বেথুয়াডহরিতে দুধ ফেলে প্রতিবাদ। নিজস্ব চিত্র
টেম্পোর উপরে দাঁড়িয়ে ড্রাম ভর্তি দুধ রাস্তায় ঢেলে ফেলছেন গোয়ালারা! এমনই অভিনব কায়দায় বুধবার বিক্ষোভ দেখালেন ঘোষ ও
গাভী কল্যাণ সমিতির সদস্যরা। রাজ্যের গোয়ালা সম্প্রদায়ের প্রায় ১০ হাজার মানুষ এই সম্প্রদায়ের সদস্য। তার মধ্যে বেশিরভাগই দুধের কারবার করেন। সরকারি বঞ্চনার অভিযোগ তুলেই এ দিন সংগঠনের তরফে নাকাশিপাড়ার বেথুয়াডহরিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে দেশবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার প্রাঙ্গণে বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। জনসভার শেষে রাস্তায় চার ড্রাম দুধ ফেলে দেন সদস্যরা। তা নিয়ে সমালোচনায় হয়েছে বিস্তর। দুধ এ ভাবে ফেলে দেওয়ার বদলে গরিব শিশু বা বৃদ্ধদের খেতে দিলে তাঁদের উপকার হত বলে দাবি তুলেছেন অনেকে। কিন্তু ক্ষুব্ধ গোয়ালাদের দাবি, দুধের দাম যেখানে জলের দামের সঙ্গে এক হয়ে যায় তখন সেই দুধ ফেলে দেওয়াই শ্রেয়।
সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বাপ্পাদিত্য ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘মানুষ এ রাজ্যে ১ লিটার জল ২০ টাকায় কিনে খাচ্ছেন, আর আমরা ১ লিটার দুধ বেচে ১৮ টাকা বা ২০ টাকা পাচ্ছি। এটা চলতে পারে না। তাই প্রতিবাদে রাস্তায় দুধ ফেলেছি। সরকার আমাদের দাবি না-মানলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের কথা ভাবব।’’
সংগঠন সূত্রে খবর, হরিণঘাটা ও মাদার ডেয়ারিতে এক লিটার দুধের ন্যূনতম দাম ৩২ টাকা। অথচ গোয়ালাদের থেকে ১ লিটার দুধ কেনা হয় কোথাও ২৬ টাকা, কোথাও ২৮ টাকা দরে। ১৫ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর দুধের জোগান বেশি থাকে বলে দাম আরও ১ টাকা কমে যায়। গোয়ালাদের দাবি, এই দামে উৎপাদন মূল্যই ওঠে না তাঁদের। শুধু দুধের দামই নয়, সরকার থেকে প্রাপ্য বিভিন্ন সুবিধা পেতে তাঁদের চূড়ান্ত হেনস্থা হতে হচ্ছে বলে এ দিন অভিযোগ করেছেন গোয়ালারা।
বাপ্পাদিত্যের কথায়, ‘‘গরু-বাছুর কেনার জন্য সরকারি ঋণ পেতে জুতো ক্ষয়ে যায়। গরু মোষ মারা গেলে বিমার টাকা পাই না। গো-খাদ্য মেলার কথা, সেটাও আসে না। গরু-মোষের চিকিৎসা শিবিরে ওষুধ বিতরণ ও চিকিৎসা হবে বলে জানালেও সেই শিবির হয় না। প্রশাসনিক কর্তারা শুধু আমাদের ঘুরিয়ে যান।’’
তাঁদের দাবি, তাঁদের পেশা সঙ্কটে, তাই সরকারি চাকরিতে গোয়ালাদের ২০ শতাংশ সংরক্ষণ দিতে হবে। আলাদা দুগ্ধ দফতর ও দুগ্ধমন্ত্রীর পদও চেয়েছেন তাঁরা। পশু দফতর থেকে আলাদা করে গরু ও মোষকে এই দুগ্ধ দফতরের আওতায় আনার দাবি করেছেন।
যাঁরা দুধে জল মেশান সেই অসাধু গোয়ালাদের চিহ্নিত করে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যাপারে এই সংগঠন সব রকম ভাবে পুলিশকে সাহায্য করবে বলেও তাঁরা
কথা দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy