Advertisement
০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Mamata Bought Khadi Coat

স্টলে খাদির কোট কিনলেন মুখ্যমন্ত্রী

মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রশংসায় আপ্লুত শিল্পীরাও। এত কাছ থেকে তাঁকে দেখতে পেয়ে কিছুটা আড়ষ্টতায় ভুগছিলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা।

খাদি পোশাকের স্টল।

খাদি পোশাকের স্টল।  নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমকল শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪১
Share: Save:

জেলায় প্রশাসনিক সভা করতে এসে খাদির দু’টি জহর কোট কিনলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলার শিল্পীদের তৈরি নানা শিল্পসামগ্রী তিনি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন। শিল্পীদের হাতের কাজের প্রশংসা করে তাঁদের উৎসাহও দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

এ দিন সভা মঞ্চে ওঠার সিঁড়ির কিছুটা আগে তৈরি করা হয়েছিল স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টল। সেখানে বিক্রির জন্য রাখা ছিল মুর্শিদাবাদের শিল্পীদের তৈরি করা খাদির পোশাক। ছিল পাট দিয়ে তৈরি নানা সামগ্রীও। মঞ্চে ওঠার আগে স্টলের দিকে চোখ পড়লে সেখানে ঢুকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি কিনে নেন দু’টি জহর কোট। এরপর পাটের তৈরি ব্যাগও নেড়েচেড়ে দেখেন। শিল্পীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনাদের তৈরি প্রত্যেকটা জিনিস খুব সুন্দর।’’

মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রশংসায় আপ্লুত শিল্পীরাও। এত কাছ থেকে তাঁকে দেখতে পেয়ে কিছুটা আড়ষ্টতায় ভুগছিলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা কিছু কথা মমতাকে বলবেন বলে ঠিক করে রেখেছিলেন। তাঁদের অভিযোগের কথাও বলবেন বলে ভেবেছিলেন। আড়ষ্টতায় সেটাও বলতে ভুলে যান তাঁরা। এ নিয়ে পরে তাঁদের কথায় আক্ষেপও শোনা গিয়েছে। এক মহিলা বলেন, ‘‘দিদিকে কাছে পেয়েও আমাদের কষ্টের কথাটা বলা হল না।

কিন্তু অভিযোগটা কী? রানিনগর ১ ব্লক থেকে আসা খাইরুন্নেসা বিবির কথায়, ‘‘আমরা যখন গুজরাত, মহারাষ্ট্র বা ওড়িশায় স্টল দিতে যাই আমাদের জায়গা হয় একেবারে পিছনের সারিতে। বাংলার এই শিল্প বঞ্চনার শিকার হয়য বারবার। অথচ সাধারণ মানুষ আমাদের খাদি সিল্কের পোশাক কিনতে ভিড় করেন। আমাদের পাটের তৈরি নানা সামগ্রী ভীষণ পছন্দ করেন ভিন রাজ্যের মানুষ।’’ খাইরুন্নেসাই শুধু নন, বহরমপুরের একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রী শুভ্রা দাস বলেন, ‘‘আমরা কিছুদিন আগে ওড়িশা গিয়ে পুরস্কার ছিনিয়ে এনেছি। অথচ আমাদের স্টলগুলিকে এমন একটা জায়গায় দেওয়া হয়েছিল যেখানে মেলায় আসা মানুষের নজরই পড়ছিল না। আমরা কোনও ভাবেই বুঝে উঠতে পারছি না, সাধারণ মানুষের পছন্দের এমন একটা শিল্পকে কেন অন্য রাজ্যে এ ভাবে বঞ্চনা করা হচ্ছে।’’

১০০ দিনের কাজ থেকে আবাস যোজনা প্রকল্পের টাকা না দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ এ দিন বারবার করেন মুখ্যমন্ত্রী। এক ইসুরে মুর্শিদাবাদের হস্তশিল্পীরাও ভিন রাজ্যের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে তো বিষয়টি জানাতে পারতেন? আরও একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রী অম্বিকা হালদার বলছেন, ‘‘আমরা ভেবেছিলাম, দিদি হয়তো মিটিং শেষ করে আমাদের এখানে আসবেন। কিন্তু তিনি যে শুরুতেই আমাদের স্টলে ঢুকে পড়বেন, ভাবতে পারিনি। হঠাৎ যে পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তাতে খেই হারিয়ে ফেলি। বলার সাহস জুগিয়ে উঠতে পারিনি।’’

কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার যখন কৃষ্ণনগরের উদ্দেশে উড়তে শুরু করেছে, ঠিক সেই সময়ে শিল্পীরা এ নিয়ে আক্ষেপ করছিলেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের স্টল থেকে কোট কেনায় খুশি শিল্পীরা। তিনি প্রতিটি সামগ্রী খুঁটিয়ে দেখেছেন, সঙ্গে তাঁদের তৈরি জিনিসের ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন। তাতে উৎসাহিত বোধ করছেন শিল্পীরা।

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক নেত্রী বলেই ফেললেন, ‘‘অন্য রাজ্যে গিয়ে যত খারাপ অভিজ্ঞতাই হোক, দিদি আমাদের প্রশংসা করেছেন, এতেই মন ভাল হয়ে গিয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Domkal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy