ছেলের ছবি নিয়ে বসে সুদীপ বিশ্বাসের মা। নিজস্ব চিত্র
সীমান্ত-সংঘর্ষ বা যুদ্ধে কোনও জওয়ান নিহত হলে প্রশাসন ও সরকারের তরফ থেকে তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলা হয়, দেওয়া হয় বহু প্রতিশ্রুতি। কিন্তু আদতে তার কতটা শেষ পর্যন্ত পালিত হয়, সেই প্রশ্ন তুলেছেন গত বছর কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় নিহত নদিয়ার পলাশিপাড়ার হাঁসপুকুরিয়ার বাসিন্দা জওয়ান সুদীপ বিশ্বাসের পরিবার।
বছর পেরিয়ে গেলেও রাজ্য সরকার তার প্রতিশ্রুত চাকরি নিহত জওয়ানের পরিবারের সদস্যকে দেয়নি বলে দাবি করেছে তাঁরা। জানিয়েছে, কেন্দ্র সরকার তাদের প্রতিশ্রুত টাকা ইতিমধ্যে দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু নিহত সেনার বোন ঝুম্পা বিশ্বাসকে চাকরি দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি রাজ্য সরকার দিয়েছিল তা এখনও পূরণ হয়নি। তাঁদের কাছ থেকে দু’বার প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জমা নেওয়া হয়েছিল। তার পর সব চুপচাপ।
দিন কয়েক আগে চিনের সঙ্গে সংঘর্ষে লাদাখে প্রাণ হারান ভারতের ২০ জওয়ান। তাঁদের মধ্যে ছিলেন বীরভূমের রাজেশ ওরাং। গত বৃহস্পতিবার তাঁর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেয় রাজ্য সরকার। ৫ লক্ষ টাকার পাশাপাশি একই ভাবে নিহত রাজেশের বোন শকুন্তলাকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সেই সব খবর টেলিভিশনে দেখেছেন সুদীপ বিশ্বাসের পরিবারের সদস্যেরা। প্রশ্ন তুলেছেন, দেড় বছর পেরোলেও তাঁদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাজ্য সরকার এখনও পূরণ করেনি, রাজেশের পরিবারের ক্ষেত্রেও সেটা পূরণ হবে তো?
সুদীপ বিশ্বাস এর বাবা সন্ন্যাসী বিশ্বাস শনিবার বলেন, "লাদাখে সংঘর্ষের বিষয়টি টেলিভিশনে দেখি। রাজ্য সরকার এ বারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি যে পূরণ হচ্ছে না তার জ্বলন্ত উদাহরণ আমাদের পরিবার।’’
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জঙ্গি হামলার পর তাঁদের বাড়ি নেতা-অফিসারদের ভিড় লেগে থাকত। কিন্তু এখন আর কাউকে দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন নিহত জওয়ানের পরিবারের সদস্যেরা। সুদীপের মা মমতা বিশ্বাসও বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মেয়েকে চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু এখনও তা হল না।’’
তাঁদের জামাই সমাপ্ত বিশ্বাসের কথায়, ‘‘চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামার ঘটনার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে পলাশিপাড়ার চকবিহারী ঘাটে সুদীপের একটি মূর্তি বসানো হয়। সেখানে বিডিও চাকরির বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছিলেন।
তেহট্ট ২ বিডিও শুভ সিংহ রায় এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘ইতিবাচক এনকোয়ারি রিপোর্ট জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হয়েছে। যতদূর শোনা গিয়েছে, সেখান থেকে নবান্নে গিয়েছে রিপোর্ট।’’ আর পলাশিপাড়ার বিধায়ক তৃণমূলের তাপস সাহার বক্তব্য, ‘‘না জেনে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। কয়েক দিনের মধ্যে ওঁদের বাড়ি যাব, তার পর বিষয়টি দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy