Advertisement
০৫ অক্টোবর ২০২৪

নাবালিকা পরিচারিকাকে অন্তঃসত্ত্বা করে বিয়ে করতে অস্বীকার, ১৭ বছরের মামলায় সাজা আদালতের

মুর্শিদাবাদের এক বাড়িমালিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন পরিচারিকার বাবা। পুলিশের কাছে নির্যাতিতা অভিযোগ করেন তিনি বার বার ধর্ষিত হন।

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৪ ১৭:১৪
Share: Save:

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাড়ির পরিচারিকাকে লাগাতার ধর্ষণের দায়ে ধৃত এক বাড়িমালিককে নয় বছরের কারাদণ্ড দিল আদালত। যদিও ১৭ বছর পরে এই রায়ে সন্তুষ্ট নয় নির্যাতিতার পরিবার।

মুর্শিদাবাদের এক বাড়িমালিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন পরিচারিকার বাবা। পুলিশের কাছে নির্যাতিতা অভিযোগ করেন তিনি বার বার ধর্ষিত হন। অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার পর তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে বেঁকে বসেন বাড়িমালিক। ১৭ বছরের পুরনো ওই মামলায় অবশেষে অভিযুক্তের সাজা ঘোষণা করেছে কান্দি মহকুমা আদালত। বিচারকের নির্দেশ, নয় বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। ওই টাকা তুলে দেওয়া হবে অভিযোগকারিণীর মেয়ের হাতে।

আদালত সূত্রে খবর, অভিযুক্তের বাড়ি মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানায়। সেখানেই পরিচারিকার কাজ করতেন এক নাবালিকা। ওই সময় তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করেন অভিযুক্ত। নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার পর গ্রামে সালিশি সভা বলে। বিচারে নাবালিকাকে বিয়ে করতে বলা হয় অভিযুক্তকে। কিন্তু সেই প্রস্তাবে অসম্মতি জানান বাড়িমালিক। তার পরে ওই নাবালিকার বাবা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। ২০০৭ সালের ১৩ অগস্ট বড়ঞা থানায় সেই মামলা রুজু হয়। তার পর গ্রেফতার হন অভিযুক্ত। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ায় এক বার আদালতের নির্দেশে জামিনও পান তিনি। টানা ১৭ বছর মামলা চলার পর একাধিক তথ্য এবং সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে দোষী সাব্যস্ত করা হয় বাড়িমালিককে। শুক্রবার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করেছে আদালত।

কান্দি মহাকুমা আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক তারক নাথ ভকত বলেন, ‘‘নাবালিকার অসহায়তার সুযোগ নিয়ে দীর্ঘ সহবাসের পরে তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করার বিষয়টিকে গুরুতর অপরাধ হিসাবে দেখছে আদালত।’’ সংশ্লিষ্ট মামলা প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী সুনীল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তৎকালীন আইন অনুযায়ী অভিযোগ এবং তদন্ত সম্পন্ন হয়। বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। আমরা আরও বৃহত্তর শাস্তির দাবি জানিয়েছিলাম। মহামান্য বিচারক নয় বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।’’ অন্য দিকে, এই রায়ে খুশি নয় নির্যাতিতার পরিবার। তাদের দাবি, ওই অপরাধের জন্য আসামির আজীবন কারাদণ্ড আশা করা হয়েছিল। রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথাও ভাবছে পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE