বাধ্য হয়ে ওয়ার্ডের শয্যাতেই চলছে অস্ত্রোপচার। নিজস্ব চিত্র
দূর্ঘটনায় মেরুদণ্ডের নীচের অংশ এবং নিতম্বের মধ্যকার অস্থিকাঠামো (পেলভিস) ভেঙেছে। যার জেরে এক দিকে রক্তক্ষরণ হয়ে চলেছে, অন্য দিকে রক্তের চাপ কম, হিমোগ্লোবিন কম ছিল, প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায় হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতরের শয্যা থেকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার করা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। আবার অস্ত্রোপচারও জরুরি হয়ে পড়েছিল। সে কথা মাথায় রেখে হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতরে শয্যাতে তাঁর অস্ত্রোপচার করলেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অস্থি বিভাগের চিকিৎসকেরা।
সেখানকার অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অমরেন্দ্রনাথ রায়ের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক ওয়ার্ডের শয্যাতে অস্ত্রোপচার করেছেন। তার পরে রোগীর শারীরিক অবস্থা ভাল হতে থাকায় তাঁকে সেখান থেকে অন্য ওয়ার্ডে সরানো হয়েছে।
অমরেন্দ্রনাথ রায়ের সঙ্গে ছিলেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং কৌস্তুভ গড়াই ও মাসুদ রহমান।অমরেন্দ্রেনাথ রায় বলেন, ‘‘শয্যা থেকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। সেখান থেকে রোগীকে সরালে বিপদ ঘটতে পারত। তাই রোগীর পরিজনদের অনুমতি নিয়েই শয্যাতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। রোগী এখন ভাল রয়েছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘যে ভাবে রক্তচাপ ও হিমোগ্লোবিন কমে যাচ্ছিল, রক্তক্ষরণ হচ্ছিল, তাই শয্যাতে অস্ত্রোপচার করা জরুরি ছিল।’’
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুভাষ চক্রবর্তী নামে বেলডাঙার একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকের এই অস্ত্রোপচার হয়েছে। শুক্রবার বেলডাঙায় তিনি দুর্ঘটনায় জখম হন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বেলডাঙা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছিল। পরে সেখান থেকে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্থানান্তরিত করা হয়। সূত্রের খবর, ওই শিক্ষকের মাথায় ভাল হেলমেট ছিল। যার জেরে মাথা রক্ষা পেয়েছিল। শরীরের অন্য সব কিছু ঠিক থাকলেও পেলভিস ভেঙে যায়। যার জেরে তিনি কষ্ট পাচ্ছিলেন।
শনিবার রাতে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতরে একটি শয্যায় তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। সেখানের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অমরেন্দ্রনাথ রায় জানান, এমনি অস্ত্রোপচার খুব কম হয়। আমার জীবনেও এই প্রথম এমন অস্ত্রোপচার করলাম।
তাঁর দাবি, ‘‘এই ধরনের অস্ত্রোপচারেও কিছুটা ঝুঁকি থেকে যায়। তবে পরিবেশ পরিস্থিতি ঠিক থাকলে রোগীর বাড়ির লোকজন অনুমতি দিলে এমন অস্ত্রোপচারে রোগীরই আখেরে লাভ হয়।’’ওই অস্ত্রোপচারের সঙ্গে যুক্ত পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং কৌস্তুভ গড়াই জানান, এই ধরনের অস্ত্রোপচারকে ‘ড্যামেজ় কন্ট্রোল অর্থপেডিক’ বলে। রক্তক্ষরণ আটকাতে অস্ত্রোপচার করে বাইরে থেকে রড লাগিয়ে দেওয়া হয়। এখানেও তেমনটা হয়েছে। যার জেরে এখন হিমোগ্লোবিন বেড়ে ৩.২ থেকে ৯.৪ হয়েছে। প্রস্রাব হচ্ছে। রক্তচাপও স্বাভাবিক রয়েছে। রোগী অনেকটাই ভাল রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy