Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
আঁধার ফুঁড়ে আলোর পথে

পড়ছি লড়ছি জিতছি রে...

দারিদ্র ও অশিক্ষার সহযোগী হয়ে এসে পাচার, চোরাচালান, মাদক কারবার, সন্ত্রাস, বাল্যবিবাহ, নাবালিকা-মাতৃত্বের মতো বহু অন্ধকার চেপে বসেছিল জেলার রন্ধ্রে।

ফল বেরনোর পরে। নিজস্ব চিত্র

ফল বেরনোর পরে। নিজস্ব চিত্র

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৮ ০১:৩৩
Share: Save:

আর্থসামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন মাপকাঠিতে রাজ্যের অন্য জেলার থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল সে অনেকটা সময়। দারিদ্র ও অশিক্ষার সহযোগী হয়ে এসে পাচার, চোরাচালান, মাদক কারবার, সন্ত্রাস, বাল্যবিবাহ, নাবালিকা-মাতৃত্বের মতো বহু অন্ধকার চেপে বসেছিল জেলার রন্ধ্রে। সেই মুর্শিদাবাদই হেরে যাওয়ার ঘূর্ণিপাক থেকে উঠে দাঁড়াচ্ছে। চলতি বছর হাইমাদ্রাসা ও আলিম পরীক্ষার ফলে দ্যূতি ছড়িয়েছে জেলার নবীন প্রজন্ম।

হাইমাদ্রাসা পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম, তৃতীয়, সপ্তম, অষ্টম ও দশম স্থান অধিকার করেছে মুর্শিদাবাদের পড়ুয়ারা। আলিম পরীক্ষাতেও রাজ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে ভগবানগোলার হোসাইননগর দারুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসার পারভেজ আলম। পাশের হারে অন্য জেলার তুলনায় একটু পিছিয়ে থাকলেও মুর্শিদাবাদের ঘুরে দাঁড়ানোর এই প্রয়াস কুর্নিশ কুড়িয়েছে সর্বস্তরে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলার সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর সই করা শংসাপত্র, ফুল ও মিষ্টির প্যাকেট পৌঁছে গিয়েছে কৃতী পড়ুয়াদের বাড়ি।

পড়শি নদিয়ার দেবিভবন সাঁতরাপাড়ার বাসিন্দা মহম্মদ মুন্না কাজি ফাজিল পরীক্ষায় রাজ্যে ষষ্ঠ স্থান দখল করেছে। তবে মুন্না হুগলির ফুরফুরা ফাতেহিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল। হাঁসখালির উলাসির নগরপোতার সাব্বির আহম্মেদ মণ্ডল ফাজিল পরীক্ষায় রাজ্যে দশম স্থান অধিকার করেছে। সাব্বির উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ হজরত পির আবু বকর দারুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষা দিয়েছিল।

যাবতীয় বাধার দেওয়াল ভাঙার স্বপ্ন দেখে মুর্শিদাবাদের পড়ুয়ারাও সাফল্যের নাগাল পেয়েছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। মাদ্রাসার মেয়েরা সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় নাম দিয়ে জয়ী হচ্ছিল, দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল ফুটবল ময়দান। একের পর এক বিয়ে রুখে দিচ্ছিল নাবালিকারা। মাদক বিরোধী প্রচার হোক কিংবা ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সচেতনতা, চোখে পড়ার মতো অংশগ্রহণ ছিল মুর্শিদাবাদের পড়ুয়াদের। সেটাই ছিল সামগ্রিক উন্নতির বার্তাবাহী।

পমাইপুরের তৌফিক আনোয়ার রাজ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। তৌফিক ৭৫৩ নম্বর পেয়েছে। ভাতশালা হাইমাদ্রাসার ছাত্র ওয়ালিউর রহমান রাজ্যে তৃতীয় হয়েছে। ভাবতা আজিজিয়া হাইমাদ্রাসার ছাত্রী তাসনিয়া খাতুন ৭৪২ নম্বর পেয়ে হয়েছে রাজ্যে সপ্তম। দরিদ্র পরিবারের তাসনিয়া রাজ্যে মেয়েদের মধ্যে দ্বিতীয় হয়েছে। আমিরাবাদ হাইমাদ্রাসার কমল হাসান রাজ্যে অষ্টম স্থান অধিকার করেছে। তোপিডাঙ্গা হাইমাদ্রাসার নাফিসা খাতুন ৭৩৯ নম্বর পেয়ে রাজ্যে দশম স্থান অধিকার করেছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE