‘অপহৃতা’ জানাচ্ছেন, তাঁকে অপহরণ করা হয়নি! —প্রতীকী চিত্র।
বাবা অভিযোগ করেছিলেন স্কুলছাত্রী মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। সুদূর বিহার থেকে মেয়েকে উদ্ধার করে এনেছে নদিয়ার করিমপুর থানার পুলিশ। সঙ্গে ‘অপহরণকারী’কেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু অপহৃতা ফুঁসে উঠলেন বাবার বিরুদ্ধে। বাবা বলছেন, ‘‘মেয়ের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।’’ অন্য দিকে, জেলবন্দি যুবক বলছেন, ‘‘আমি কী করব!’’ পুরো ঘটনায় ধন্দে পড়েছে পুলিশও।
একটি অপহরণের অভিযোগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে করিমপুর থানার বিশেষ দল বিহার পুলিশের সহযোগিতায় বিহারের ডালচিং সরাই এলাকায় অভিযান চালায়। উদ্ধার করা হয় নদীয়ার ‘অপহৃতা’কে। গ্রেফতার করা হয় এক যুবককে। কিন্তু অপহৃতা তরুণী ও তার বাবার বয়ানে চাপে পড়েছে পুলিশ। শুক্রবার যুবক এবং তরুণী, ২ জনকেই তোলা হচ্ছে তেহট্ট মহকুমা আদালতে।ব্যাপারটা কী? পুলিশ সূত্রে খবর, করিমপুর নটনা অঞ্চলের এক দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয় বিহারের সমস্তিপুর জেলার ডালচিং সরাই থানার কাটুয়া গ্রামের বাসিন্দা এক যুবকের। নাম রাজাবাবু কুমার। ফেসবুক, মেসেঞ্জারে সেই আলাপ গড়ায় প্রণয়ে।
এ ভাবে টানা তিন বছর ধরে প্রেম করেছেন বলে ওই যুগলই দাবি করেছেন। পুলিশকে ২ জন জানান, একাধিক বার কলকাতার ভিক্টোরিয়া, নিক্কো পার্কের মতো জায়গাতে দেখা করেছেন। সময় কাটিয়েছেন। এর পর গত ১৫ অক্টোবর হঠাৎ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান তরুণী। পরের দিন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই তরুণীর বাবা। তিনি অভিযোগে লেখেন, মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে। এর পর অনেক খোঁজাখুঁজির পর ‘অপহৃতা’র খোঁজ পায় পুলিশ।
তরুণী এবং যুবকের ফোনের কললিস্ট খতিয়ে দেখে তাঁদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছিল পুলিশ। সেই অনুযায়ী, পুলিশের একটি দল পাড়ি দেয় বিহারে। বৃহস্পতিবার রাতে রাজাবাবু কুমারের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় তরুণীকে। কিন্তু তরুণী বলছেন, তাঁকে অপহরণ করা হয়নি। তিনি বিয়ে করেছেন। তাঁর কথায়,‘‘রাজাবাবুর সঙ্গে আমার দীর্ঘ দিনের প্রেম। বিয়ে করব বলে স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলাম। বাবা আমার স্বামীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে চাইছে।’’ ধৃত রাজাবাবু বলছেন, ‘‘আমি ওকে (প্রেমিকা) বার বার আসতে (বিহার) না করেছিলাম। ও জোর করে চলে এল! এখন পুলিশ আমাকে গ্রেফতার করেছে। আমি কী করব! আমার অন্যায়টা কোথায়?’’ প্রেমের ডাকে সাড়া দিয়ে আপাতত শ্রীঘরে বিহারের সমস্তিপুর কলেজের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্র। অন্য দিকে, মেয়ের বাবা বিকাশ মণ্ডলের কথায়, ‘‘আমার মেয়েকে তুকতাক করে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়েছিল বিহারের যুবক। মেয়ের মাথার ঠিক থাকলে কী এই কাজ করত!’’ এ সব কথায় অবশ্য আমল দিতে নারাজ পুলিশ।
কিছু দিন আগে প্রেমের টানে আমেরিকা থেকে মুর্শিদাবাদের হাজির হয়েছিলেন এক যুবতী। এ বার করিমপুর থেকে বিহার। তবে এখানে সম্পর্কে আপত্তি তোলায় বাবাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন মেয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy