Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

বাড়িতে ঢুকে গুলি, পুলিশই ক্ষোভের মুখে

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মৃতের নাম মিনারুল মোল্লা (২৭)। বাড়ি বামনাবাদের মাহাতাব কলোনিতে। গরু ও মাদক পাচার থেকে পুলিশকে লক্ষ করে গুলি চালানোর ঘটনায় একাধিক মামলা ছিল তার নামে। কিছু মামলায় জেলে গেলেও জামিনে ছাড়া পায় সে। বছর দেড়েক আগের এক মাদক পাচার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি।

শোকার্ত: আত্মীয়রা। নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত: আত্মীয়রা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলঙ্গি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০২:৩৬
Share: Save:

মাদক পাচারের মামলায় ফেরার এক যুবককে ধরতে গিয়ে বাড়ি ঘিরে তাকে গুলি করে মারার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে।

জলঙ্গির বামনাবাদে ওই ঘটনার জেরে বুধবার সকালে ধনীরামপুর মোড়ে প্রায় দু’ঘণ্টা সাগরপাড়া-বহরমপুর রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়। পুলিশ গেলে উত্তেজিত জনতা ইটবৃষ্টি করতে থাকে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ভিড় ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে তিন জনকে আটকও করে পুলিশ। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মৃতের নাম মিনারুল মোল্লা (২৭)। বাড়ি বামনাবাদের মাহাতাব কলোনিতে। গরু ও মাদক পাচার থেকে পুলিশকে লক্ষ করে গুলি চালানোর ঘটনায় একাধিক মামলা ছিল তার নামে। কিছু মামলায় জেলে গেলেও জামিনে ছাড়া পায় সে। বছর দেড়েক আগের এক মাদক পাচার মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলেও পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পাকাবাড়ি করলেও স্ত্রী ও দুই ছেলের সঙ্গে সব রাতে সেখানে থাকত না মিনারুল। ঠাঁই বদল করে-করে রাত কাটাত সে। মঙ্গলবার রাতে বাড়ি থেকে শ’দুয়েক মিটার দূরে সম্পর্কিত চাচা আব্দুল জলিল মোল্লার টিনের চালাবাড়িতে সে ঘুমোতে গিয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পাঁচ গাড়ি পুলিশ রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ হানা দেয় সেখানে। মিনারুলের আত্মীয়দের দাবি, নেতৃত্বে ছিলেন এসডিপিও (‌ডোমকল) মাকসুদ হাসান। গোটা বাড়ি ঘিরে মিনারুলকে বারান্দায় দাঁড় করিয়ে বুকে গুলি করা হয় বলে তাঁর আত্মীয়দের অভিযোগ।

জলিলের স্ত্রী সুলেখা বিবির দাবি, ‘‘রাত সাড়ে ১২টা-১টা হবে। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি, তিন জন পুলিশ আমাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে। অন্ধকারে দেখতে না পেলেও বুঝলাম, মিনাকে ঘর থেকে বের করেই পরপর দু’টো গুলি করল ওরা। তার পরে এক দল ওকে তুলে নিয়ে গেল, কিছু পুলিশ রক্তের দাগ মুছতে শুরু করল।’’ মিনারুলের দাদা মাইনুল মোল্লার প্রশ্ন, ‘‘বিরাট বাহিনী থাকতেও কেন পুলিশ সুপারি কিলারের মতো গুলি করল, বুঝতে পারছি না। এমনকী দেহ কোথায় তাও আমাদের জানানো হয়নি। সন্ধ্যায় বহরমপুর মর্গে গিয়ে ভাইয়ের দেহ পাই। আমরা ঘটনার সিবিআই তদন্ত চাইছি।’’

ভোর থেকেই মিনারুলের দেহ নিয়ে চলেছে লুকোচুরি। জলঙ্গি ও রানিনগরের মধ্যস্থলে ওই গ্রাম হলেও ওই দুই থানার কোথাও দেহটি রাখা হয়নি। মিনারুলের স্ত্রী ঝর্না বিবির সন্দেহ, ‘‘রক্তের দাগ মুছেও পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি যে এই অপকর্ম ওরা ধামাচাপা দিতে পারবে। তাই এ ভাবে লুকোচুরি খেলেছে।’’

পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, পালাতে পারবে না বুঝে মিনারুলই আগে পুলিশের দিকে গুলি ছোড়ে। তার পরে পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ। এসডিপিও শুধু বলেন, ‘‘যা বলার, জেলার পুলিশ সুপার বলবেন।’’ আর পুলিশ সুপারের ফোন বারবার বেজে গেলেও তিনি ধরেননি।

অন্য বিষয়গুলি:

Police Person Murder জলঙ্গি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE