Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Primary Recruitment Case

হাই কোর্টে জামিন পেলেন মানিক ভট্টাচার্য, তবে রইল চার শর্ত, নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার করেছিল ইডি

কলকাতা হাই কোর্টে জামিন পেলেন মানিক ভট্টাচার্য। ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। প্রায় ২৩ মাস পরে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন মানিক।

মানিক ভট্টাচার্য।

মানিক ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:৫৭
Share: Save:

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে জামিন পেলেন মানিক ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ তাঁকে জামিন দিয়েছেন। তবে জামিন পেলেও চারটি শর্ত মেনে চলতে হবে মানিককে। জামিন-মামলায় জেল থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে নিজেই সওয়াল করেন তিনি।

প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিককে হাই কোর্টের নির্দেশ, তাঁকে তদন্তকারী অফিসারকে মোবাইল নম্বর দিতে হবে। নিম্ন আদালতে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। কোনও সাক্ষীর সঙ্গে যোগাযোগ বা যোগাযোগ করার চেষ্টা করা যাবে না। কোনও সাক্ষীর উপরে প্রভাব খাটানো বা হুমকি দেওয়া যাবে না। তা ছাড়াও তদন্তকারী অফিসারের অনুমতি ছাড়া বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না মানিক।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির পাশাপাশি তদন্ত করেছে সিবিআইও। তবে সিবিআই মানিককে গ্রেফতার করেনি। এই বিষয়ে আগেই সুপ্রিম কোর্টে রক্ষাকবচ পেয়েছিলেন মানিক। ফলে বৃহস্পতিবার হাই কোর্ট জামিন দেওয়ায় জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার বিষয়ে কোনও বাধা রইল না তাঁর। গত ২৯ অগস্ট মানিকের জামিন-মামলার শুনানি শেষ হয় হাই কোর্টে। তবে ওই দিন শুনানি শেষ হওয়ার পর রায়দান স্থগিত রেখেছিলেন বিচারপতি ঘোষ।

প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালের ১১ অক্টোবর মানিককে গ্রেফতার করেছিল ইডি। ইডির হেফাজত শেষ হওয়ার পর প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি ছিলেন তিনি। গ্রেফতার হওয়ার ২৩ মাস পরে জামিন পেলেন মানিক।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

এর আগে জামিন চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মানিক। এই সংক্রান্ত শুনানি চলাকালীন উচ্চ আদালতে মানিক কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। আদালতে ইডি জানিয়েছিল, মানিকের ছোট ভাইয়ের বয়ানকে হাতিয়ার করে জামিনের বিরোধিতা করছে তারা। কেন্দ্রীয় সংস্থার এই বক্তব্য শোনার পর কেঁদে ফেলেন মানিক। তিনি জানান, গ্রেফতারির সময় তাঁর ভাই সিবিআইকে কী বলেছেন, জামিনের ক্ষেত্রে তা বিবেচ্য হওয়া উচিত নয়। ওই দিন জেল থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সে শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন মানিক।

এর আগে প্রাথমিক নিয়োগের মামলায় ইডির তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে মানিক বলেছিলেন, ‘‘তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে আমি দু’ফুট করে উঠছি। এক ফুট করে নামছি।’’ অভিযোগ ছিল, বার বার তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠনের সময়ে ইডি দাবি করছে যে, তাদের তদন্ত চলছে। এতে জামিন পেতেও অসুবিধা হচ্ছে। ইডির তদন্তে তিনি হতাশ, জানিয়েছিলেন মানিক। তাঁর বিরুদ্ধে ইডির কাছে কোনও প্রমাণ নেই বলেও দাবি করেছিলেন।

জামিনের আবেদন নিয়ে মানিক এর আগে সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু শীর্ষ আদালত মানিকের জামিন মঞ্জুর করেনি। বলা হয়েছিল, ওই জামিন মামলার ত্রুটি সংশোধন করে হাই কোর্টে আবেদন করতে হবে মানিককে। সেই মতো উচ্চ আদালতে জামিন চেয়ে মামলা করেন তৃণমূল বিধায়ক। উল্লেখ্য, নিয়োগ মামলায় মানিকের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রকেও হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। হাই কোর্ট পরে তাঁর স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্যকে জামিন দেয়। মানিকের পুত্র শৌভিক জামিন পান সুপ্রিম কোর্ট থেকে। কিন্তু মানিকের জামিন হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manik Bhattacharya ED Calcutta High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE