেওয়া হয় তাদের। কিছু ক্ষণ পরে ঘরে আটকে শুরু হয় প্রচণ্ড মারধর।স্বামীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। বলা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা দিলে তাদের ছাড়া হবে। কিন্তু অতটাকা কোথায় পাব?”এরপর কার্তিককে দিয়ে বার বার ফোন করানো হয়। সব ঘটনা নবগ্রাম থানায় এসে জানান তিনি।
অপহৃত জীতেনের মা লালমণি বেহারাও জানান, মোবাইল ফোনে নাতি জানায় তাদের অপহরণের কথা। তবে কোথায় আছে তারা কিছুই জানাতে পারেনি। দাবি করে ৪০ হাজার টাকা। মারধরও করে। নিরুপায় হয়ে নবগ্রাম থানায় যান তিনিও।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)