অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য।
গয়না শব্দটার শেষেই তো একটা না আছে!
কিন্তু যদি কেউ বাড়ি এসে যেচে উপকার করতে চায়, তার মুখের উপরে কি দুম করে না বলা যায়?
নবদ্বীপের শিখা কুণ্ডু ও তাঁর বৌমা টিনা কুণ্ডু অন্তত পারেননি। দুই যুবকের কথা বিশ্বাস করে তাদের গয়না পরিষ্কার করতে দিয়েছিলেন।
সোনার গয়না খোয়া যাওয়ার পরে ওঁরা বলছেন, ‘‘এখন মনে হচ্ছে, ওদের মুখের উপর না বলে দিলে এমনটা হতো না।’’
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বারোটা। মালঞ্চপাড়া আমবাগানের বাড়িতে তখন শাশুড়ি ও বৌমা দু’জনে কাজে ব্যস্ত। বাড়ির কর্তা কমলবাবু বিমা সংস্থার কর্মী। তিনি বাইরে ছিলেন। ঠিক সেই সময় বাইরে মোটরবাইক রেখে বাড়িতে হাজির দুই যুবক।
পরনে ধোপদুরস্ত হলুদ শার্ট, কালো প্যান্ট। পায়ে চকচকে কালো জুতো। যেমন তাদের আচরন, তেমনি মিষ্টি কথাবার্তা। শিখাদেবী ও টিনাদেবী দু’জনেই ভেবেছিলেন, কোনও সেলসম্যান। কারণ, তারা বাড়িতে ঢুকেই বলেছিল, ‘‘আমরা বিখ্যাত একটি কোম্পানির ভেষজ পাউডার বিক্রি করছি। এতে সোনার গয়না বাড়িতে বসেই পালিশ করা যায়। দোকানে পালিশ করাতে দিলে কিছু সোনা খোয়া যায়। এটাতে কিন্তু তেমনটা হবে না। খরচও সামান্য।’’
তাদের কথা বলার ভঙ্গি, আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়ে যান বৌমা ও শাশুড়ি দু’জনেই। সুযোগ বুঝে ওই যুবকদের একজন বলে, “মাসিমা এক বার রান্নাঘরে চলুন। একটু জল গরম করতে দিন। আপনাদের হাতে-কলমে শিখিয়ে দিচ্ছি কী ভাবে পুরানো গয়না পরিষ্কার করতে হয়।’’
আরও পড়ুন: আঁচড়ে, কামড়ে পালাল পবননন্দন
অন্য জন ব্যাগ থেকে গুঁড়ো বের করে তৈরি। সোনার হার দু’টি হাতে নিয়ে ভাল করে দেখে এক জন ফুটন্ত জলে খানিকটা কীসের গুঁড়ো ঢেলে দিতেই সারা ঘর ধোঁয়ায় সাদা। কিছুই দেখা যাচ্ছে না। কেমন যেন ঘোর লেগে যায় শিখাদেবী ও তাঁর বৌমার।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ধোঁয়া একটু পাতলা হতেই তাঁরা দেখেন, সেই যুবক দু’টি উধাও। গায়েব তাঁদের গলার সোনার হারও। ব্যাপার বুঝে দু’জনেই চিৎকার করে ওঠেন— ‘চোর চোর’। ছুটে আসেন আশপাশের পড়শিরা। কিন্তু ততক্ষণে সেই যুবকেরা বাইক নিয়ে ধাঁ। দিনকয়েক আগে, নবদ্বীপে তিন কিশোরকে বেল গাছে তুলে দিয়ে তাদের সাইকেল ও মোবাইল নিয়ে পালিয়েছিল এক কেপমার। বেলের সেই কাঁটার ক্ষত ভুলতে না ভুলতে ফের গয়নার চোট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy