প্রস্তুতি: লিগের আগে চলছে ঘাম ঝরানো। নিজস্ব চিত্র
কর্নার ফ্ল্যাগের পাশে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করছিলেন অরুণ রায়, “আর মোটে চারটে দিন। ডিফেন্সটা ভাঙা দেওয়ালের মতো নড়বড় করছে। উইংয়ের ছেলেগুলোকে দেখে মনে হচ্ছে বোতে রোগী। ওরা ছুটতে ভুলে গেল নাকি!” রাগের চোটে শেষে বাঁশি ফুঁকে খেলা থামিয়ে ছুটলেন মাঠের মাঝ খানে। সেখানে দীর্ঘক্ষণ চলল ভোকাল টনিক।
এ যদি একটা ক্লাবের দৃশ্য হয়, তা হলে নবদ্বীপের মাঠে মাঠে আরও দৃশ্যও তৈরি হচ্ছে। দিন দুয়েক আগে দুপুর আড়াইটের সময় নবদ্বীপ অ্যাথলেটিক ক্লাবের এক ফুটবল কর্তার মোবাইলে জরুরী ফোন। গঙ্গার ওপারে স্বরূপগঞ্জ অলিম্পিক ক্লাব ফুটবল অ্যাকাডেমির কোচ সৌরভ দেবনাথ একটা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলতে চান দুই ক্লাবের মধ্যে। এবং সেটা ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই।
অন্যসময় হলে এমন অদ্ভুত আবদার হেসেই উড়িয়ে দিতেন। কিন্তু দিন কয়েক বাদে স্থানীয় লিগ শুরুর কথা মাথায় রেখে রাজী হয়ে গেলেন।
শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ তো বটেই, গঙ্গার পূর্বপাড়েও বিভিন্ন ফুটবল মাঠে এখন শেষমুহূর্তের ব্যস্ততা। ২২ জুন সাব জুনিয়ার লিগ দিয়ে শুরু হচ্ছে নবদ্বীপের চলতি বছরের ফুটবল মরশুম। তাই সাজ সাজ রব। সকাল বিকেল জোরদার অনুশীলন করছেন খেলোয়াড়েরা। তাঁদের দেখভালের জন্য কোচ-কর্মকর্তাদের ব্যস্ততাও তুঙ্গে।
অথচ বছর চারেক আগেও পরিস্থিতি এমনটা ছিলনা। শহরের নানা প্রান্তে ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় ডজনখানেক মাঠের বেশিরভাগই ফাঁকা পড়ে থাকত। দিনভর গরু চরে বেড়াত। সন্ধ্যা নামলেই মাঠে মাঠে জমে উঠত মদ জুয়ার আসর। ছবিটা বদলাতে শুরু করে তিন বছর আগে। স্থানীয় পুরসভার উদ্যোগে শুরু হয় সকার কাপ টুর্নামেন্ট।
নবদ্বীপ মেতে ওঠে ফুটবল নিয়ে। বিদেশি খেলোয়াড়, কলকাতা-সহ অন্যান্য জায়গার ফুটবলারদের দেখে নতুন ভাবে ভাবনা চিন্তা শুরু করে ক্লাবগুলি। বিভিন্ন ক্লাবের মাঠে শুরু হয় কোচিং ক্যাম্প। চালু হয় বয়স ভিত্তিক নতুন নতুন নানা টুর্নামেন্ট। মাঠেও বাড়তে শুরু করে ছেলেদের ভিড়।
নবদ্বীপ আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক জয়ন্ত গোস্বামী বলেন “এখন সকলেই বুঝতে পারছেন নবদ্বীপে ফুটবলের এমন জোয়ারে সকার কাপের বিরাট একটা ভূমিকা রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy