প্রতীকী চিত্র।
পুরভোটের আগেই নদিয়ার দক্ষিণে মাথা তুলছে মোদী মঞ্চ। যদিও এটি একটি আলাদা সংগঠন বলেই দাবি করছেন উদ্যোক্তারা। তবে মোটামুটি ভাবে এখানকার সকলেই গেরুয়া শিবিরের লোক এবং প্রাক্তন পদাধিকারীও রয়েছেন কেউ কেউ। তবে এই মঞ্চের সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
নাম ‘মোদী মঞ্চ’। উদ্দেশ্য প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপির হয়ে বার্তা প্রচার করা। তবে এই মঞ্চেই একজোট হচ্ছেন বিজেপির শিবিরের একাধিক প্রাক্তন পদাধিকারীরা। এঁদের অধিকাংশই দলের মধ্যে বর্তমানে ব্রাত্য। এক সময়ে দলের নানা পদে থাকলেও অনেক দিন ধরেই তাঁরা আর কোনও পদে নেই। দলের মিটিং-মিছিলেও অনেকে সে ভাবে ডাক পান না বর্তমানে। তবে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নয়, দলের পক্ষেই বার্তা দেওয়ার জন্য আলাদা মঞ্চের পথে হেঁটেছেন তাঁরা।
এই মোদী মঞ্চের সঙ্গে যেমন রয়েছেন অবিভক্ত জেলার যুব সংগঠনের পদাধিকারী অলীপ বিশ্বাস, তেমনই রয়েছেন বিজেপির অবিভক্ত জেলা সংগঠনের সভাপতি সুপ্রভাত বিশ্বাসের ছেলে তথা ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে কৃষ্ণগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী সুজিত বিশ্বাস। যিনি গত বছর লোকসভা ভোটে বিজেপির হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন, তবে প্রতীক মেলেনি। এ ছাড়াও রয়েছেন বাদল বর্মন, প্রতাপ রায়দের মতো অনেকে, যাঁরা এক সময়ে দলের নানা পদে আসীন ছিলেন। এই মঞ্চের অনেকেই দলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার প্রাক্তন-সহ সভাপতি দিব্যেন্দু ভৌমিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। যদিও এ দিন মোদী মঞ্চ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি দিব্যেন্দু। ১১ ফেব্রুয়ারি তাহেরপুরে মোদী মঞ্চের উদ্যোগেই নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে একটি পদযাত্রা করা হয়। এ ছাড়াও পালিত হয়েছে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের আত্মবলিদান দিবস। আগামী দিনে মঞ্চের সঙ্গে যুক্তেরা রানাঘাট মহকুমা এলাকায় রক্তদান শিবির, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে প্রচারের কর্মসূচি রেখেছেন। পাশাপাশি, ফুটবল প্রতিযোগিতার মতো আয়োজনেরও ভাবনা রয়েছে।
মোদী মঞ্চ নামক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত অলীপ বিশ্বাস, সুজিত বিশ্বাসেরা বলছেন, “কারও কোনও রকম বিরোধিতা করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা বিজেপির আদর্শেই বিশ্বাসী। বিজেপির বার্তাই আমরা প্রচার করব মানুষের কাছে।” সুদীপ, অলীপদের দাবি, এর মধ্যে কোনও দলীয় কোন্দলের বিষয় নেই। যদিও স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এই একই কাজ তো বিজেপিও করে। তা হলে হঠাৎ আলাদা করে মঞ্চ গড়ে প্রচারের দরকার পড়ল কেন? মোদী মঞ্চ নামের সংগঠনটির সদস্য এবং বিজেপির কিষান মোর্চার একদা পদাধিকারী বাদল বর্মন বলছেন, “দলের বহু নেতা কর্মী আছেন, যাঁরা বসে আছেন। তাঁদের তো কিছু একটা কাজ দিতে হবে। তাঁরা মোদী মঞ্চের ব্যানারে বিজেপির হয়ে কাজ করবেন।”
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, বিজেপির বাইরে এই সংগঠনের ব্যানারে বিজেপির বার্তাই আসলে প্রচার করবেন দলের মধ্যে ব্রাত্য নেতারা। কিন্তু পুরভোটের মুখে গড়ে ওঠা এই নয়া মোদী মঞ্চের হাত ধরে দলের একাংশের ক্ষোভ কতখানি প্রশমিত হয়, সেটাই এখন দেখার।
রানাঘাটের এক বিজেপি কর্মী যেমন বলছেন, ‘‘দলের মধ্যে কারও ক্ষোভ থাকতেই পারে। তবে তা প্রকাশ না করে বা অন্যদের সুবিধা করে না দিয়ে কেউ যদি দলের বার্তাই প্রচার করেন, তা হলে তো বিজেপিরই ভাল।’’ তবে দলের ক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর ক্ষোভ প্রশমিত করার এই সেফটি ভালভ-স্বরূপ মোদী মঞ্চ পুরভোটে কতখানি সাহায্য করে, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন সকলে।
যদিও বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অশোক চক্রবর্তীর দাবি, “মোদী মঞ্চের সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy